২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইরাক জানিয়েছে তারা এ জোটে যোগ দেবে না ইরানকে ঠেকাতে জোট করছে যুক্তরাষ্ট্র : পম্পেও

মাইক পম্পেও -

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, সৌদি আরবের তেল স্থাপনার ওপর হামলার পর ইরানের হুমকি ঠেকাতে জোট গঠন করা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ব্রিটেন ও বাহরাইন জানিয়েছে, তারা এ জোটে অংশ নেবে। ইরাক জানিয়েছে, তারা এতে যোগ দেবে না। বেশির ভাগ ইউরোপীয় দেশ আঞ্চলিক উত্তেজনা ডেকে আনার ভয়ে জোট গঠন করতে নারাজ।
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করেছে ইরান। ইরান জানিয়ে দিয়েছে, যেকোনো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ট্রাম্প এ সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চান। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতাদের সাথে আলোচনার পর এ কথা বলেন তিনি।
শনিবারে সৌদি আরবে হামলার পরপরই ইরানের মদদপুষ্ট ইয়েমেনের হাউছি বিদ্রোহীরা এর দায় স্বীকার করে। তবে কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি ও গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ইরানই ওই হামলার জন্য দায়ী। তেহরান ওই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রিয়াদের প্রধান মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসক আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্সের সাথে আলাপের পর পম্পেও তার সুর নরম করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শান্তিপ্রতিষ্ঠা ও শান্তিপূর্ণ সমাধান অর্জনের লক্ষ্যে জোট গঠন করতে এসেছি। এটিই আমার প্রধান উদ্দেশ্য। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চান, আমি যেন অবশ্যই আমার লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাই। আশা করছি, ইরানও ব্যাপারটি সেভাবেই দেখবে।’
তবে জোট সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি তিনি। পারস্য উপসাগরীয় সমুদ্রসীমায় তেলবাহী ট্যাংকারে হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক সমুদ্র নিরাপত্তা জোট তৈরির চেষ্টা করছে। এ হামলার জন্যও ইরানের ওপর দোষ চাপিয়েছে ওয়াশিংটন। পম্পেও তার প্রস্তাবিত জোটকে ‘কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বৃহস্পতিবার সিএনএনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা সৌদি সামরিক হামলার বিরুদ্ধে যদি নিজেকে রক্ষা করতে হয়, তবে ইরান একটুও ঘাবড়াবে না। তিনি বলেন, এ ধরনের যেকোনো হামলার বিরুদ্ধে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধ’ করা হবে। দেশটির রাষ্ট্রীয় একটি বার্তা সংস্থা জানায়, শুক্রবার জারিফ কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল খালিদ আল সাবাহকে ফোন করেন। ফোনালাপে দুইজন এ অঞ্চলের উত্তেজনা নিরসনের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ইরানের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমি একটি অত্যন্ত গুরুতর বিবৃতি দিচ্ছি। সেটি হলো আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা কোনো ধরনের সামরিক সঙ্ঘাত চাই না... কিন্তু আমরা নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষার জন্য চোখ বন্ধ করে থাকব না। সৌদি আরব কিংবা মার্কিন সামরিক বাহিনী হামলা চালালে তার ফল কী হবে; সিএনএনের এমন এক প্রশ্নের জবাবে জাওয়াদ জারিফ বলেন, সর্বাত্মক যুদ্ধ।
সৌদি তেলক্ষেত্রে গত শনিবারের ভয়াবহ ড্রোন হামলার জবাব দিতে সৌদি আরব ও উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্য মিত্রদের সাথে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। তেলক্ষেত্রে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করছে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে এই হামলার সাথে কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে তেহরান। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সৌদির তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনাকে যুদ্ধাপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন।
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নোটে জানান, ইরানের সাথে যুদ্ধে যাওয়া ছাড়াও আরো অনেক পথ রয়েছে তার হাতে। তিনি ইরানের বিরুদ্ধে আরো বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।
মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, পম্পেও তথাকথিত বি-টিমের সদস্য। তেহরান বলছে, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান-সহ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও ট্রাম্পকে যুদ্ধের জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছে।
তেলক্ষেত্রে হামলার ঘটনাকে বিশ্বের জন্য পরীক্ষা বলে বুধবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বৈশ্বিক ইচ্ছার বাস্তব পরীক্ষা এই হামলা।
গত শনিবার সৌদির দু’টি তেলক্ষেত্রে অন্তত ২৫টি ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে বলে দাবি করেছে রিয়াদ। হামলায় যে ইরান জড়িত সে ব্যাপারে কোনো ধরনের সন্দেহ নেই বলে জানিয়েছে সৌদি আরব।


আরো সংবাদ



premium cement