০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে এসএমই খাত তেমন সুবিধা পাচ্ছে না : বাণিজ্যমন্ত্রী

-

সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা তেমন সুবিধা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, শুনেছি সরকারঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তারা তেমন কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। ক্ষুদ্র বলে ব্যাংকগুলো তাদের সহায়তা করতে চায় না। কারণ তাতে তাদের খরচ উঠে আসে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাদের মানবিক বিষয়গুলো দেখতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ মোকাবেলা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া প্রণোদনা প্যাকেজ’ বিষয়ে সিরিজ মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন। প্রথম সভার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখা এবং অর্থনীতির সামগ্রিক চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা’। অনুষ্ঠানে বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস বক্তব্য রাখেন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ^ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস মার্সি মিয়াং টেমবোন, বিজিএমইয়ের প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনিন আহমেদ।
টিপু মুনশি বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতি দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রয়েছে। সরকারের প্রচেষ্টায় মানুষ সচেতন হচ্ছে, ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সফলভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখতে সরকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধার সংবলিত প্রায় ১.২২ লাখ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার সময়ই কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সমস্যার বিষয়টি আমাদের ভাবনার মধ্যে ছিল। এসব ঋণে সার্ভিস চার্জ বেশি এবং ঋণ আদায়ে অনিশ্চয়তার কারণে ব্যাংকগুলো এতে তেমন আগ্রহ দেখায় না। ক্ষুদ্র শিল্প ও নারী উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার আওতায় আনতে প্রয়োজনে পৃথক প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।
মূল প্রবন্ধে অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, দেশে কোভিডের প্রভাব পড়ার শুরুতেই সরকার বিভিন্ন নীতিগত পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে দেশের অর্থনীতি এখন পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।
সংলাপে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে তৈরী পোশাক খাত ছাড়াও দেশের বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানায় কর্মরত বয়স্ক ও স্বল্প শিক্ষিত শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছে। এদেরকে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনা দরকার।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, সংস্থার সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২৯ শতাংশ কারখানা এখনো বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। প্রণোদনা ঋণ বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোর দীর্ঘসূত্রতা একটি বড় সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ও জোরালো মনিটরিং প্রয়োজন।
বিজিএমইয়ের প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশে তৈরী পোশাক রফতানি আদেশ কমেছে এবং তৈরী পোশাকের রফতানি মূল্য কমছে। এমতাবস্থায় তৈরী পোশাক খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রণোদনা সহায়তা চান তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ^ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস মার্সি মিয়াং টেমবোন বক্তব্য রাখেন।


আরো সংবাদ



premium cement