১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে কায়রোতে জোরদার প্রচেষ্টা

গাজার ধ্বংসস্তুপ - সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দীদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি করতে কায়রোতে শনিবার থেকে যুদ্ধবিরতি আলোচনা আবার শুরু হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে।

হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতির জন্য সবশেষ যে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে সেটি পর্যালোচনা করে তাদের প্রতিনিধি দলটি ‘ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে সেখানে গেছে।

তারা বলছে, ‘ফিলিস্তিনিদের দাবি পূরণের জন্য একটি চুক্তি করতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, হামাসের জন্য যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত সহজ সিদ্ধান্ত।

হামাসের আলোচনাকারীরা যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর জন্য মিসরের রাজধানীতে ফিরে এসেছে।

এ আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে মিসর এবং কাতার। কোনো চুক্তি সম্পাদন হলে গাজায় ইসরাইলি অভিযান সাময়িকভাবে বন্ধ হবে এবং বিনিময়ে বন্দীরা মুক্তি পাবে।

শনিবার রাতে দেয়া এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, তারা আলোচনার টেবিলে চুক্তিটি চূড়ান্ত হোক তাই চায়, যদিও অনেকগুলো বিষয়ে দু’পক্ষের মধ্যে এখনো মতপার্থক্য আছে।

এর মধ্যে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি কি সাময়িক নাকি স্থায়ী হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

হামাস চায় এমন চুক্তি বা সমঝোতা হোক যাতে যুদ্ধ শেষ হওয়ার সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার থাকবে। অন্যদিকে, ওই অঞ্চলে হামাসের তৎপরতা থাকবে এ নিয়ে কোনো চুক্তিতে সম্মত হতে রাজি নয় ইসরাইল।

ধারনা করা হচ্ছে, এ আলোচনায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও বন্দীদের মুক্তির বিষয়টি আলোচনা হবে। একই সাথে ইসরাইলের কারাগারে আটক থাকা বেশ কিছু ফিলিস্তিনি বন্দীও মুক্তি পাবে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবশ্য বারবারই গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে নতুন সামরিক অভিযানের কথা বলে আসছেন, এমনকি চুক্তি হলেও।

ইসরাইলি গণমাধ্যম যে খবর দিচ্ছে তাতে নতুন করে যুদ্ধবিরতির আলোচনার শুরু হলেও দেশটির অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি।

তবে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক ও সামরিক সহযোগী যুক্তরাষ্ট্র নতুন কোনো অভিযানের পক্ষে নয়, যেখানে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক নাগরিক হতাহতের আশঙ্কা থাকে।

বরং দেশটি আগে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় একটি পরিকল্পনা দেখতে চাইছে।

গাজার মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে যুদ্ধের কারণে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ পালিয়ে রাফাহ শহরে আশ্রয় নিয়েছে।

শনিবার যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্ভাবনার কথা বলতে গিয়ে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ বলেন, ‘কোনো আনুষ্ঠানিক জবাব এখনো পাওয়া যায়নি। যখন পাওয়া যাবে তখন যুদ্ধকালীন কেবিনেট বসে আলোচনা করবে। তখন পর্যন্ত সব রাজনৈতিক সূত্র ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের শান্ত থেকে কাজ করতে হবে ও রাজনৈতিক কারণে হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত না হয়ে অফিসিয়াল আপডেট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ-এর পরিচালক সর্বশেষ এ আলোচনায় মধ্যস্থতার জন্য কায়রো গেছেন বলে বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের পার্টনার বিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন দুই কর্মকর্তা।

ব্লিংকেন নিজেও এই আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ একজন। এ সপ্তাহেই নেতানিয়াহুর সাথে ইসরাইল গিয়ে কথা বলেন তিনি।

শুক্রবার অ্যারিজোনায় ব্লিংকেন বলেন, ‘গাজার মানুষ ও যুদ্ধবিরতির মধ্যে একমাত্র বাধা ছিল হামাস।’

গত কয়েক মাস ধরেই বড় কোনো অর্জন ছাড়াই যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে। নভেম্বরের পর থেকে যুদ্ধবিরতি বা কোনো বন্দী মুক্তি হয়নি।

এ সময়ে কয়েকবার নতুন চুক্তির সম্ভাবনা দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত স্বাক্ষরের আগে সেটি ব্যর্থ হয়েছে।

এমনকি শেষ দফার আলোচনায় সতর্কতার প্রয়োজন। আলোচনার সাথে সম্পৃক্ত একটি সূত্র বলছে, আলোচনায় জটিলতা রয়েই গেছে এবং একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।


যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান অব্যাহত রাখলে হামাস নেতৃত্বকে বহিস্কার
ওয়াশিংটন পোস্টকে একটি সূত্র বলেছে, হামাস যদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা অব্যাহত রাখে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বের করে দেয়ার জন্য কাতারকে অনুরোধ করেছে।

শনিবার তেল আবিবের ডেমোক্রেসি স্কয়ারে শত শত মানুষ সমবেত হয়ে বন্দীদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।

বন্দীদের স্বজনরা তেল আবিবের কিরিয়া সামরিক ঘাঁটিতে জমায়েত হয়ে চুক্তি করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

কেউ কেউ যুদ্ধবিরতিকে কম গুরুত্ব দেয়ার জন্য নেতানিয়াহুকে অভিযুক্তও করেছে এবং অন্যরা যুদ্ধ অবসানের দাবি জানিয়েছে।

বন্দীদের মধ্যে একজন ৮০ বছর বয়সী ইয়োরাম। তার পুত্রবধূ আয়ালা মেটজগার বলেন, সরকারকে অবশ্যই যুদ্ধ অবসানে রাজি হতে হবে এবং সেটি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে হলেও।

গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং আরো অন্তত ২৫০ জন পণবন্দী হওয়ার পর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়।

ইসরাইলের সামরিক অভিযানে ৩৪ হাজার ৬৫৪ জন নিহত এবং ৭৭ হাজার ৯০৮ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

এরপর থেকে কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
ধনবাড়ীতে পুলিশ পিটিয়ে হ্যান্ডকাপ নিয়ে পালিয়েছে আসামি যে কারণে ডিবিতে গিয়েছিলেন মাওলানা মামুনুল হক? ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডুসেন সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশ সাফল্য পেয়েছে : আইজিপি বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় রেলস্টেশন নির্মাণ করা হবে : রেলপথমন্ত্রী বাংলাদেশের আসছেন ‘ওসমান বে’ ধর্ষণ মামলা থেকে মুক্তি মেলার পর বিশ্বকাপে খেলার অনুমতি পেলেন লামিচানে গাজীপুরে বজ্রপাতে গৃহবধূর মৃত্যু নারায়ণগঞ্জে ৫৭টি চোরাই মোবাইলসহ ৭ জন গ্রেফতার আশুলিয়ায় তুচ্ছ ঘটনায় বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন ফায়ার সার্ভিস ও আবহাওয়া অধিদফতরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ

সকল