০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সুজনের সংশয়

জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুজনের সংবাদ সম্মেলন : নয়া দিগন্ত -

দলীয় সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে, তাই নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে পরামর্শ দিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরামর্শ দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার।
তিনি বলেন, নির্বাচন হচ্ছে দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়। সাম্প্রতিককালে অনুষ্ঠিত কিছু নির্বাচনে প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ায় প্রশাসন তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রভাবিত হওয়ার ঝুঁকি আরো বেড়ে গেছে। তাই এই ব্যাপারে কমিশনকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে মনে রাখতে হবে, আগামী নির্বাচন হচ্ছে সংসদ বহাল রেখে। এই নির্বাচনে কোনো কোনো প্রার্থী মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যের অবস্থান থেকে ভোট চাইবেন। আবার কেউ কেউ ভোট চাইবেন সাধারণ প্রার্থীর অবস্থান থেকে। তাই সতর্ক থাকতে হবে মন্ত্রী বা সংসদ সদস্যরা যেন নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে মেনে চলেন এবং যেন পদের প্রভাব দেখাতে না পারেন।
তিনি আরো বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার মূল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তাই সতর্ক থাকতে হবে যেন সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনের মতো নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। ইসিকে আইনি ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে নৈতিকতা ও সাহসিকতার সাথে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা দৃষ্টিগোচর হলে, অভিযোগ দায়েরের অপেক্ষা না করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি কোনো অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ত থাকার সুযোগ নেই।
সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে বলা যায় রোল মডেল। নির্বাচন কমিশনের হাত লম্বা। তারা চাইলে করতে পারে। তারা সাংবিধানিক পদে নিয়োজিত, সুষ্ঠু নির্বাচন করা তাদের দায়িত্ব। এই নির্বাচন আগের মতোই দলীয় সরকারের অধীনে হচ্ছে। সরকার মানে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দলীয় সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে, তখন দেখা গেছে, যে সরকার ক্ষমতায় ছিল তারাই আবার ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। সেসব নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। সংশয়ের বিষয় হলো এই নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হচ্ছে, তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সুজন সম্পাদক বলেন, আমরা সবাই চাই একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। সংশয় যেন অমূলক হয় সে জন্যই আমরা নির্বাচন কমিশনকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করব, নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে, কঠোরভাবে পালন করবে। নির্বাচন কমিশনের হাত অনেক লম্বা। তারা চাইলে আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়া সম্ভব।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে প্রায় ১২ হাজারের মতো মনোনয়নপ্রত্যাশী নিজ নিজ দল থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এবার যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. বদিউল আলম বলেন, অবশ্যই। প্রার্থীর সংখ্যা যত বেশি হবে, ততই যোগ্য প্রার্থী পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। আমরা নিশ্চিত ১২ হাজারের মধ্য থেকে ৩০০ আসনে হাজারখানেক যোগ্য প্রার্থী পাবো। তবে দলগুলোর প্রতি আহ্বান, যারা অবাঞ্ছিত তারা যেন মনোনয়ন না পান।
এই নির্বাচনটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া অত্যন্ত জরুরি। যদি বিতর্কিত নির্বাচন হয়, তাহলে তরুণরা আশাহত হতে পারেন, বিপথগামী হতে পারেন এবং গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাহীন হয়ে যেতে পারেন। সে জন্যই এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
সুজন সম্পাদক আরো বলেন, অতীতের রেকর্ড দেখলে প্রতীয়মান হবে যে দলীয় সরকারের অধীনে যখনই কোনো নির্বাচন হয়েছে, তাতে ক্ষমতাসীনরাই আবার বিজয়ী হয়েছে। যেহেতু সংসদ বহাল আছে, তা ছাড়া অনেক সংসদ সদস্যই স্থানীয়ভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই তারা যেন ভোটের ফলাফল অযাচিতভাবে প্রভাবিত না করতে পারেন, সে জন্য ইসিকে সঠিক ভূমিকা রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ইসিকে উদ্দেশ করে বলা হয়, মনোনয়নপত্রের সাথে প্রার্থীর হলফনামা ও আয়কর বিবরণী প্রকাশ এবং তা ওয়েবসাইটে দিতে হবে। নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো সংসদ সদস্য যাতে বিশেষ কোনো সুবিধা না পায় সে দিকে লক্ষ রাখার আহ্বান জানায় সুজন।
সুজন জানায়, নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। তারা কোনো কারসাজির সাথে জড়িত থাকলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে উদ্দেশ করে বলা হয়, গণমাধ্যম হলো ইসির সহায়কশক্তি। গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে তাদেরকে সহায়কশক্তি হিসেবে কাজ করার সুযোগ করে দিতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমুলক করতে সরকার, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও ভোটারদের বিশেষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয় সুজনের পক্ষ থেকে। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সুজন মহানগর ইউনিটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যামেলিয়া চৌধুরী, সুজনের মিডিয়া সমন্বয়কারী শামীমা মুক্তা প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিশ্বে বায়ু দূষণের তালিকায় ঢাকা শীর্ষে মা দিবস উপলক্ষে খালেদা জিয়ার ছবি সম্বলিত পোস্টার লাগালেন রিজভী ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে : অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত সুবর্ণচরে জেলা আ’লীগ সভাপতিকে হারিয়ে এমপির ছেলে বিজয়ী আমস্টারডামে গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ মার্কিন বোমায় মারা গেছে ফিলিস্তিনিরা : বাইডেন জামালপুরের বিজন কুমার চন্দ চেয়ারম্যান নির্বাচিত জুড়ীতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী যারা যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সাম্রাজ্যের অনুসন্ধান চেয়ে রিট পিরোজপুরের ৩ উপজেলায় বিজয়ী হলেন যারা

সকল