২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সময় মাত্র একদিন

১৫ লাখ টাকা না দিলে লিবিয়ায় বাংলাদেশী যুবককে হত্যার হুমকি

-

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের টিটুল মিয়ার একমাত্র ছেলে সাকিল মিয়া (২৪) দালালের খপ্পরে বিদেশে যেয়ে এখন চক্রের হাতে জিম্মি। আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে মুক্তিপণের ১৫ লাখ টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে জিম্মিকারীরা। এ অবস্থায় তার পরিবার এখন দিশেহারা। সামান্য কৃষক পরিবারের এই সন্তানকে মুক্ত করার জন্য বাবার পক্ষে এত টাকা দেয়া কোনোভাবেই সম্ভব না বলে তারা অজানা শঙ্কায় এখন দিশেহারা ।
টিটুল মিয়ার পরিবার জানায়, একই গ্রামের মুকুল ঠাকুর নামে এক দালালের প্রলোভনে জমি বিক্রি ও ধার-দেনা করে ১২ লাখ টাকা গুছিয়ে তারা সাকিলকে বিদেশে পাঠান। কিন্তু দুই মাস না যেতেই এখন তাদের কাছে আরো ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছে। ইমোতে সাকিলকে নির্যাতনের কল রেকর্ড শুনিয়ে বলা হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই টাকা তুলে দিতে। সাকিলের বড় বোন বৃষ্টি আক্তার বলেন, তারা এক ভাই এক বোন। তার বিয়ে হয়ে গেছে আগেই। একমাত্র ভাইকে বিদেশে পাঠানোর জন্য তার বাবা একই গ্রামের মুকুল ঠাকুরের হাতে ১২ লাখ টাকা তুলে দেন। গত ৪ জানুয়ারি প্রথমে সাকিলকে সড়কপথে ভারতে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে বিমানযোগে দুবাই হয়ে ১৪ জানুয়ারি লিবিয়ায় নিয়ে যায়। এরপর লিবিয়ায় একটি ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল তখন কয়েক দিন স্বাভাবিক কথাবার্তাও হয়েছে তাদের সাথে।
কিন্তু গত ১২ দিন আগে বাবার মোবাইল ফোনের ইমোতে একটি কল আসে। তখন ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে সাকিল হাউমাউ করে বলে, তার ওপর অমানষিকভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এমনকি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে রেখেছে। আর্তনাদ করে বলে-‘আব্বা আরো ১৫ লাখ টাকা দিতেই হবে, নইলে ওরা আমাকে মাইরা ফেলবে!’ তিনি বলেন, নির্যাতনকারীরা বাংলা ভাষাতেই কথা বলেছেন। এখন তারা মুক্তিপণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দাবি করছে।
বাবা টিটুল মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি এত টাকা কোথায় পাব? শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ১২ লাখ টাকা জোগাড় করছি। সেই টাকা আগেই মুকুল ঠাকুরের হাতে তুলে দিছি। এখন আমি কী করব?’
এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আনিছুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। এখন তাকে উদ্ধারের জন্য পরিবার চাইলে করা হবে। ঢাকায় দূতাবাসে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হবে। ‘ওই পরিবার যদি অভিযোগ দেয়, তাহলে দালালচক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান জানান, এ ধরনের কোনো অভিযোগ এখনো পাননি। তবে ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। ‘মুকুল ঠাকুরের নামে মানবপাচারের কোনো মামলা আছে কি না, আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement