৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে ফেঁসে গেলেন প্রধান শিক্ষক

ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে ফেঁসে গেলেন প্রধান শিক্ষক - প্রতীকী ছবি

নিজের স্কুলের ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে ফেঁসে গিয়েছেন একজন প্রধান শিক্ষক। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম শাহাজান কবির। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের চৌগাছা উপজেলায়। অভিযুক্ত শাহজাহান কবির উপজেলার এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

এই ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফুল আলম তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের এবিসিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজান কবির তার স্কুলের ৮ম ও ৭ম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ান। সেখানে তিনি প্রায়ই ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেয়াসহ বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিলেন। মঙ্গলবার ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রী এবং ৭ম শ্রেণীর এক ছাত্রী একসাথে প্রাইভেট পড়তে আসে। এরপর প্রধান শিক্ষক ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে কৌশলে বাইরে পাঠিয়ে দেন। এরপর রুমের মধ্যে ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী করেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম রফিকুজ্জামান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান ও দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে দেখি। ছাত্রীদের সাথে কথা বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাই। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অন্তত দুই জন ছাত্রীর শরীরে অশ্লীলভাবে হাত দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার পর ছাত্রীরা জোরালোভাবে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেও তিনি(প্রধান শিক্ষক) কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজিব বলেন, খবর পেয়ে আইন শৃঙ্খলা শান্ত রাখতে ঘটনাস্থলে দুইজন পুলিশ অফিসারকে পাঠানো হয়েছিল। তবে এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফুল আলম বলেন, মোবাইল ফোনে অভিযোগ পেয়ে প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শাহাজান কবিরের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন : মোবাইলে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব শিক্ষকের : অতঃপর
নওগাঁ সংবাদদাতা, (১৮ জুলাই ২০১৮)

নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মোবাইলে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর ওই ছাত্রী নিজ মানসম্মান রক্ষা ও এই শিক্ষকের আক্রোশ থেকে বাঁচতে বিদ্যালয় পরিত্যাগের ছাড়পত্র (টিসি) নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তাকে টিসি দেয়া হয়। আর এ ঘটনার পর অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের স্কুলে লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

জানা গেছে, নওগাঁ শহরের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুল। নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরেই তার অবস্থান। দীর্ঘ দিন থেকে সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে সপ্তম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে শিক্ষকের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার পর থেকে অভিভাবকদের মধ্যে তাদের মেয়েদের স্কুলে লেখাপড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আর এভাবে চলতে থাকলে অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের অন্যত্র পড়াশুনা করাবেন বলেও জানা গেছে।


ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, অর্ধবার্ষিকী ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা শেষ করে বাস যোগে বাড়ি যাচ্ছিলাম। একই বাসে শিক্ষক বেলাল হোসেনও ছিলেন। বাসের মধ্যে তার কাছ থেকে স্যার নাম্বার নেন। তবে কখনো তিনি ফোন দেননি। গত শনিবার স্কুল চলাকালে স্যার ফোন করে ইসলাম শিক্ষায় কত পেয়েছি জানতে চান। এরপর ফোন কেটে দেন। ওইদিন রাত ১২টার দিকে স্যার আবার ফোন দেন। বিভিন্ন বাজে কথা বলেন। আমাকে ‘মল্লিকা ইন’ হোটেলেও নিয়ে যেতে চান। আমাকে আবার নাকি চুরি করে নিয়ে যাওয়াসহ কুপ্রস্তাবও দেন। এরপর আবার স্কুলে আসতে বলেন। পরদিন আর ভয়ে স্কুলে আসিনি। বাবাকে বিষয়টি খুলে বলি।

ভুক্তভোগীর বাবা জানান, অবাক করার বিষয় একজন শিক্ষক হয়ে তার ছাত্রীকে এমন কুপ্রস্তাব দিতে পারেন। শিক্ষকের মান গিয়ে দাঁড়াল কোথায়। ছোট মেয়ে ভয়ে গত দু’দিন থেকে আর স্কুলে আসেনি। একজন শিক্ষক রাত ১২টার দিকে কেনই বা ফোন দিবেন। ওই স্কুলে বাচ্চাদের পড়াশুনা করানোই এখন দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যালয় পরিত্যাগের ছাড়পত্র দিয়েই কি সব সমস্যা সমাধান হবে? এর একটা বিহিত হওয়া উচিত।

শিক্ষক বেলাল হোসেনের মোবাইলে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। এক সময় ফোনটি বন্ধ করে দেন। ফলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নওগাঁ সেন্ট্রাল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহাতাফ হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। মেয়ে ও তার অভিভাবক স্কুলে এসেছিলেন। মেয়েও স্কুলে পড়তে চাইছে না। তাকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। স্কুলের কমিটির সদস্যরা আছেন তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশতানজিদা পারভিন জানান, তাকে কেউ বিষয়টি না জানানোর কারণে তার জানা নেই। তবে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement