২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


অটিজমের প্রাথমিক লক্ষণ

-

‘অটিজম’ রোগটি নির্ধারণের জন্য কিছু লক্ষণ মিলতে হয়। তারপরই শুরু হয় চিকিৎসা। তবে বর্তমানে চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু চিহ্ন বা লক্ষণ আছে, যেগুলো অসুখটি প্রকট হওয়ার আগেই ধারণা দেবে যে, শিশুটির অটিজম হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এরকম পাঁচটি চিহ্নকে বলা হয় ‘অটিজমের লাল-নিশানা চিহ্ন’ (জঊউ ঋখঅএঝ ভড়ৎ অটঞওঝগ)। ‘লাল’ বিপদের রঙ। লাল নিশানা দেখে সতর্ক হতে হবে, সামনে বিপদ আসতে পারে।
প্রথম চিহ্ন : একটি স্বাভাবিক শিশু জন্মের তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ‘কু-কু’ (আভিধানিক অর্থ পাখির কিচিরমিচিরের মতো শব্দ) জাতীয় ধ্বনি তৈরি করে, যা পরবর্তীতে ‘বা-বা’ জাতীয় ধ্বনিতে পরিণত হয়। কোনো শিশুর ১২ মাস হয়ে গেছে, অথচ ‘কু-কু’, কিংবা ‘বা-বা’ ধ্বনি করে না, তখন দুশ্চিন্তার কারণ আছে।
দ্বিতীয় চিহ্ন : আপনি একটি শিশুর সাথে খেলনা দিয়ে খেলছেন, নানান মজার অঙ্গভঙ্গি করছেন। শিশুটি আপনার হাত থেকে খেলনা নিচ্ছে, আবার দিচ্ছে। আবার কোনো বিশেষ বস্তুর প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন, সেও তাকাচ্ছে (যেমন- এই যে দেখো সুন্দর পুতুল, ইত্যাদি)। একটি সাত থেকে ১০ মাসের শিশুর এমন অঙ্গভঙ্গির খেলা রপ্ত করতে পারার কথা। কিন্তু ১২ মাস হয়ে গেছে, কিন্তু এসব খেলায় তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, তাহলে সতর্ক হোন।
তৃতীয় চিহ্ন : নতুন শব্দ উচ্চারণ শিখছে এমন শিশুর মাকে আমরা জিজ্ঞেস করি, বাবু যে ‘বা-বা’ করছে, এটি কি শুধু বাবাকে দেখেই, নাকি অন্যদের দেখেও এই শব্দ করে। সাধারণত ৯-১০ মাসের শিশু ‘বুঝে’ বাবা, ডাডা, মামা জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করে। ভয় হচ্ছে তখন, যখন ১৬ মাস হয়ে গেছে, অথচ শিশু অর্থপূর্ণ একটি শব্দও বলছে না।
চতুর্থ চিহ্ন : স্বাভাবিকভাবে ১৮ থেকে ২০ মাস বয়স হলে শিশু দু’টি শব্দ জোড়া দিয়ে কথা বলতে শিখে। যেমন- ভাত দাও, মা মাম, এটা নাক ইত্যাদি। অটিজমের সম্ভাবনা আছে এমন শিশুর ক্ষেত্রে দু’টি জিনিস হতে পারে, হয়। ২৪ মাস হয়ে গেছে অথচ সে শব্দ জোড়া দিয়ে কথা বলছে না। অথবা, অন্য কারো থেকে শোনা একই কথা বারবার আওড়াচ্ছে।
পঞ্চম চিহ্ন : যেকোনো শিশুর বিকাশের কয়েকটি ক্ষেত্র (উঙগঅওঘ) আছে। যেমন- পেশির সক্ষমতা, কথা বলা, ভাষাজ্ঞান, চোখে দেখা, কানে শোনা, সামাজিক কিংবা আবেগীয় বা ব্যবহারগত সক্ষমতা অর্জন প্রভৃতি। কোনো শিশু তার বয়সের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিকাশের সক্ষমতা অর্জন করেছিল কিন্তু এখন ভুলে যাচ্ছে বা পিছিয়ে পড়ছে, তাহলে এটি খুবই ভয়ের কথা। এটি শুধু অটিজম নয়, স্নায়ুতন্ত্রের অন্য অসুখের জন্যও হতে পারে।
শিশুর যদি অন্তত একটি ‘লাল-নিশানা চিহ্ন’ও ধরা পড়ে, তাহলে উপযুক্ত বিকাশকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। তখন চিকিৎসক শিশুকে দেখে জানাবেন, তার অন্য কোনো সমস্যা আছে কি না এবং কোনো পরীক্ষা লাগবে কি না।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, আইসিএমএইচ, মাতুইয়াল, ঢাকা। ০১৯১২২৪২১৬৮।


আরো সংবাদ



premium cement