২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিয়ে ছাড়াই সন্তান, ফেলে দেয়া নবজাতক ফের মায়ের কোলে

বিয়ে ছাড়াই সন্তান, ফেলে দেয়া নবজাতককে উদ্ধার করে করেছে পুলিশ - ছবি- সংগৃহীত

এক দিন বয়সী ফুটফুটে বাচ্চাটিকে তার কিশোরী মা লোকলজ্জায় রাতের কোনো একসময়ে ফেলে দিয়েছিল। বিয়ের আগেই সন্তান জন্ম দেয়া সমাজে সম্মানের যে হানি না হয়- এ কারণে এই হৃদয়বিদারক কাজটি করে কিশোরী মা। কিন্তু চাইলেও সবকিছু গোপন রাখা যায় না। নবজাতক শিশুটির কান্না শুনে স্থানীয় ইউপি সদস্য ৯৯৯-নম্বরে ফোন দেন। ফোন পেয়ে সেখানে হাজির পুলিশ। সোমবার রাতে নবজাতককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ সদস্যরা।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার দুপুরে নবজাতককে সুস্থ অবস্থায় তার মায়ের কাছে দিয়েছে।

এই ঘটনাটি ঘটেছে যশোর উপশহরের কলাবাগান এলাকায়। যশোর উপশহর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খায়রুল বাশার বলেন, সোমবার রাত ১০টার দিকে খবর পাই, কলাবাগান এলাকায় একটি বাড়ির বাথরুমের পেছনে একটি গলির ভেতরে মানবশিশুর কান্না শোনা যাচ্ছে। পরে সেখানে একটি শিশুকে পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।

খবর পেয়ে উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাইফুল মালেক ঘটনাস্থলে যান। এরপর নবজাতককে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।

এসআই সাইফুল মালেক বলেন, ‘ফুটফুটে নবজাতককে দেখে খুব মায়া করছিল। উদ্ধারের সময় শিশুটির শরীরে ডেইয়োর (পিঁপড়াজাতীয় বিষাক্ত প্রাণী) কামড়ের চিহ্ন ছিল। এরপর এটি কার সন্তান- সেই সূত্র বের করতে সারারাত অভিযান চালাই। পরে শিশুর মা ও বাবাকে (তাদের বিয়ে হয়নি) শনাক্ত করে দু’জনকেই আটক করি।’

কিশোরী মা পুলিশকে জানিয়েছে, সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। কয়েক বছর ধরে বাঘারপাড়া উপজেলার ছোটখুদড়া এলাকার এক যুবকের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক চলছে। একপর্যায়ে তা শারীরিক সম্পর্কে রূপ নেয়। ফলে সে সন্তানসম্ভবা হয়। রোববার রাতে সে সন্তান প্রসব করে।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা: আরিফ আহমেদ বলেন, ‘শিশু ও তার মায়ের আলট্রাসনো করা হয়েছে। এছাড়া ডিএনএ পরীক্ষার জন্যে উভয়ের চুল, রক্ত, নখ ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। আদালত চাইলে আমরা রিপোর্ট পেশ করবো।’

যশোর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: তাজুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি সন্তানসম্ভবা হয়ে যাওয়ার পর প্রেমিক তাকে গ্রহণ করতে চায়নি, বিয়েতেও অস্বীকার করে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে তার (ছেলেটির) বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে মেয়েটি ও তার প্রেমিককে আদালতে হাজির করা হয়।

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এসআই খায়রুজ্জামান বলেন, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহাদী হাসান মেয়েটিকে তার বাবার জিম্মায় ও তার প্রেমিককে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement