০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নেই দুধের ছিটেফোঁটাও

পোড়া তেল আর পাম অয়েল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘি

-

নেই দুধের ছিটেফোঁটাও। পোড়া তেল আর পাম অয়েলের সাথে বিষাক্ত রঙ মিশিয়ে বানানো হচ্ছে ঘি। পরে তা প্রাণ, আড়ং-এর মতো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কৌটায় ভরে বিক্রি করা হচ্ছে দেদার। গতকাল রাজধানীর পুরান ঢাকার বেগমবাজারে ভেজাল ঘি কারখানায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কারখানার মালিক আব্দুল সামাদ (৭৫), রবিউল ইসলাম (৪৩), শাহজাহান (২৪) ও সোহাগ হোসেন (৩১)। এ সময় ওই কারখানা থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় পাঁচ মণ ভেজাল ঘি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অভিযানসংশ্লিষ্টরা। একই অপরাধে কারখানার মালিক আব্দুস সামাদ চার বছর আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। গোয়েন্দারা জানান, এক দশক ধরে ঘিয়ের নামে বিষাক্ত এই পণ্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে আসছে গ্রেফতারকৃতরা।
জানা গেছে, ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় নামী-দামি সব ব্র্যান্ডের ফেলে দেয়া হয় কৌটা। এরপর সেই কৌটায় লেবেল লাগিয়ে তার ভেতরে ভরা হয় সেই ভেজাল ঘি। দেখে বোঝার উপায় নেই আসল না নকল।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভেজাল ঘি’র কারখানাটিতে নেই দুধের ছিটেফোঁটাও। রয়েছে হাঁড়িভর্তি পোড়া তেল আর পাম অয়েল। তার উপরেও জমেছে ময়লার আস্তর। পোড়া তেলের সাথে পাম অয়েল মিশিয়ে জ্বাল দেয়ার পর মেশানো হয় ঘিয়ের ফ্লেভার। এরপর তার সাথে শিমুল তুলার বিচি থেকে বানানো এক ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক মিশিয়ে আনা হয় ঘিয়ের রঙ। এভাবেই গত ১০ বছর ধরে পুরান ঢাকার বেগমবাজারের এই কারখানায় বানানো হচ্ছে ভেজাল ঘি।
কারখানার এক কর্মচারী জানান, তাদের তৈরি ঘি’য়ে কোনো দুধ নেই। তেল আর ডালডা থেকে বানানো হয় এই নকল ঘি। যারা এই কারখানা থেকে ঘি নিচ্ছে তারাই সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে নামী-দামি ব্র্যান্ডের ঘিয়ের কৌটা। আর সে কৌটাগুলো খুলে তার ভেতর নকল ঘি ঢুকিয়ে প্যাকেজিং করার কাজই করেন এই কর্মচারী।
আটক কারখানা মালিক আব্দুস সামাদ জানান, তেল আর পাম অয়েলের সাথে শিমুল দানার রঙ ও ঘিয়ের ফ্লেভার মিশিয়েই তৈরি করা হচ্ছে ঘি।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবির লালবাগ বিভাগের ডিসি রাজিব আল মাসুদ বলেন, বাঘাবাড়ী, মিল্ক ভিটা, প্রাণ, আড়ংয়ের মতো নামী-দামি ব্র্যান্ডের ইনটেক প্যাকেট করা ঘি আসল ঘিয়ের সাথে মিলিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এসব ঘি দেখে বোঝার উপায়ও নেই কোনটি আসল আর কোনটি নকল। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement