২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইদলিবের নতুন আতঙ্ক করোনা ভাইরাস

- সংগৃহীত

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার ইদলিব ধ্বংসস্তুপের নগরী। কোথাও সাবান নেই, অনেক কষ্টে মেলে সামান্য পানি। গোলার আঘাতে গুঁড়িয়ে যাওয়া নগরীতে কোয়ারান্টাইনের জায়গাও নেই। এ অবস্থ‍ায় করোনা ভাইরাস সেখানে নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এক নারী স্থানীয়দের শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস এখনো সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে পৌঁছায়নি। অন্তত আনুষ্ঠানিক হিসাব মতে। যদিও ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। সিরিয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটিতে পাঁচজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা কী সেটা সবারই অজানা।

ইদলিবে যুদ্ধবিরতি চলছে। গত কয়েক সপ্তাহে সেখানকার মানুষ বাশার আল-আসাদ বাহিনী বা তাদের মিত্র রুশ বাহিনীর বোমা হামলার আতঙ্কে নয় বরং করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

ইদলিব সিরীয় বিদ্রোহীদের শক্তঘাঁটি ছিল। গতবছর ডিসেম্বরে আসাদ বাহিনী সেখানে আক্রমণ করলে নগরীর ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। যারা এখন নানা অস্থায়ী ক্যাম্পে বসবাস করছেন। ক্যাম্পগুলোতে হাজার হাজার মানুষ গাদাগাদি করে থাকেন, খান, ঘুমান। সেখানে বারবার হাত ধোয়া বা দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব। কোয়ারান্টাইনের তো প্রশ্নই আসে না।

ইদলিবে নারীদের সহযোগিতা ও কর্মসংস্থান নিয়ে কাজ করছেন হুদা খাইতি। তিনি কোভিড-১৯ রোগের বিষয়ে সচেতনতা কমিটিরও প্রধান। তিনি বলেন,‘আমি কিভাবে এদের বলি আপনারা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন। তারা ভাগ্য ভালো থাকলে পরিষ্কার পানি পায়। হাজারো মানুষের জন্য মাত্র কয়েকটি টয়লেট। ‍মাস্ক, গ্লাভস কিচ্ছু নেই।’

খাইতি ২০১৮ সালে ইদলিব আসেন। তখন নগরীটি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন থেকে তিনি ও তার দল নারীদের নানা বিষয়ে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছেন। তবে এখন সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন করোনা ভাইরাসের বিষয়ে নারীদের সচেতন করার কাজে। তিনি বলেন,‘করোনায় সংক্রমিত হলে কী কী উপসর্গ দেখা দেবে সেটা তাদের বলছি। আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও সচেতন করছি। যদিও এখানে খুব কম লোকের মাস্ক কেনার সামর্থ্য আছে।’

বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ করে ইদলিবের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। শুধু ২০১৯ সালেই সেনা অভিযানের সময় সেখানে ৮৫টি হাসপাতাল গু‍ড়িয়ে দেয়া হয়। মেডিকো ইন্টারন্যাশনালের সিরিয়া বিষয়ে সমন্বয়ক তিল কুস্তা বলেন, সেখানে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের জন্য এখন মাত্র তিনটি হাসপাতাল আছে। তার মধ্যে একটি পুরোপুরি চালু। সেখানে নিবীড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে ১৫০ শয্যা এবং একই সংখ্যায় ভেন্টিলেটর আছে বলে জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement