২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খুলনায় দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে করোনা পরিস্থিতি

-

অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত থাকা খুলনা মহানগরী ও জেলায় হঠাৎ উর্ধ্বমুখীহারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জটিল আকার ধারণ করছে করোনা পরিস্থিতি। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে দ্বিগুন হয়েছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এভাবে বাড়তে থাকলে সামনে ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলে আশঙ্কা করেছেন করোনা প্রতিরোধ কমিটি ও স্থানীয় নাগরিক নেতারা।

সিভিল সার্জন ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ এপ্রিল খুলনায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। গত ২৮ মে পর্যন্ত ৪৬ দিনে খুলনায় করোনা রোগী ছিল ৬৪ জন। পরের সংখ্যাগুলো খুব দ্রুত পাল্টেছে। খুলনা মহাগনরী ও জেলায় গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ১২০ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মহানগরীতে ৬০, দিঘলিয়া ২৪, রূপসায় ১২, ডুমুরিয়ায় ৭, দাকোপে ৬, বটিয়াঘাটা ৩, তেরখাদায় ৩, ফুলতলায় ২, পাইকগাছায় ১ ও কয়রা উপজেলায় ২ জন রয়েছেন। আর করোনায় মারা গেছেন চারজন। যার মধ্যে রূপসায় তিন ও দিঘলিয়ায় একজন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩৮ জন। পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন ২৩ জন।

সরেজমিন নগরীর ডাকবাংলা, ময়লাপোতা, দৌলতপুর, খালিশপুর এলাকায় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে মানুষের অবাধ যাতায়াত দেখা যায়। কয়েকটি স্থানে যানজটেও পড়তে হয়। এসব জায়গায় কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ব্যবহার করছেন না মাস্ক বা হ্যান্ড গ্লাভস। পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে ভেবেও বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হয়ে আসছেন সাধারণ মানুষ। ফুটপাথ থেকে অলিগলি-কাঁচাবাজার সর্বত্রই যেনো মানুষের ব্যস্ত পদচারণা। এর মধ্যে সড়কে, ব্যাংক-অফিসে জনসমাগম বাড়তে থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে।

খুমেক ( খুলনা মেডিক্যাল কলেজ) পরিচালক ডা. মুন্সি রেজা সেকেন্দার বলেন, নগরীতে বিনা প্রয়োজনে যেভাবে ঘোরাঘুরি বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। প্রতিদিনই ৭ থেকে ৮ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বর্তমানে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৩৮ রোগী ভর্তি আছেন। এভাবে বাড়তে থাকলে নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হবে।

খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহম্মেদ বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় খুলনার পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক) জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, সড়কে অধিকাংশ মানুষই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার ব্যবহার বা সামাজিক দূরত্ব মানছে না। তাদের উদাসীনতার কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, জীবিকার তাগিদে কর্মজীবী মানুষকে বাইরে আসতেই হবে। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা না মানায় খুলনায় গণপরিবহন ও সাতটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাত হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসন। গণপরিবহনে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া রাখায়ও জরিমানা করা হয়।

খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, সীমিত পরিসরে অফিস-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট চালু হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনা প্রতিরোধে আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement