বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতা রয়েছে। জনগণের মধ্যেও আস্থাহীনতা দেখা যাচ্ছে। ফলে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে অনেকে মনে করেন। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে আস্থার সঙ্কট রয়েছে বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। আবার নির্বাচনে হেরে গেলে ফলাফল মেনে না নেয়ার প্রবণতাও রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। তা ছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো যে ইশতেহার ঘোষণা করে তার সাথে বাস্তবায়নের ব্যাপক ফারাক রয়েছে। টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নিয়োগ দেয়া এবং সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে এমপিদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত।
ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার বিষয়ক একটি রিপোর্ট প্রকাশের জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে প্রতিবেদন তুলে ধরেন টিআইবির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহজাদা এম আকরাম।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে কি না-তা নিয়ে সবার মধ্য সংশয় আছে। তবে তার মানে এই নয় যে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। টিআইবি মনে করে, দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব, যদি রাজনৈতিক দল ও অন্য স্টেকহোল্ডাররা সহায়ক ভূমিকা পালন করে এবং পর্যবেক্ষকেরা সক্রিয় হয়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে ইশতেহার প্রকাশে যতটা আগ্রহী থাকে, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ইশতেহার বাস্তবায়নে ততটা আগ্রহী থাকে না।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে রাষ্ট্রের সাথে ব্যবসায়-বানিজ্য করা অনৈতিক। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে দলীয়করণ এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। রহিত করতে হবে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা। সংস্কার কার্যক্রমকে শুধু কাগুজে দেখা যায়, বাস্তবায়ন দৃষ্টিতে আসছে না। অনেক ক্ষেত্রে দ্বিমুখী নীতি দেখা যায়। এক দিকে তথ্য অধিকার আইন করা হয়েছে, অন্য দিকে সেটিকে প্রতিরোধ করারও পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দলের অঙ্গীকার থাকলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে।
টিআইবির রিপোর্টে বলা হয়, সরকার গঠনকারী প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে পূর্ববর্তী নির্বাচনে দেয়া অঙ্গীকার কতটুকু পূরণ করছে সে সম্পর্কে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে। সংসদে আত্মপরিচয়ে সঙ্কটাপন্ন বিরোধীদলীয় সংস্কৃতি দেখা যায় বলে রিপোর্টে উঠে আসে। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্তির জন্য টিআইবি ছয়টি ক্যাটাগরিতে ৩০টির বেশি সুপারিশ পেশ করে। সুপারিশগুলোর অন্যতম হচ্ছে- সংসদে সরকারি দলের একচ্ছত্র ভূমিকা নিরুৎসাহিত করতে দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান ও সংসদ নেতা একই ব্যক্তি না হওয়া; বিরোধী দলকে সংসদীয় কার্যক্রমে আরো বেশি সুযোগ দেয়া; ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নিয়োগ দেয়া; সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে এমপিদের স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি; এমন কোনো আইন সংস্কার না করা যা দুদকের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা খর্ব করে এবং জাতীয় বাজেটে কালোটাকাকে বৈধতা না দেয়া।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা