পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রোববার ‘ভারতের পারমাণবিক অস্ত্রাগারগুলোর নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা’ সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একাধিক টুইটের মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র ‘ফ্যাসিবাদী, বর্ণবাদী হিন্দু শ্রেষ্ঠত্ববাদী ভাবধারার মোদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে; যা কেবল এই অঞ্চলেই নয়, বিশ্বজুড়ে প্রভাব ফেলছে।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দুদিন আগে অটল বিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুদিনে পোখরানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছিলেন যে এখনো পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র প্রথম ব্যবহার না করার নীতিতে রয়েছে ভারত। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী ভবিষ্যতে পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের এই নীতিতে তার দেশ অটল থাকবে কি না সেটা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। সময় ও পরিস্থিতি যদি আগেই তা প্রয়োগের আভাস দেয়, তাহলে ভারত তাদের নীতির পরিবর্তনও করতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য নয়া দিল্লির মূল জাতীয় সুরক্ষা নীতিকে দ্ব্যর্থতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীর মনোহরলাল খট্টরের জন আশীর্বাদ যাত্রায় ভাষণ দিতে গিয়ে রোববার পাঁচকুলায় তিনি বলেন, ‘যতদিন পাকিস্তান তাদের মাটিতে সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করা বন্ধ করবে না, ততদিন ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আলোচনা শুরু করা হবে না। কেউ কেউ মনে করেন পাকিস্তানের সাথে আলোচনা হওয়া উচিত, কিন্তু যতদিন পাকিস্তান সন্ত্রাসে সমর্থন দেয়া বন্ধ না করছে, ততদিন কোনো আলোচনা হবে না। আলোচনা যদি হয়, হবে পাক অধিকৃত কাশ্মির নিয়ে।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আরো একবার ভারত সরকার কর্তৃক অধিকৃত কাশ্মিরের কিছু অংশে অবরোধ আরোপের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যেখানে ১৪ দিন ধরে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তিনি বলেন, এই বিষয়টিকে ‘জাতিসঙ্ঘের পর্যবেক্ষকদের পাঠানোর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে জানিয়ে দেয়া উচিত ছিল’।
তিনি টুইট করেছেন, ‘জার্মানির নিয়ন্ত্রণ যেমন ফ্যাসিবাদী নাৎসিরা নিয়েছিল তেমনই ভারতের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বর্ণবাদী হিন্দু আধিপত্যবাদী আদর্শ ও নেতৃত্ব। ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা অবরোধের আওতায় ৯০ লাখ কাশ্মিরির জীবন হুমকির মুখোমুখি হয়েছে। এমতাবস্থায় জাতিসঙ্ঘের পর্যবেক্ষকদের প্রেরণ করার মাধ্যমে এখানকার পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে জানিয়ে দেয়া উচিত ছিল’।
তিনি আরো বলেন, ভারত সরকারের ‘ঘৃণা ও গণহত্যার মতবাদ’ ও আরএসএসের (রাষ্ট্রীয় সমাজসেবক সঙ্ঘ) এর বিক্ষোভ কেবল ভারতের নয় পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদেরও হুমকির মুখে ফেলেছে। এই হুমকিটি পাকিস্তান ও ভারতের সংখ্যালঘুরাসহ নেহেরু ও গান্ধীর ভারতবর্ষে প্রসারিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আরএসএস-বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের নাৎসি মতাদর্শ ও জাতিগত নির্মূলকরণ এবং গণহত্যা আদর্শ সহজেই কেউ গুগলের লিংকগুলো থেকে বুঝতে পারে। ইতোমধ্যে আটক হয়ে কারাগারে বন্দিত্ব এবং নাগরিকত্ব বাতিলের হুমকির মুখে রয়েছে ৪০ লাখ ভারতীয় মুসলমান। এসব ঘৃণা ও গণহত্যার ষড়যন্ত্র এখনই বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্যোগ না নিলে বিশ্বব্যাপী ঘৃণা ও গণহত্যার মতবাদ ছড়িয়ে পড়বে’।
৫ আগস্ট ডানপন্থী বিজেপি সরকার কাশ্মিরি নেতাদের গৃহবন্দী করে রাখে এবং ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলটির বিশেষ মর্যাদা বাদ দেয়ার কিছুক্ষণ আগেই কাশ্মিরি নেতাদের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। দখলকৃত অঞ্চলে কঠোর কারফিউ সত্ত্বেও কাশ্মিরি বাসিন্দা এবং ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে কমপক্ষে দু’বার বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা