বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে দেশের শেয়ারবাজার। ঈদের আগে পরে মিলে টানা আট কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। মূল্যসূচক টানা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতিও।
গতকাল সোমবার প্রায় পাঁচ মাস পর প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেড় হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হয়েছে। শেয়ারবাজার এমন চাঙ্গা হয়ে ওঠায় বেশ খুশি বিনিয়োগকারীরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, কয়েকটি কারণে শেয়ারবাজার চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে অন্যতম আইপিওকেন্দ্রিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে কালো টাকা বিনিয়োগ হওয়া।
তারা বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আইপিও আবেদন করতে হলে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। আগামী ৩০ মে থেকে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আইপিও আবেদন শুরু হবে। এর আগেই ১৯ মে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করতে হবে। এ কারণে আইপিও আবেদনের জন্য অনেক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করছেন।
এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হয়েছে। কয়েক দিন পরেই অর্থবছর শেষ হয়ে যাবে। এ কারণে অপ্রদর্শিত অর্থের একটি অংশ এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ হচ্ছে। ফলে লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সোমবার লেনদেনের শুরুতে প্রায় সব ক’টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। এতে লেনদেনের প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। পরবর্তী সময়ে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমে। তবে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সূচক ঊর্ধ্বমুখীই থাকে। এর ফলে ঈদের আগে ও পরে মিলে টানা আট কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকল শেয়ারবাজার।
মূল্যসূচক টানা বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেশ বেড়েছে। গতকাল সোমবার ডিএসইতে লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে টানা ১১ কার্যদিবস ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হলো। আর ২৫ জানুয়ারির পর বাজারটিতে দেড় হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হলো।
দিনের লেনদেন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৮৪০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৮৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এ দিকে সব ক’টি মূল্যসূচকের উত্থান হলেও ডিএসইতে দাম বৃদ্ধির তুলনায় দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ডিএসইতে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৫টির এবং ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৫৩৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় এক হাজার ৪১৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনেদেন বেড়েছে ১১৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ৬৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৫৩ কোটি সাত লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাইফ পাওয়ার।
এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্রাইম ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ন্যাশনাল ফিড, সিটি ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স এবং এসএস স্টিল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ব্লক মার্কেট : প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে গতকাল সোমবার ৩৮টি কোম্পানির সাড়ে ৪১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানিগুলোর ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার ৭১৮টি শেয়ার ৯০ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৪১ কোটি ৫৪ লাখ ৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৩ কোটি ২৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আট কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ তিন কোটি ৯০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে এসকে ট্রিমসের।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা