২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশে ফেরা প্রবাসীদের ঋণ দিতে নীতিমালা চূড়ান্ত

-

করোনা সঙ্কটকালে বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরেছেন হাজার হাজার প্রবাসী। এ ছাড়াও চাকরি হারিয়ে বেকার জীবনযাপনকারী কিংবা বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বা অনিয়মিত হয়ে পড়া লাখো বাংলাদেশী দেশে ফেরার অপেক্ষায়। করোনাকালে দেশে ফেরা প্রবাসীদের পুনর্বাসন বা কর্মসংস্থানে ৭০০ কোটি টাকার স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা দেবে সরকার।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি জানিয়েছেন, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ২০০ কোটি টাকা এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আরো ৫০০ কোটি নিয়ে মোট ৭০০ কোটি টাকা ফেরত আসা প্রবাসীদের ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হবে। এ জন্য আমরা নীতিমালাও চূড়ান্ত করেছি। আগামী জুলাই মাস থেকে এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এই ঋণ দেবে। ঋণ দেয়ার আগে তারা এ ব্যাপারে আবেদন আহ্বান করবে। গত মঙ্গলবার রাতে অনলাইনে একটি অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন ।
২০১১ সালে প্রবাসীদের কল্যাণে যাত্রা শুরু হয় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের। বিদেশ যেতে হলে একজন শ্রমিককে নির্ধারিত একটা কল্যাণ ফি দিয়ে যেতে হয়। বর্তমানে কল্যাণ ফি ৩৫০০ টাকা। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে এই টাকা জমা থাকে। প্রবাসীদের কল্যাণে এই বোর্ড কাজ করে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হওয়ার সময় ৩০০ কোটি টাকা এই বোর্ড থেকে দেয়া হয়। প্রবাসফেরত শ্রমিকদের দেশে কর্মসংস্থান এবং কেউ বিদেশে যেতে চাইলে তাকে সহজ শর্তে ঋণ দেয় প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক।
জানা যায়, করোনা সঙ্কট দেখা দেয়ার পর ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে প্রবাসী কর্মীদের খাবার সরবরাহসহ বিভিন্ন সহায়তায় ১১ কোটি টাকা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে যখন বেকার হয়ে পড়া প্রবাসীরা দেশে ফেরা শুরু করেন, তখন দেশে তাদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিদেশফেরতদের দেশে কর্মসংস্থানের ব্যাপারে নীতিমালা প্রণয়ন করে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকা সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এর কিছুদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফেরা প্রবাসীদের পুনর্বাসনে আরো ৫০০ কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দেন।
এখন প্রশ্ন হলো কারা পাবেন এই প্রবাসী ঋণ? কিভাবে, কত টাকা পাবেন? প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, করোনার কারণে গত মার্চ থেকে দেশে ফেরা বৈধ শ্রমিকেরা এই ঋণ পাবেন। এ ছাড়া প্রবাসে যারা করোনায় মারা গেছেন, তাদের স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা এই ঋণ পাবেন। তবে, এ জন্য শ্রমিক হিসেবে যাওয়ার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে হবে। অন্যদিকে অবৈধভাবে বিদেশে গিয়ে দেশে ফেরাদের মধ্যে যারা বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন তারাও এই ঋণ পাবেন। তবে এ জন্য বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর প্রমাণপত্র দিতে হবে। যারা ঋণ নেবেন তাদের কৃষি, মৎস্য বা অন্য কোনো উৎপাদনমুখী প্রকল্প দেখাতে হবে।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, আগামী জুলাই থেকে এই ঋণ দেয়া যাবে। কিন্তু, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ডিএমডি মো: জসিম উদ্দিন এই প্রতিবেদককে বলেন, করোনাকালীন সময়ে এই ঋণ দেয়া সম্ভব হবে না। করোনা শেষ হলে কেউ আবার বিদেশ যেতে চাইবে বা দেশে কিছু করবে-তখন এই ঋণ দেয়া হবে। করোনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদেরই এই ঋণ দেয়া হবে। তখন আবেদন চাওয়া হবে।
তিনি বলেন, এখন তো কেউ আসতে পারবে না, যেতেও পারবে না। আমরাও যেতে পারব না। আর এখন টাকাটা দিলে বিদেশেও যেতে পারবে না, ব্যবসাও করবে না- অন্য খাতে খরচ করে ফেলবে। তাই আমরা করোনা- পরবর্তী এই ঋণ দেবো।


আরো সংবাদ



premium cement