অধ্যাপক আবুল হাসান মুহাম্মদ আবদুল কাইয়ূম রহ: দেশের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, আধ্যাত্মিকতা ও ইলমে তাসাউফ শিক্ষার অগ্রদূত, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, গবেষক, কলাম লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার লেখায় আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রাসূল সা:-এর মান ও মর্যাদা বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।
হাসান আবদুল কাইয়ূম একজন হাক্কানি আলেম। তিনি ১৯৪৪ সালের ৩০ এপ্রিল মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত পীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ফুরফুরা শরিফের পীর হজরত মওলানা শাহ সুফি আলহাজ আবুবকর সিদ্দিকী রহ.-এর অন্যতম প্রধান খলিফা হজরত মওলানা শাহ সুফি আলহাজ তোয়াজউদ্দীন আহমদ এবং মাতা মোছা: জোহরা খাতুন। ছেলেবেলায় তার হাতেখড়ি মায়ের কাছে। তিনি শৈশবেই মায়ের কাছে পবিত্র কুরআন শিক্ষা করেন। প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় দ্বারিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ছাত্র অবস্থায় তিনি পিতার কাছে ইলমে তাসাউফের শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর খুলনার বিকে ইনস্টিটিউট ও মাগুরা হাই মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। ১৯৭০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
হাসান আবদুল কাইয়ূমের কর্মজীবন শুরু হয় অধ্যাপনার মাধ্যমে। তিনি মাগুরার শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ঢাকার হাবীবুল্লøাহ বাহার কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮০ সালের জানুয়ারি মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক হিসেবে যোগদান করে খুব অল্প দিনেই পরিচালক পদে উন্নীত হন এবং ২০০২ সালে অবসর নেন। ফাউন্ডেশনে কর্মরত অবস্থায় তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ যেমন- তাফসিরে তাবারি, বুখারি শরিফ, ইসলামী বিশ্বকোষ প্রভৃতি প্রকাশনার সাথে জড়িত ছিলেন। বিশ্বকোষে তার বেশ কয়েকটি মৌলিক ও অনূদিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ রয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- অনুপম আদর্শ, ফুরফুরার চাঁদ, প্রসঙ্গ ইসলাম, ইসলাম ও জীবন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, তাফসিরে তারাবি, খোকা-খুকুর ছড়া, তালিমে তাসাউফ ইত্যাদি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘অগ্রপথিক’, শিশু পত্রিকা ‘সপ্তডিংগা’ ও সাহিত্য সাময়িকী ‘ঐতিহ্য’ সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার অজস্র্র প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। তিনি বাংলা ছাড়াও আরবি, ফারসি, উর্দু, ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। ইত্তেফাক, ইনকিলাব, জনকণ্ঠ ও ডেইলি সান পত্রিকায় বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে কলাম লিখতেন।
পিতার স্মরণে তিনি গড়ে তুলেছেন আঞ্জুমানে তোয়াজিয়া এতিমখানা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফুরফুরা সিলসিলার দ্বারিয়াপুর দরবার শরিফের গদিনশিন পীর ছিলেন।
অধ্যাপক হাসান আবদুল কাইয়ূম মহামারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। তার ওফাত বার্ষিকীতে তার অসংখ্য ভক্ত, অনুরাগী ও প্রিয়জন তাকে গভীরভাবে স্মরণ এবং তার রূহের মাগফিরাত ও জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম কামনা করছেন।
মো: বশির হোসেন মিয়া
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা