৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫
`


কাজে আসেনি সয়ামিল রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত

গোশত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষ

-

পোলট্রি মুরগির দাম বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে সয়ামিল রফতানি বন্ধের দাবি জানায় সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীরা। স্বল্প আয়ের মানুষের আমিষের চাহিদা বিবেচনায় ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে নেয় সরকার। এর পরেও পোলট্রি মুরগির দাম কমছেই না। দুই মাস আগে যে মুরগি ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেটি এখন কিনতে হচ্ছে ১৯০ টাকায়। ফলে স্বল্প আয়ের মানুষের আমিষের চাহিদা মেটানোর প্রধান উৎস পোলট্রি মুরগি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পোলট্রি মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে ১৮০ টাকা কেজির মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। একই পরিমাণ বেড়েছে সোনালী মুরগির দাম। ৩২০ টাকা কেজির মুরগির বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকা কেজি দরে।
সকালে বাসাবো বাজারে এসেছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আরিফ। মুরগির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাচ্চারা গোশত খেতে পছন্দ করে। কিন্তু গরু বা খাসির গোশত কেনার মতো সামর্থ্য নেই। তাই পোলট্রি মুরগিই আমার ভরসার জায়গা। এখন এই মুরগির দামও যেভাবে বাড়ছে তাতে সেটাও মনে হয় আর খাওয়াতে পারব না। মুরগির পাশাপাশি বেড়েছে দু-একটি সবজির দাম। বাকি সবজিগুলোর দাম রয়েছে অপরিবর্তিত।
শীতের আগাম সবজি শিম গত সপ্তাহের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। এ ছাড়া করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়সের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে, বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এ ছাড়া কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মুলাশাকের আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমিশাকের আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চায়না গাজর প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, চাল কুমড়া পিস ৪০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা ও পেঁপের কেজি ২০ টাকা। বাজারে আলুর দাম বিক্রি হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা কেজি। এ দিকে বাজারে গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এ ছাড়া শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, রসুনের কেজি ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। চায়না আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। কাঁচা হলুদের কেজি ১৬০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। দেশী ডালপ্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।
বাজারে অপরিবর্তিত আছে ডিমের দাম। লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা। সোনালী (কক) মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।
ক্রেতাদের অভিযোগ, মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছে। পেঁয়াজের দামের ওঠানামা বিষয়টি স্পষ্ট করেছে। কোনো কারণ ছাড়াই পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা হয়ে গিয়েছিল। সরকার শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতেই এখন ৬০ টাকা কেজি হয়ে গেছে। এটা কিভাবে স্বাভাবিক হতে পারে। আসলে বাজারে কারো কোনো নজরদারি নেই, যার সুযোগ নিচ্ছে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা।
এ দিকে গত সপ্তাহে কেজিতে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজের কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় নেমে আসে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে আরো ৫ টাকা কমে এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও গোশতের দাম। গরুর গোশত এখনো ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির গোশত ৮৫০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজারে সবচেয়ে সস্তায় মিলছে পাঙ্গাশ মাছ। ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে চলছে বেচাবিক্রি। এ ছাড়া তেলাপিয়া ১৪০-১৫০, রুই ছোট ২২০, রুই বড় ২৮০ থেকে ৩৫০, পাবদা ৪০০-৫০০, চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৮০০ এবং শিং মাছ ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। চাষের ট্যাংরা মাছ ৪৬০ টাকা কেজি।


আরো সংবাদ



premium cement