৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ফেতনা নির্মূল করা ফরজ

-

জিহাদ ইসলামের একটি অন্যতম ফরজ। পবিত্র কুরআন-হাদিসে মুসলমানদের প্রতি জিহাদের আদেশ রয়েছে। রয়েছে জিহাদ না করার ভয়াবহ পরিণাম সম্পর্কে মর্মস্পর্শী বর্ণনা। আখিরাতের জীবনে মুসলমানদের মুক্তির জন্য জিহাদের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। জিহাদ বলতে সাধারণত অস্ত্রধারণ, যুদ্ধ, লড়াই বোঝানো হয়। বস্তুত জিহাদ শব্দের অর্থ ব্যাপক। জিহাদ একটি আরবি শব্দ, জাহদ ধাতু থেকে নির্গত। জাহদ অর্থ দুঃখ-যাতনা ভোগ। দুঃখ-যাতনা সহ্য করে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালানো। জিহাদ শব্দটি একটি ব্যাপক ক্রিয়াপদ। এটা সংঘটিত হওয়ার বিভিন্ন সূত্র ও ক্ষেত্র আছে। সর্ব প্রধান ও সর্বশেষ ক্ষেত্র হচ্ছেÑ অস্ত্রধারণ, যুদ্ধ বা লড়াই, যাতে সীমাহীন দুঃখ-কষ্ট ত্যাগস্বীকার করতে হয়। এমনকি প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাণ বিলিয়ে দিতে হয়। আর জিহাদের পর্যায়কে যথার্থভাবে বোঝানোর জন্য আরবি ভাষায় বিশেষ শব্দ রয়েছে ‘কেতাল’। আল্লাহ তায়ালার প্রভুত্বের বাস্তব ও খাঁটি বিকাশ তথা আল্লাহ পাকের মনোনীত জীবনব্যবস্থা দ্বীন ইসলামের প্রতিষ্ঠা ও উন্নতি এবং ইসলামের নির্ধারিত অনুশাসনগুলো প্রবর্তনের জন্য সারা জাহানকে বাঁধামুক্ত, নিরাপদ ক্ষেত্ররূপে পরিণত করার, কর্তব্য পালনের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিটি সূত্র ও ক্রিয়া জিহাদের অন্তর্ভুক্ত এবং এ ব্যাপক অর্থে জিহাদ মুসলমানদের ওপর ফরজ। যুদ্ধ বা লড়াই জিহাদের একটি অন্যতম বিভাগ, এমনকি সাধারণত জিহাদ শব্দ এই অর্থকেই বোঝায় এবং বিশেষরূপে এই বিভাগটিকে ফরজ প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে কুরআন শরিফের বহু আয়াতে এর অর্থের জন্য আরবি ভাষায় বিশেষ শব্দ কেতাল শব্দের মাধ্যমে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অতএব জিহাদ ধাতুগত অর্থেও ফরজ মনে করেন, আর যারা অস্ত্রধারণকে জিহাদের অন্তর্ভুক্ত না মেনে শুধু অন্যান্য রকমের চেষ্টা-তদবিরকেই জিহাদের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করেছেন, তারা উভয়ই মারাত্মক ভুলে পতিত আছেন। জিহাদ অস্ত্রধারণ অর্থে ফরজ হওয়ার প্রমাণে কুরআন শরিফের বহু আয়াত ও অনেক হাদিস বিদ্যমান আছে।
ইরশাদ হচ্ছেÑ ‘তোমরা অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ ফিতনা সম্পূর্ণারূপে নির্র্মূল না হয়ে আল্লাহর দ্বীন অবশিষ্ট থাকে।’ (সূরা আনফাল : ৩৯)
তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো এবং জেনে রাখো, আল্লাহ তায়ালা সবকিছু শোনেন জানেন।
যারা আখিরাতের চিরস্থায়ী জীবনের পরিবর্তে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনকেই যথাসর্বস্ব মনে করে এটাকে অবলম্বন করে আছে, (আখিরাতের জীবনের জন্য সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি) তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে যারা শহিদ হবে বা জয়ী হবে, অচিরেই তাদের পুরস্কার দান করবেন। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে নবী, আপনি অস্বীকারকারী-মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ চালিয়ে যান এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতা অবলম্বন করুন। তাদের চিরস্থায়ী বাসস্থান জাহান্নাম হবে।’
হে ঈমানদারগণ! তোমরা (প্রথম) স্বীয় সীমান্ত সংলগ্ন অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাও, তারা যেন তাদের মধ্যে কঠোরতা দেখতে পায়।
‘বেরিয়ে পড়ো, অল্প অধিক (যাহা সাধ্য জুটে) সমরসাজে সজ্জিত হয়ে স্বীয় মাল ও জান উৎসর্গ করে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করো। (সূরা তাওবা : ৪১)
আল কুরআনের জিহাদের এসব আয়াতের মর্মদৃষ্টে পাশ্চাত্য ধ্যান-ধারণায় গড়ে ওঠা এক শ্রেণীর মানুষ ইসলামের অপব্যাখ্যা করে থাকেন। সত্য উপলব্ধিতে ব্যর্থ এ শ্রেণীর লোকজন প্রশ্ন করেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলামে মারামারি-লড়াই-ঝগড়া কেন থাকবে। তা ফরজ তথা ইসলামের অপরিহার্য বিধান কেন হবে?
এরূপ শান্তির ধ্বজাধারীদের বোঝা উচিত, ইসলাম বলিষ্ঠ ধর্ম স্বভাবের পটভূমিতে তার প্রতিষ্ঠা। স্বভাব যা আছে, ইসলামেরও তা আছে। সংগ্রামের প্রয়োজনে সংগ্রাম করেই অগ্রসর হতে হয়। জালিমকে বাধা দাও, জুলুমকে বন্ধ করে। ন্যায় ও সত্য আদর্শকে প্রতিষ্ঠার জন্য তরবারি চালাও, মারো, এটা স্বভাব, এটা ইসলামে রয়েছে। ইসলামে যুদ্ধ বা তরবারির স্থান সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য। অন্যায়-অবিচারের যথাযোগ্য প্রতিকারের জন্য, ইসলামী আদর্শ বিস্তারের জন্য। আর এ ক্ষেত্রে সত্যের সাথে শক্তি কতই না সুন্দর। শক্তি ছাড়া সত্য দাঁড়াতে পারে না। আর সত্য-ন্যায় ইনসাফহীন শক্তি জুলুমে পরিণত হয়। তরবারির জোরে বল প্রয়োগে মুসলমান করা ইসলাম অনুমোদন করে না। আর জালিমের জুলুম, কাফির-মুনাফিকদের বিরুদ্ধে কাপুরুষের মতো শুধু ভীরু হৃদয়ের মিনতি ইসলামে নেই।
সত্য ও শক্তি, দ্বীন ও দুনিয়ার চমৎকার মিলনই ইসলামের বৈশিষ্ট্য। ঝঞ্ঝাট-ঝামেলা, জুলুম-জালিমের ভয়ে সন্ন্যাসী সেজে বনে গিয়ে জীবন ধারণ, দাপটের মুখে কাকুতি-মিনিতির সাথে শত্রুর দয়ায় জীবন বাঁচানো ইসলাম পছন্দ করে না। ঈমানের পরিচয়ও নয়। হুজুর সা: বলেন, ‘লা রোহবানিয়াতা ফিল ইসলাম’Ñ বৈরাগ্যবাদ ইসলামে নেই।
ঈমানের পরিচয় হলো সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে এক হাতে কুরআন, আর অন্য হাতে বাতিলের সব বাধা-বিঘœ উপেক্ষা করে সত্য-ন্যায়কে প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
জিহাদের বিভিন্ন রূপক অর্থ ও আকৃতি সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচার-প্রসার হওয়ার ফলে জিহাদের ইসলামী পারিভাষিক অর্থ আকৃতি সর্বসাধারণের ধ্যান-ধারণা থেকে ক্রমাগত বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। এমনকি সমাজে দ্বীনি শিক্ষাদানের কাজে যারা নিয়োজিত, তাদের স্মরণ হতেও জিহাদের প্রকৃত তাৎপর্য লুপ্তপ্রায়। সর্বদা আলোচনায় রূপক অর্থের ছড়াছড়ি। বুখারি, মুসলিম শরিফসহ সিয়াহ ছিত্তাহর হাদিস গ্রন্থের মধ্যে কিতাবুল জিহাদ তথা জিহাদ অধ্যায় বলার মধ্যে জিহাদের যে গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্যবহ অর্থ রয়েছেÑ এটাই জিহাদের পারিভাষিক অর্থ। দ্বীনের শিক্ষাদান, দ্বীনের প্রচার অনেক আমলই জিহাদের রূপক অর্থের আওতাভুক্ত। এতে জিহাদের সওয়াবও হাসিল করা যায়। কিন্তু এই অর্থ আর জিহাদের পারিভাষিক অর্থ উভয়ের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। যেমনÑ সূরা ইখলাছ তিনবার তিলাওয়াত করলে এক খতম কুরআন শরিফ তিলাওয়াতের সওয়াব পাওয়া যায়।
তবে ৩০ পারা কুরআন খতমের সওয়াবের মধ্যে ব্যবধান তো নিশ্চয়ই রয়েছে। উল্লিখিত দুই অর্থে জিহাদের মধ্যে পরোক্ষ অংশগ্রহণ আর প্রত্যক্ষ ময়দানে নিয়োজিত থাকার মধ্যে মর্যাদা, তাৎপর্য ও সওয়াবের পার্থক্য আছে।
অতঃপর লক্ষণীয় বিষয় এই, দ্বীন ইসলাম শুধু গুটিকয়েক ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া-প্রার্থনা, জিকির-আশকারজাতীয় কার্য ও অনুষ্ঠানাদির নাম তথা সন্ন্যাস-বৈরাগ্যবাদের ধর্ম দ্বীন ইসলাম নয়। বরং ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি মানব জীবনের প্রতিটি স্তর ও পদক্ষেপকেই ইসলাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দ্বীন ইসলামের মধ্যে ইবাদত-বন্দেগির সাথে স্বতন্ত্র সমাজব্যবস্থা, অর্থব্যবস্থা, পারিবারিকব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা রয়েছে এবং আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ শাসনতন্ত্র রয়েছে, যাকে আল্লাহ তায়ালার সৃষ্ট বিশ্বে চালু করতে হবে।
মুসলিম শরিফ দ্বিতীয় খণ্ড ৮২ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণিত একটি হাদিস লক্ষণীয়। হজরত মুহাম্মদ সা: কোথাও কোনো সৈন্যবাহিনী পরিচালিত করলে সে বাহিনীর অধিনায়ককে বিশেষ রূপে কিছু বিষয়ে নির্দেশ দিতেন।
সবসময় আল্লাহর ভয় জাগ্রত রাখবে। সাথীদের সুখ-শান্তির প্রতি নজর রাখবে। আল্লাহর নামে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে। আল্লাহর বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। জিহাদের ময়দানে যে ধনসম্পদ অধিকারে আসবে, তা আত্মসাৎ করবে না। শত্রুদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না। শিশু, নারী বা দুনিয়ার সংশ্রববিহীন সাধু-সন্ন্যাসীদের হত্যা করবে না।
অস্বীকারকারী, মুশরিক শত্রুদের প্রতি অস্ত্রধারণ করার আগে তিনটি বিষয়ের যেকোনো একটি বিষয়ে সুযোগ প্রদান করবে।
তাদেরকে ইসলামের দিকে আকুল আহ্বান জানাবে। যদি তারা সে আহ্বানে সাড়া দেয়, তাবে তাদের পক্ষে ইসলামকে গ্রহণীয় গণ্য করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তবে তাদের জিজিয়া তথা ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ট্যাক্স আদায়ের আদেশ দিবে। যদি সে আদেশ তারা মেনে নেয়, তবে তাদের সে আনুগত্য গ্রহণীয় গণ্য করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না। যদি তারা ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়, তবে আল্লাহ তায়ালার সাহায্য প্রার্থনাপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
এসব শিক্ষা ও আদর্শের প্রতি লক্ষ করলে বোঝা যায়, জিহাদ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি সংস্কারমূলক ব্যবস্থা। একমাত্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে জিহাদের বিধান প্রবর্তিত হয়েছে। এর ফলে আশ্চর্যজনক ইতিহাসের সৃষ্টি হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সা:-এর দীর্ঘ ১০ বছরের জীবনে ছোট-বড় প্রায় ১০০ যুদ্ধ পরিচালিত হয়। তার মধ্যে প্রসিদ্ধ যুদ্ধের সংখ্যা প্রায় ২৭টি। মহানবী সা:-এর সারাজীবনের সব যুদ্ধে মুসলিম ও কাফির মিলে প্রায় এক হাজার ১৮ জন মানুষ নিহত হয়েছে। যে আরব দেশে প্রতি মাসে সহস্রাধিক মানুষ মারামারি করে খুন হতো, সে দেশে মাত্র সহস্র মানুষের জীবনের বিনিময়ে বিশ্বব্যাপী চিরস্থায়ী শান্তির ব্যবস্থা হয়। তিনি মদিনাতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্বনবী সা: যুদ্ধের ময়দানে এমন একজন সেনাপতি ছিলেন, তিনি যুদ্ধ করেছেন সম্পদ লাভের জন্য নয়, সম্পদ সমবণ্টনের জন্য। তিনি যুদ্ধ করেছেন শুধু রাজ্য বিস্তারের জন্য নয়, কল্যাণ বিস্তারের জন্য। তিনি যুদ্ধ করেছেন সন্ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য নয়, পৃথিবী থেকে সন্ত্রাস দূর করার জন্য। তিনি যুদ্ধ করেছেন আত্মপ্রতিষ্ঠার জন্য নয়, হক প্রতিষ্ঠার জন্য। তিনি যুদ্ধ করেছেন মানুষের বিরুদ্ধে নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে।
মহানবী সা: বলেছেনÑ ‘আল্লাহ তায়ালার রাস্তায় মুজাহিদের তুলনা ওইরূপ রোজাদার, নামাজে দণ্ডায়মান তিলাওয়াতকারীর ন্যায়, যে তার রোজা বা নামাজ আদায়ে বিন্দুমাত্র ক্লান্তি প্রকাশ করে না। যতক্ষণ না সে গৃহে প্রত্যাবর্তন করে।’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত পৃষ্ঠা ৩২৯)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: রাসূলুল্লাহ সা: থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ সা: মক্কা বিজয়ের দিন বললেন, ‘মক্কা বিজয়ের পর আর হিজরত নেই। অবশ্য জিহাদ ও নিয়তের বিধান বজায় রইল। আর তোমাদের যখনই জিহাদে গমনের জন্য (রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে) আহ্বান করা হবে, তখনই তোমরা তার জন্য বের হবে।’ (বুখারি মুসলিম, মিশকাত পৃষ্ঠা ৩৩০)
রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আল্লাহর কালেমাকে উঁচু করার জিহাদই জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ বলে গণ্য হবে।’ (বুখারি ও মসুলিম থেকে মিশকাত)
নবী সা: বলেছেন, ‘যে বান্দার পা দু’টিতে আল্লাহর রাস্তায় গিয়ে ধুলা লাগবে, অতঃপর ওই বান্দাকে দোজখ স্পর্শ করবে, এটা কখনো হতে পারে না।’ (বুখারি থেকে মিশকাত)
হুজুুর সা: আরো বলেছেন, ‘তোমাদের জান-মাল ও মুখ দ্বারা (অর্থাৎ সব রকম শক্তি দ্বারা) তোমরা মুশরিকদের সাথে জিহাদ করো।’ (আবু দাউদ, নাসায়ি ও দারিমি থেকে মিশকাত)
নবী সা: আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জিহাদ না করে অথবা অন্তরে জিহাদের নিয়ত ও অনুপ্রেরণা না রেখে মৃত্যুবরণ করে, সে এক প্রকার মুনাফিকের মৃত্যুবরণ করে।’ (মুসলিম থেকে মিশকাত)
নবী সা: আরো বলেছেন, ‘আমার উম্মতের একটি দল সর্বদায় হকের ওপর কায়েম থেকে জিহাদরত থাকবে এবং ওই সব লোকের ওপর বিজয়ী হয়ে থাকবে, যারা তাদের বিরোধিতা করবে। অবশেষে তাদের সর্বশেষ দলটি মাসিহ দাজ্জালের সাথে মোকাবেলা করবে।’ (আবু দাউদ থেকে মিশকাত)।
বর্তমান যুগের তথাকথিত সভ্যতার দাবিদারদের আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের লাখ লাখ মানুষ মারা যায়। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা এমনকি শিশুরাও রক্ষা পায় না। দেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়। যুগ যুগান্তর পর্যন্ত একটি জাতি বা সভ্যতার ওপর নেমে আসে বিভীষিকাপূর্ণ পরিস্থিতি। এ পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী তথাকথিত সভ্য মানুষেরা জিহাদকে চোখের কাটা রূপে দেখবে এবং দোষারোপ করবে তাতে বিস্ময়ের কিছুই নেই। বস্তুত এটি তাদের হিংসাত্মক কার্যের মাপকাঠিতে সংস্কারমূলক কাজকে পরিমাপ করার পরিণতি। অপ্রিয় হলেও সত্য, জিহাদই বর্তমান বিশ্বের মজলুম মানুষের মুক্তির পথ দেখাতে পারে। তাই আজ সময়ের দাবি হলোÑ অস্বীকারকারী ও মুশরিকদের বিরুদ্ধে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করা। জিহাদে অবতীর্ণ হওয়া।
লেখক : মাদরাসা শিক্ষক


আরো সংবাদ



premium cement