০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া- জেগেছে রাঙা মঞ্জুরি

ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া- জেগেছে রাঙা মঞ্জুরি -

বৈশাখের আকাশে গনগনে সূর্য। তার সাথে পাল্লা দিয়েই যেন পথে-প্রান্তরে রক্তিম কৃষ্ণচূড়া ফুল খুলে বসেছে তার সৌন্দর্যের ডালি। গ্রীষ্মের তপ্ত আবহাওয়ায় পথের ধারে টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে থমকে দাঁড়ায় পথিক। মনে হয় যেন, বৈশাখের রোদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে সবুজ চিরল পাতা জ্বলজ্বল করছে।
ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জ জেলার পথে-প্রান্তরে যেন লাল রঙের পসরা সাজিয়ে বসে আছে কৃষ্ণচূড়া। কিন্তু এখানকার প্রবীণরা জানান, গত এক-দেড় দশকে কৃষ্ণচূড়া গাছের সংখ্যা কমেছে অনেক। ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে- আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গান আমাদের স্মরণ করে দেয় কৃষ্ণচূড়ার তাৎপর্য।
উপজেলার বানিয়াজুরী, ঘিওর, নালী, সিংজুরী, পয়লা, বালিয়াখোড়া ও বড়টিয়া ইউনিয়নের মেঠো পথ, ঝোঁপে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় দেখা মেলে এ ফুলের। কিন্তু এখানকার প্রবীণরা জানান, গত এক- দেড় দশকে কৃষ্ণচূড়াগাছের সংখ্যা কমেছে অনেক। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলে সৌন্দর্য ছাড়া আর কিছুই হয় না! এর কাঠ তেমন কোনো কাজে আসে না। তাই মানুষের মধ্যে কৃষ্ণচূড়াগাছ
রোপণে আগ্রহ কম। ঘিওর সদরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কবি দোলা রায় জানান, শখের বশে এ গাছের কদর থাকলেও এর কাঠ তুলনামূলক দামি নয়। কারণ, এর কাঠ আসবাব তৈরিসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহারযোগ্য নয়। এ জন্য দেশে কৃষ্ণচূড়াগাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে। তবে ইদানীং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এবং শখের বশে কৃষ্ণচূড়াগাছের চারা রোপণ করছেন অনেকে। বানিয়াজুরী রিফাত নার্সারির মালিক আব্দুর রশিদ জানান, তিন-চার বছর ধরে কাটিং পদ্ধতিতে কৃষ্ণচূড়ার চারা বিক্রির সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিটি চারা ২০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল হারবেরিয়ামের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহবুবা সুলতানা জানান, কৃষ্ণচূড়া গাছের আরেক নাম গুলমোহর। এর আদি নিবাস-পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।
বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এটি ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত একটি উদ্ভিদ। কৃষ্ণচূড়াগাছ উচ্চতা ১২ থেকে ১৫ মিটার হলেও শাখা-পল্লবে এটির
ব্যাপ্তি বেশ প্রশস্ত। মুকুল ধরার কিছুদিনের মধ্যে পুরো গাছ ফুলে ফুলে ভরে যায়। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো বড়, সাত থেকে আটটি পাপড়িযুক্ত, গাঢ় লাল রঙের।
পাপড়িগুলো ৮ সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হয়। এ ফুল ফুটতে ৩০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রার প্রয়োজন হয় বলে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাবদাহে এই ফুল ফোটে।
জেলা বন ও উদ্ভিদ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, লাল, হলুদ, সাদা কৃষ্ণচূড়া তিনটি রঙের হয়। কম হলেও হলদে রঙের কৃষ্ণচূড়া আর সাদা রঙের কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে কালেভদ্রে। সরকারিভাবে কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা বিতরণ করা হচ্ছে। রাস্তার ধারে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙিনায় এর চারা রোপণ
করা হচ্ছে। পরিবেশ গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান ‘বারসিক’-এর বানিয়াজুরী আঞ্চলিক কর্মকর্তা সুবীর সরকার বলেন, বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতির সাথে কৃষ্ণচূড়াগাছের সম্পর্ক খুব নিবিড়। ছড়া-কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা ভঙ্গিমায় এসেছে এই ফুলের সৌন্দর্যের কথা।


আরো সংবাদ



premium cement
নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছার আহ্বান ম্যাক্রোঁর গাজীপুরে পাওনা আদায়ের দাবিতে শ্রমিকদের অবস্থান ৩ বলের ব্যবধানে শান্ত-লিটনের বিদায় লেবাননে ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত ঢাকায় এবার কোরবানির পশুর হাট ২২টি ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক না করা পর্যন্ত সৌদির সাথে প্রতিরক্ষা চুক্তি নয় : যুক্তরাষ্ট্র নোয়াখালীর চরজব্বার থানার ওসি প্রত্যাহার বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা নিহত কালবৈশাখী ঝড়ের সতর্কতা জারি, বৃষ্টি থাকতে পারে ৭ দিন অভিনব কায়দায় বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিল পাচারকালে একজন গ্রেফতার মাওলানা মামুনুল হকের সাথে উলামা-মাশায়েখ পরিষদের সাক্ষাৎ

সকল