ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের অন্যতম উপদেষ্টা নাবিল সাথ বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল যদি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর জবরদখল করে নেয় তাহলে তেল আবিবের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ইন্তিফাদা বা তৃতীয় গণজাগরণ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে।
ফ্রান্সের চ্যানেল-২৪ টেলিভিশনের আরবি বিভাগের সঙ্গে আলাপকালে গত শনিবার নাবিল সাথ আরো বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল যদি পশ্চিম তীরকে দখল করে তাহলে তা ঠেকানোর জন্য ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এবং ফাতাহ আন্দোলন ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার চুক্তিতে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং পূর্ণমাত্রায় ইন্তিফাদা শুরু হয়ে যায় তাহলে আমরা হামাস এবং গাজার সমন্বিত লড়াই দেখব।’ নাবিল সাথ বলেন, তিনি আশা করছেন ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য তৃতীয় ইন্তিফাদায় আরব দেশগুলো অর্থ জোগান দেবে।
১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্রথম ইন্তিফাদা চলে। দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরু হয় ২০০০ সালে এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত তা স্থায়ী ছিল। এ সময়ে অন্তত ৩২০০ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং ইসরাইলের এক হাজার মানুষ মারা গেছে।
এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি পশ্চিম তীরের বেশ কিছু এলাকা যেখানে ইহুদি বসতি রয়েছে, সেসব এলাকার ওপর ইসরাইলের সার্বভৌমত্ব বিস্তার করতে চান। এই বিল যদি পাস হয়, তাহলে পশ্চিম তীরের ৩০ ভাগ ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত হবে। ফিলিস্তিনিরা দাবি করছে, ভবিষ্যতে তারা তাদের নিজস্ব যে স্বাধীন রাষ্ট্র চাইছে এই ভূমি তারই অংশ হবে।
এই অংশ ইসরাইলের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কয়েক দশক ধরে চলা ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাত অবসানে জানুয়ারি মাসে ট্রাম্প শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তার প্রস্তাবে সমাধানের এই ফর্মুলা দেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবের ফলে নেয়া ইসরাইলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জেরুসালেমে বিবিসির সংবাদদাতা টম বেটম্যান।
জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে এই ভূখণ্ডের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ ঘিরে রয়েছে ইসরাইল আর পূর্বে জর্দান। ইসরাইল ১৯৬৭-এর মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকে এই পশ্চিম তীর অধিকার করে রেখেছে। কিন্তু কয়েক দশক ধরে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে কঠিন আলাপ-আলোচনার পরেও এই অঞ্চলের চূড়ান্ত মালিকানার বিষয়টি আজো নিষ্পত্তি হয়নি।
পশ্চিম তীরে সীমিত স্বশাসন ও ইসরাইলি সামরিক আইনের অধীনে বসবাস করেন ২১ থেকে ৩০ লাখ (বিভিন্ন সূত্র মতে) ফিলিস্তিনি আরব। পূর্ব জেরুসালেমের বাইরে পশ্চিম তীরে বাস করেন প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার ইসরাইলের ইহুদি। তারা থাকেন ১৩২টি বিভিন্ন বসতিতে, যেগুলো ইসরাইল দখলদারিত্বের ভিত্তিতে নির্মাণ করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ মনে করে এই বসতি আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। যদিও ইসরাইল ও ট্রাম্প প্রশাসনাধীন আমেরিকা এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করে। ইসরাইল যে অন্তর্ভুক্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় তা সফল হলে পশ্চিম তীরের ৪.৫ ভাগ ফিলিস্তিনি ইসরাইলের অন্তর্গত অঞ্চলে ছিটমহলের বাসিন্দায় পরিণত হবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা