২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী : ভোগান্তিতে রোজাদাররা

রাজধানীতে সড়কের পাশাপাশি ফ্লাইওভারেও তীব্র যানজট হচ্ছে : নয়া দিগন্ত -


রাজধানীজুড়ে ভয়াবহ যানজটে নাকাল রোজাদাররা। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ইফতারের আগে ঘরে ফেরার তাড়া, অন্যদিকে ঈদের কেনাকাটায় বের হওয়া মানুষের চাপ। তার ওপর মাঝে মধ্যে কয়েক পসলা বৃষ্টি ভোগান্তি আরো বাড়িয়ে দেয়। সব মিলিয়ে ভয়াবহ যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে কর্মজীবীসহ সাধারণ যাত্রীদের। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে শুরু হয় যানজট। বিকেল হতেই আটকে যায় অনেক সড়ক। ট্রাফিক পুলিশ বলছে, ঘরে ফিরতে সবাই একসাথে বের হওয়ায় রাস্তায় প্রচণ্ড চাপ পড়ছে, যা সামাল দিতে কিছুটা বেগ পেতেই হয়।

তবে শুধুই যে রমজানে একসাথে বের হওয়া বা কেনাকাটার জন্য যানজটের সৃষ্টি তা নয়। ভুক্তভোগীরা বলছেন, যানবাহন চালকদের খামখেয়ালিপনাও কোনো অংশে কম দায়ী নয়। আবার গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাস্তা দখল করে টার্মিনাল তৈরি করে রাখা হয়েছে, যার কারণেও যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরেজমিন বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ও বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়, রাজধানীর নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, জিগাতলা, মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, আড়ং, ধানমন্ডি ২৭, ধানমন্ডি ৩২, কলাবাগান, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, বাংলামোটর, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, শান্তিনগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড়, গুলিস্তান, ওয়ারি, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কুড়িল, নতুনবাজার, বাড্ডা, প্রগতি সরণি, রামপুরা, মিন্টুরোড, গুলশান-১, গুলশান-২ এলাকার সড়কগুলো গতকাল তীব্র যানজটে আটকে যায়। একেকটি সিগন্যাল পার হতে যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এমনকি যানজট সামাল দিতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদেরও হিমশিম খেতে হয়।
রমজানে তীব্র গরমে দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। তার ওপর যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যা কম হওয়ায় বাসগুলোতে ওঠার অবস্থাও থাকে না।

বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা এক যাত্রী শামসুল আলম বলেন, দুপুরের দিকে সাধারণত যানজট থাকে না। কিন্তু বিকেল হলেই যানজট বেড়ে যায়। কারণ তখন সব অফিস ছুটি হয়। আবার পরিবারের সাথে ইফতার করতে হলে ওই সময়ই যেতে হবে। কারণ অফিস থেকে তো আর আগে বের হওয়ার সুযোগ নেই। তাই ভোগান্তি হলেও কষ্ট করে যেতে হচ্ছে। নুরে আলম নামে নারায়ণগঞ্জগামী এক যাত্রী বলেন, তিনি প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা-যাওয়া করেন। টিকাটুলী ও ইত্তেফাক মোড় পার হলেই মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে উঠা যায়। কিন্তু ফ্লাইওভারে ওঠার মুখে রাজধানী মার্কেটের পাশে রাস্তার ওপরে গড়ে তোলা হয়েছে ছোটখাটো বাস টার্মিনাল। দূরপাল্লার বড় বড় ৫-৬টি বাস সব সময় রাস্তা দখল করে থাকে। এতে তাদের সামনের রাস্তা ফাঁকা থাকলেও পেছনে যানজট গিয়ে দাঁড়ায় শাপলা চত্বরে।

কাওরানবাজার মোড়ে সিগন্যালে আটকে থাকা বাসের হেলপার মো: রফিক বলেন, রোজার প্রথম দিকে দুপুরের সময় যানজট ছিল না। এখন বাড়ছে, কারণ মানুষ মার্কেট করতে বের হচ্ছে। ঈদ যত এগোবে, যানজট তত বাড়বে। শিকড় বাসের হেলপার আমজাদ বলেন, সকালের অফিস সময়ে আর ইফতারের ঘণ্টাখানেক আগে যানজট জটিলভাবে লাগে। তবে ইফতারের পর রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, পরিবারের সাথে ইফতার করতে অফিস শেষে সবাই একসাথে বাসায় ফেরা শুরু করেন, যার কারণে সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। এখন ঈদের আগ মুহূর্তে অনেকে কেনাকাটা করতে বের হচ্ছেন, যার কারণে যানজটের মাত্রা আরো বেড়েছে। তবে যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা করছে।


আরো সংবাদ



premium cement