৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


অ ভি ম ত : সমাজ কোন পথে?

-

ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ কোন পথে আলোকিত হবে সে কথা এখন গভীরভাবে ভাবার সময় হয়েছে। সমাজ দৌড়াচ্ছে লোভ আর লালসার দিকে। সামাজিক চাহিদা লোভ আর লালসার কোনো শেষ নেই। যে যেভাবেই হোক ইহকালীন ক্ষণ জীবনের লালসা চরিতার্থ করতে অপরাধকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করছি না। দুনিয়ার ক্ষমতা, সামাজিক আধিপত্য, অর্থনৈতিক শক্তির মাধ্যমে সমাজকে কাবু করতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। ব্যক্তি রাজনৈতিক ও দলীয় শক্তির মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারে কারো কার্পণ্য নেই। নীতি-নৈতিকতার বাছবিচার বিলুপ্ত। অর্থ ও পেশিশক্তির জোরে যেকোনো ফোরামে প্রভাব বিস্তার হচ্ছে। আলোকিত মানুষ পর্দান্তরিত হচ্ছে। আলো দূরে সরে যাচ্ছে। আর অন্ধকারের বিস্তৃতি অবধারিত হচ্ছে। আলো আর অন্ধকার সমানে চলতে পারে না। অন্ধকার যেন জয় হচ্ছে। আর আলোকিত মানুষগুলো ক্রমেই একাকী হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কী হবে এ সমাজের। সমাজ যদি আলোর সন্ধান না পায় তাহলে কিসের ওপর সমাজ, জাতি ঠিক থাকবে। যুগে যুগে সমাজকে আলো দিতে আলোকিত মানুষের দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ ছিল। তাদের আলোচনা আর পরামর্শ ছাড়া কখনো ব্যক্তি সমাজ ঠিক থাকতে পারে না। সমাজ চলতে হলে সমাজের কর্ণধার থাকতে হয়। রাষ্ট্রের পরিচালক ছাড়া কখনো সঠিকভাবে দেশ চলতে পারে না। একটি পরিবারের একজন আদর্শ নেতাই তার পরিবারকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। সঠিক কর্মপরিকল্পনা ছাড়া কখনো কোনো জাতি তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পারে না। যে পরিবার অথবা জাতি তার অনুগতদের জীবনের জন্য সঠিক কর্মপন্থা সৃষ্টি করবে না, সে জাতি কখনো তার উদ্দেশ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে না। আমরা কোন উদ্দেশ্য এবং কর্মসূচি নিয়ে এগোচ্ছি সেখানেই আমার কথা। আমাদের ছোট্ট দেশ, এখানে জনসংখ্যার ব্যাপক চাপ আর কর্মসংস্থানের বিরাট যুদ্ধ সর্বদা সৃষ্টি হয়ে আছে। জাতিকে সঠিক পথে পৌঁছাতে কী কী পরিকল্পনা রাষ্ট্রের রয়েছে সেটাও দেশের জনগণ পরিষ্কার না। আদর্শিক নীতি-নৈতিকতায় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বাধীন হিসেবে জীবন পরিচালনায় কী কী রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি আছে, সেটা জাতির সামনে পরিষ্কার নয়। শিক্ষিত, মেধাবী, অশিক্ষিত যুবক বিশাল যুবসমাজের আগামী দিনের কী ভবিষ্যৎ সব কিছু ধোঁয়াশার মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে। যুবসমাজ অথবা রাষ্ট্রীয় সমাজ কিভাবে পরিচালিত হবে সঠিক দিকনির্দেশনার কী পন্থা সেটাও দেশের জনগণ বুঝে নিতে পারছে না। শিক্ষার কী উদ্দেশ্য এবং তার বাস্তবায়ন কোন পথেÑ সব কিছু আজ অন্ধকারে নিমজ্জিত। আসলে সব দেশ ও জাতির একটা সঠিক দিকনির্দেশনা ও উদ্দেশ্য পাওয়া যায়। আমাদের এ জাতির কী ভবিষ্যৎ, কী পরিকল্পনা কোনোটাই দেশের জনগণ পরিষ্কার নয়। এ দেশের যুব সমাজের সামনে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ অনিবার্য অন্ধকার। আলোর কোনো সন্ধান সমাজ দিতে পারছে না। সমাজের কর্তা নেতা পরিচালক তার ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে অনুগত বাহিনীকে ব্যবহার করছে। যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি জাতিকে সেটাই দেখাচ্ছে। আদর্শের কথা পুস্তকে থাকলেও সেটার বাস্তবায়ন দলীয় ফোরামে হয় না। যে যার চেয়ে বেশি পেশি ও অর্থশক্তি প্রদর্শন দেখাতে পারে সে-ই হয়ে যায় বড় নেতা অথবা দলের চিফ। দেশ ও দল পরিচালনায় কোনো আদর্শের হিসেব খুঁজে পাচ্ছি না। শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাষ্ট্র পরিচালনায় আদর্শিক গুণগত কোনো মান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কোনো দলের মধ্যে। জাতীয়ভাবে আমরা কী আদর্শের অনুসারী তাও জাতির সামনে পরিষ্কার নয়। দলীয় নেতারা দলের প্রতিষ্ঠাতার আদর্শ অনুসরণের কথা বললেও, বাস্তবে সেটাও তাদের মধ্যে পাওয়া যায় না। কুরআন সুন্নাহভিত্তিক যেসব দল ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠার কথা বলে তাদের মধ্যেও সঠিকভাবে কুরআন সুন্নাহর আদর্শ পাওয়া যায় না। একদল আরেক দলের সাথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সেখানে ক্ষমতার অর্থের লড়াই দেখা যায়। এসব লোভ আর লালসার মধ্যে এ দেশের রাজনীতি, সমাজ, পরিবার সব কিছু আজ কলুষিত ও অন্ধকারে নিমজ্জিত। প্রশ্ন হচ্ছেÑ আলো কোন পথে। কে দেবেন আলোর সন্ধান। কোথায় পাওয়া যাবে সমাজ ও রাষ্ট্রকে আলোকিত করতে দিকনির্দেশনা। আলোকিত মানুষের দিকনির্দেশনা সমাজ, রাষ্ট্র ও ক্ষমতাসীনরা গ্রহণ না করলে সে সমাজ নির্ঘাত অন্ধকারে ধাবিত হবে, সেখানে কোনো সন্দেহ নেই। আলোকিত মানুষের কথা না শুনলে তাদের দিকনির্দেশনা মানা না হলে সমাজকে অবশ্যই একদিন সে খেসারত দিতে হবে। তখন আর সমাজকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। পৃথিবী এগোচ্ছে, আমরাও এগিয়ে যাবো। এগিয়ে যেতে অবশ্যই আলোকিত মানুষের আলো প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আসুন অন্ধকার পরিহার করি, আলোর মাধ্যমে আলোকিত হই। হ
ঊসধরষ:সয.যড়য়ঁবধহংধৎর@মসধরষ.পড়স


আরো সংবাদ



premium cement