সরকারি হসপিটাল এবং বেসরকারি হসপিটালে একই ডাক্তার থাকা সত্ত্বেও দুটো যেন আলাদা জগৎ। সরকারি হসপিটালে রোগী দেখার সময় ডাক্তারদের দায়িত্বশীল ভূমিকা খুব চোখে পড়ে না। দেখা গেছে রোগীর সমস্যা দেখেন ডাক্তারের পিএস। আর প্রেসক্রিপশন লিখে থাকেন ডাক্তার। ডাক্তারের অবহেলায় অনেক রোগী মারা যায়Ñ এটা বাংলাদেশের স্বাভাবিক ঘটনা।
আবার যারা ওপরের লেভেলের ডাক্তার তাদের দেখা পাওয়া মানে চাঁদ হাতে পাওয়া। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের জন্য অপেক্ষা করেও সাক্ষাৎ পাওয়া যায় না। ওনারা যখন প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে থাকে অঢেল ফি। ফলে সমাজে নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্তের আর সুযোগ হয়ে ওঠে না ওই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার।
পরিস্থিতির শিকার এ দেশের সাধারণ জনগণ ভালো ডাক্তার বা ভালো কোনো হসপিটালে চিকিৎসা করার সুযোগ পায় না। সরকারি হসপিটালে বিভিন্ন বাণিজ্য তথা সিন্ডিকেট জড়িত। সিন্ডিকেটবিহীন সামান্য চিকিৎসাসেবা নিতে পারে না। এমনকি রোগী ভর্তি করাতে সিন্ডিকেটের কবলে পড়তে হয় এমন নিউজ হরহামেশাই ছাপানো হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছরে মৌলিক অধিকারের অন্যতম, চিকিৎসাসেবা আজো সঠিকভাবে পায়নি এ দেশের সাধারণ জনগণ।
এখনো চিকিৎসার অভাবে হাজার হাজার মানুষ ভুগে ভুগে মারা যাচ্ছে। এখনো ওষুধ কেনার টাকার অভাবে বা চিকিৎসার ব্যয় বহনের সামর্থ্য না থাকায় অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। দেশে উন্নতি হচ্ছে, রাস্তাঘাট হচ্ছে, স্যাটেলাইট আকাশে যাচ্ছে, রাস্তা দুই লেন থেকে ছয় লেনের হচ্ছে; কিন্তু সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে না পারলে এসব উন্নয়ন ম্লান হয়ে যায়। স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজানো উচিত। দীর্ঘ দিন করোনা চলছে তার পরও জেলা লেভেলের হাসপাতালের তেমন উন্নয়ন চোখে পড়েনি। নেই কোনো উচ্চমানের যন্ত্রপাতি, নেই আইসিইউ, নেই পর্যাপ্ত ডাক্তার।
এমনকি বেশির ভাগ হসপিটালে রোগীর যাবতীয় বিষয় তদারক করে নার্স। নেই পর্যাপ্ত বেড এমনকি হসপিটাল করার পরে কোনো কোনো জায়গায় অপশক্তির জন্য উদ্বোধনের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে গুনতে বছর চলে যায়। যেমন ভোলায় হসপিটাল হয়েছে দুই বছর আগে; আজো উদ্বোধন হয়নি। বড় কোনো সমস্যা হলেই রোগী নিয়ে ঢাকামুখী হতে হয় স্বজনদের।
কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ মানেই উন্নয়ন না। সঠিক তদারকির মাধ্যমে প্রত্যেকটা কাজ করা উচিত। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে কোনো রোগী চিকিৎসার অভাবে, চিকিৎসকের গাফিলতির জন্য মারা যাবে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রয়োজনে সরকারের ভর্তুকি দিয়ে টেস্টের ফি কমানো উচিত। বর্তমানে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিকে হচ্ছে রমরমা ব্যবসা। ১ টাকার মাল ১০ টাকা। অযথা ভূরি ভূরি পরীক্ষাসহ নানা সমস্যা দেখিয়ে টাকা নেয়ার পাঁয়তারা। আর সে সেক্টর থেকে বড় মাপের মুনাফা পান আমাদের ডাক্তাররা।
‘স্বাস্থ্যই সব সুখের মূল’ এই প্রতিপাদ্যে বিশ্বাস রেখে সরকার তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত অতিদ্রুত সরকারি বেসরকারি হসপিটালের দিকে বিশেষ নজর দেয়া। আদর্শ ডাক্তার হওয়ার অঙ্গীকার নিয়েই মেডিক্যাল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের কাজ করা উচিত।
মো. সায়েদ আফ্রিদী
শিক্ষার্থী : ঢাকা কলেজ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা