০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


মহামারীতে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের করণীয়

-

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ। দীর্ঘ দিন ধরে চলছে অনির্ধারিত ছুটি। আগামী ৩১ আগস্ট স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার কথা রয়েছে। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার ধারাবাহিকতা রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ। তা ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী ছুটিতে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে এমন দীর্ঘ অবকাশে শিশুদের মানসিক বিপর্যয় ঘটতে পারে, তারা একাকিত্ব ও নিঃসঙ্গতায় ভুগতে পারে। করোনায় এ ক্রান্তিলগ্নে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছেন। এ সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
করোনাকালে করণীয়
পৃথিবীতে কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। করোনা মহামারীতে বন্দিদশাও সাময়িক। একদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে সেই দিন পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। বিশ্ব এ মহামারীর কবল থেকে মুক্তি পাওয়া পর্যন্ত আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। এ ভাইরাস থেকে বেঁচে থাকার উপায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। আমাদের সবাইকে নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া। আমাদের হাতে এখন সময় আছে, সুযোগ আছে। এখন নিজেদের নিয়ে ভাবতে হবে। নিজেদের দোষ কিভাবে শুধরানো যায়, কিভাবে নিজেকে যোগ্য থেকে যোগ্যতম করে তোলা হয় এ নিয়ে ভাবার এখনই সুযোগ।
শিক্ষার্থীদের করণীয়
রুটিন করে কাজ করা, লম্বা এই ছুটিতে প্রয়োজনীয় কাজগুলোর একটা রুটিন তৈরি করে নিতে হবে। খাওয়া, ঘুম, গোসলের মতো দৈনন্দিন কাজগুলো নির্দিষ্ট সময়ে করতে হবে, সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন বন্ধ। তাই বলে লেখাপড়া থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হওয়া চলবে না। অনলাইনে এবং টেলিভিশনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রম চলছে, সেগুলো অনুসরণ করতে হবে। ক্লাসের পড়ার সময় অনেক শিক্ষার্থীর অনেক টপিক ভালো লাগে। কিন্তু সময়ের অভাবে, রেজাল্ট ভালো করায় টেনশনে পছন্দের ওইসব টপিক বিস্তারিত পড়ার সুযোগ হয় না। এই সময়টা একটা সুবর্ণ সুযোগ ওই পছন্দের টপিকগুলো বিস্তারিত পড়ার জন্য। শিক্ষার্থীরা ওই টপিকগুলো কয়েকটি বই এবং ইন্টারনেট থেকে বিস্তারিত জ্ঞানার্জন করতে পারেন। তারা পরবর্তী পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারেন। মেডিক্যাল ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীরা জীববিজ্ঞান পড়তে পারেন। ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীরা গণিত চর্চা করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীরা সাধারণ জ্ঞানচর্চা করতে পারেন। ইন্টারনেটে বিভিন্ন টপিকের সুন্দর সুন্দর লেকচার পাওয়া যায়, সেগুলো দেখতে পারেন। পেছনের পড়া থেকে পছন্দের টপিকগুলো বিস্তারিত জানতে পারেন। এ সময়ে শিক্ষার্থীরা ধর্মগ্রন্থ পড়তে ও চর্চা করতে পারেন। পছন্দের লেখকের গল্প, কবিতা পড়াও যেতে পারে। গল্প কবিতা লিখতে এবং ছবি আঁকার চর্চা করা যেতে পারে।
শিক্ষকদের যা করণীয় হতে পারে
যোগ্য শিক্ষক হতে হলে জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে জ্ঞানচর্চা করার বিকল্প নেই। তাই শিক্ষকদের পরিকল্পিতভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হয়। এই অবসর সময়টাকে কাজে লাগাতে পারেন তারা। কিভাবে নিজেদের পড়ানোর পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখা যায় এসব নিয়ে শিক্ষকরা ভাবতে পারেন। তথ্যসমৃদ্ধ কন্টেন্ট বা প্রেজেন্টেশন তৈরি করে রাখতে পারেন এই সময়। যেগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন।
অভিভাবকদের করণীয়
করোনো পরিস্থিতিতে অধিকাংশ অভিভাবক তাদের শিশুদের পড়ালেখা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। এখন শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও মানসিক কল্যাণ সাধনে অভিভাবকরা দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করতে পারেন। তারা সন্তানদের সময় দিতে পারেন। সন্তানরা কী করছে সে দিকে খেয়াল রাখতে পারেন। সন্তানের পছন্দের বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। জেনে নিতে পারেন তাদের পরিকল্পনাগুলো। হ
লেখক : উপাধ্যক্ষ


আরো সংবাদ



premium cement