২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গুরুতর পরিস্থিতির মুখে ইউরোপ

আক্রান্ত বিশ্ব: ইংল্যান্ডে রোগী বেড়েছে ১৬৭ শতাংশ; ভারতে ৬০ লাখ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বেকার; বাজারে আসার আগেই টিকা বেচাকেনা শেষ
-

আক্রান্ত : ৩০,৪৭১,৭৮৩ মৃত্যু : ৯,৫১,৯১০
দেশ আক্রান্ত মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্র ৬,৮৮০,৮৫২ ২,০২,৩০৬
ভারত ৫,২৪,৭,৬২৭ ৮৪,৭১৭
ব্রাজিল ৪৪,৫৭,৪৪৩ ১,৩৫,০৩১
রাশিয়া ১,০৯১,১৮৬ ১৯,১৯৫
পেরু ৭,৫০,০৯৮ ৩১,১৪৬
কলম্বিয়া ৭,৪৩,৯৪৫ ২৩,৬৬৫
মেক্সিকো ৬,৮৪,১১৩ ৭২,১৭৯
দ. আফ্রিকা ৬,৫৫,৫৭২ ১৫,৭৭২
স্পেন ৬,৫৪,৬৩৭ ৩০,৪০৫
আর্জেন্টিনা ৬,০১,৭১৩ ১২,৪৯১
গত কয়েক সপ্তাহে ইউরোপীয় দেশগুলোতে আবারো ভয়াবহ আকারে বেড়েছে নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ইউরোপে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিকে ওই অঞ্চলে মহামারীর দ্বিতীয় তরঙ্গের আগাম সঙ্কেত উল্লেখ করে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটির ইউরোপীয় অঞ্চলের পরিচালক ড. হ্যান্স ক্লুগ বলেন, ‘আমরা খুবই জটিল পরিস্থিতির মুখে পড়তে যাচ্ছি। ইউরোপ ‘খুবই গুরুতর’ পরিস্থিতির মুখে রয়েছে। ইউরোপে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহজুড়ে ৫০ থেকে ৬৪ এবং ৬৫ থেকে ৭৯ বছর বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমণের শিকার হওয়া বড় একটি অংশ ২৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইউরোপে গেল মার্চে মহামারী যখন চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছিল, তখন সাপ্তাহিক সংক্রমণের ঘটনা সেই সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। গত সপ্তাহে অঞ্চলটিতে সাপ্তাহিক রোগীর সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। ইউরোপের অর্ধেকের বেশি দেশেই গত দুই সপ্তাহে ১০ শতাংশ নতুন রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সাতটি দেশে নতুন সংক্রমণ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এ অবস্থায় দেশগুলোকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের নিয়ম থেকে এক পা-ও সরে আসা ঠিক হবে না।
ইউরোপে করোনায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ মানুষ আক্রান্ত এবং দুই লাখ ২৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জার্মানিতে গত ২৩ এপ্রিলের পর করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোতে করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ লাখে। ফ্রান্সে শেষ ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজারের বেশি ফরাসি নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। খবর খালিজ টাইমস, আনন্দবাজার, সিএনএন, হিন্দুস্তান টাইমস, সিএনবিসি, ইউএন নিউজ, ইউএনবি, ওয়ার্ল্ডোমিটারস, বিবিসি, রয়টার্স, আলজাজিরা, ভিওএ, ফক্স বিজনেস ও এএফপির।
করোনায় মৃত্যুর হার সর্বনিম্ন সিঙ্গাপুরে : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন রাখতে সক্ষম হয়েছে সিঙ্গাপুর। ৫৭ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও মারা গেছেন মাত্র ২৭ জন। বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যুর হার গড়ে প্রায় ৩ শতাংশ হলেও সিঙ্গাপুরে করোনায় মৃত্যুর হার ০ দশমিক ০৫ শতাংশ। সিঙ্গাপুর, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডের জনসংখ্যার আকার প্রায় একই। সিঙ্গাপুরে করোনায় মৃত্যুর হার ০.০৫ শতাংশ হলেও ডেনমার্কের এই হার প্রায় ৩ শতাংশ; ফিনল্যান্ডের প্রায় ৪ শতাংশ। দেশটিতে গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে করোনায় কারো মৃত্যু হয়নি। তবে সিঙ্গাপুরে অভিবাসী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে অসাম্য অনেকটা সহজেই চোখে পড়ছে। দিনরাত ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হচ্ছে। ঘরে স্থানস্বল্পতার কারণে সামাজিক দূরত্ব মানার সুযোগও নেই। শ্রমিকদের থাকার জন্য বরাদ্দ একটি ডরমিটরিতে সর্বোচ্চ কতজন থাকবেন, এর কোনো আইনি সীমা নেই। কোভিড-১৯-এর আগে সাধারণত ২০ জনেরও বেশি শ্রমিক একত্রে ডরমিটরিতে থাকতেন।
আবুধাবি গেলেই ট্র্যাকার লাগানো থাকবে ১৪ দিন : আবুধাবিতে গেলে সবাইকে মাস্ক পরে থাকা ছাড়াও ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। হোম কোয়ারেন্টিনের এই ১৪ দিন সবাইকে কব্জিতে ট্র্যাকার লাগিয়ে রাখা হবে। বাইরের দেশগুলো থেকে আসা ব্যক্তিদের বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আবুধাবিতে পৌঁছানোর ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষার ফল পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
টিকা নিয়ে ট্রাম্প-সিডিসি পরিচালকের মতবিরোধ : সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরিচালক ড. রবার্ট রেডফিল্ড ‘ভুল বলেছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার সিনেটের শুনানিতে সিডিসি পরিচালক জানান, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে করোনাভাইরাসের টিকার ব্যাপক প্রয়োগ আগামী বছরের মাঝামাঝির আগে শুরু করা যাবে না। তবে নভেম্বর, ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সম্মুখসারিতে থাকা কিছু মানুষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ টিকা দেয়া হতে পারে। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প রেডফিল্ডের দেয়া এ সময়সূচির সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, ‘এগুলো ঠিক তথ্য নয়। আমরা একটি টিকা পাওয়ার খুব কাছাকাছি অবস্থান করছি। অক্টোবরের কোনো এক সময় থেকেই আমরা টিকা দেয়া শুরু করতে পারব।’
ইংল্যান্ডে রোগী বেড়েছে ১৬৭ শতাংশ : ইংল্যান্ডে নতুন করে কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত মানুষের সংখ্যা ১৬৭ শতাংশ বেড়েছে। ফলে ২০ লাখ মানুষের জন্য নতুন করে আরোপ হয়েছে বিধিনিষেধ। জুলাইয়ের শুরু থেকে করোনা পজিটিভ মানুষের সংখ্যা বাড়ছেই এবং মে মাসে টেস্ট অ্যান্ড ট্রেস সিস্টেম চালুর পর সেই সংখ্যা এখন হয়েছে দ্বিগুণ। আক্রান্ত বৃদ্ধির কারণে উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের বিশ লাখ মানুষের জন্য নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই অঞ্চলে এক পরিবারের আরেক পরিবারের সাথে মিলিত হতে পারবে না এবং পার্কগুলো আবার বন্ধ করে দেয়া হবে।
করোনায় আক্রান্ত ৭ জনের একজন স্বাস্থ্যকর্মী : মহামারী নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত প্রতি ৭ জনের মধ্যে একজন স্বাস্থ্যকর্মী। এটা বৈশ্বিক গড় হলেও কিছু কিছু দেশে তো এই সংখ্যাটা প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, ‘ডব্লিউএইচের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে এ পর্যন্ত যতজন মানুষ মহামারী কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশই স্বাস্থ্য কর্মী। এ ছাড়া কিছু দেশে তো এই সংখ্যাটা ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত।’
করোনায় মৃত্যু ছাড়াল সাড়ে ৯ লাখ : বিশ্বে এ পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৩ লাখ ৫১ হাজার ৭২৩ জন। মারা গেছেন ৯ লাখ ৫০ হাজার ৫৫৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ কোটি ২০ লাখ ৪১ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে একদিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছেন গত ১৭ সেপ্টেম্বর। এ দিন ৩ লাখ ১৪ হাজার ৭৫২ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে। একদিনে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে গত ১৭ এপ্রিল ৮ হাজার ৫১৩ জনের। গত বৃহস্পতিবার মারা গেছেন ৫ হাজার ৫৭৯ জন। সক্রিয় কোভিড-১৯ রোগী রয়েছেন ৭৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭২৯ জন। এদের মধ্যে ৯৯ শতাংশই মৃদু উপসর্গযুক্ত।
যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমিতদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু : যুক্তরাষ্ট্রে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তরুণ, যাদের বয়স একুশ বছরের কম তারা কোভিড-১৯ এ বেশি করে সংক্রমিত হচ্ছে। এই সংখ্যা একই বয়সের শ্বেতাঙ্গ তরুণদের চাইতে বেশি। ২৭টি অঙ্গরাজ্যের সঙ্কলিত উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, ২১ ফেব্র“য়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২১ বছরের কম বয়সী ১২১ জন লোক মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই ছিলেন হিস্প্যানিক, কৃষ্ণাঙ্গ, আমেরিকান ইন্ডিয়ান এবং আলাস্কার আদিবাসী যদিও তারা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ৪১ শতাংশ।
পর্যটকদের জন্য দ্বার খুলছে থাইল্যান্ডের : থাইল্যান্ড বিদেশী পর্যটকদের অক্টোবরের শুরুর দিক থেকে বিশেষ ভিসা প্রদান শুরু করবে। ৬ মাসের বেশি সময় বিদেশী পর্যটকদের থাইল্যান্ডে আশার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চ্যান-ওচার মন্ত্রিসভা থাইল্যান্ডে ৯০ থেকে ২৮০ দিনের মধ্যে থাকার পরিকল্পনা করে পর্যটকদের ভিসা দেয়ার প্রস্তাবকে অনুমোদন দিয়েছে। ভ্রমণকারীরা থাইল্যান্ডে আসার পর ১৪ দিনের রাষ্ট্রীয় কোয়ারেন্টিন ভোগ করবেন এবং স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাসংক্রান্ত বিধিগুলো মেনে চলতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় আক্রান্ত হবে ১২ মিলিয়ন : দক্ষিণ আফ্রিকায় ছয় মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াবে ১২ মিলিয়নে। সেই সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও দাঁড়াবে ৪০ হাজারে। করোনা আক্রান্ত সাড়ে ৬ লাখ পেরিয়েছে। ৬ মাসে তা মোট জনসংখ্যার ৪৭.৮ শতাংশ আক্রান্ত হয়ে ১২ মিলিয়নে দাঁড়াবে। জনসংখ্যার ২০ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছে। আগামী ৬ মাসে আরো ২৭ শতাংশ আক্রান্ত বৃদ্ধি পাবে। দেশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে ৪০ শতাংশ লোক আক্রান্ত হয়েছে।
বাজারে আসার আগেই টিকা বেচাকেনা শেষ : টিকা কোম্পানিÑ ফাইজার, সিনোভ্যাক, মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেঙ্কা গামালিয়া বা স্পুটনিকের উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৫ শ’ ৯০ কোটি ডোজ। এখন পর্যন্ত ৫ শ’ ৫০ কোটি ডোজের উৎপাদন চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে ২ শ’ ৭০ কোটি ডোজ বা মোট টিকার ৫১ শতাংশই কিনে রেখেছে বিশ্বের মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা উন্নত দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, জাপান, ম্যাকাউ, সুইজারল্যান্ড ও ইসরাইল। বাকি ২ শ’ ৬০ কোটি টিকা কিনে বা বুকিং দিয়ে রাখা উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া এবং মেক্সিকো।
ভ্যাকসিন কার্যক্রমে বিভিন্ন দেশকে যোগ দেয়ার আহ্বান : বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ নোভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক ভ্যাকসিন উদ্যোগ ‘কোভ্যাক্স’-এ যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে দেশগুলোকে শুক্রবারের মধ্যেই যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সুষ্ঠু ও সময়োপযোগী বণ্টনের প্রতিশ্রুতি দেয়ার লক্ষ্যে যেসব দেশ এখনো কোভ্যাক্সে স্বাক্ষর করেনি, শুক্রবারের মধ্যে কার্যক্রমে যোগদানের জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। কোভ্যাক্স প্রক্রিয়ার সহ-নেতৃত্ব প্রদান করছে বৈশ্বিক ভ্যাকসিন জোট ‘গ্যাভি’।
করোনা থেকে সুস্থরা অবসাদে ভুগছেন : করোনাভাইরাসে সংক্রমিত অর্ধেকেরও বেশি রোগী ও হাসপাতালের কর্মী সুস্থ হওয়ার পরও দীর্ঘমেয়াদি অবসাদ বা ক্লান্তিতে ভুগছেন। আইরিশ একটি হাসপাতালের পর্যবেক্ষণে এমন তথ্য জানা গেছে। সেন্ট জেমস হাসপাতালের ওই গবেষণায় ১২৮ জন অংশ নেন। সংক্রমণ থেকে সুস্থ হওয়ার ১০ সপ্তাহ পরও ৫২ শতাংশ রোগীর মধ্যে ক্লান্তির উপসর্গ দেখা গেছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী দুই-তৃতীয়াংশ নারী অবসাদের মতো উপসর্গে ভুগছেন।
মডার্নার টিকার নীলনকশা প্রকাশ : কোভিড-১৯ টিকা পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে থাকা নয়টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবার আগে যুক্তরাষ্ট্রের জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মডার্না তাদের গবেষণার সম্পূর্ণ নীলনকশা (ব্লুপ্রিন্ট) প্রকাশ করেছে। ১৩৫ পাতার ওই তথ্য গোপনীয় হিসেবে চিহ্নিত। এতে পরীক্ষার পরিমিতিগুলো ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ, এটি কিভাবে ফলাফল নির্ধারণযোগ্য কি না, তা বিচার করবে। মডার্নার প্রধান নির্বাহী স্টেফান ব্যানসেল বলেছেন, তাদের টিকা কার্যকর কি না, তার ফলাফল নভেম্বরের মধ্যেই জানা যাবে। হয়তো অক্টোবরেই জানা যেতে পারে; তবে এতে কিছুটা সংশয় রয়েছে।
করোনায় সাংবাদিকদের কাজে পদে পদে বাধা : বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারী সাংবাদিকদের পেশাগত কাজ জটিল করে তুলেছে। বিভিন্ন দেশের সরকার, নির্বাচিত প্রতিনিধি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা ফেডারেশন সাংবাদিকদের প্রবেশগম্যতা বাধাগ্রস্ত করতে প্রায়ই চলমান স্বাস্থ্য সঙ্কটকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। বেশির ভাগ সংবাদ সম্মেলন ভার্চুয়ালি হচ্ছে। সাংবাদিকদের আগেই প্রশ্ন জমা দিতে হচ্ছে। কখনো কখনো প্রশ্ন করার সুযোগও থাকছে না। করোনাকালে চীন ও মিসরের মতো দেশ বিদেশী সাংবাদিকদের ভিসা বাতিল বা দেশত্যাগ করতে নির্দেশ দিয়েছে।
বিশ্বে সহস্রাধিক নার্সের মৃত্যু করোনায় : বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বের ৪৪টি দেশে এক হাজার ৯৭ জন নার্স মারা গেছেন। সঠিক সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে। এই পরিস্থিতি বিপর্যয়কর উল্লেখ করে সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় সরকারগুলোর সমালোচনা করেছে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব নার্সেস (আইসিএন)। ব্রাজিলে ১১ আগস্ট পর্যন্ত কোভিড-১৯ সম্পর্কিত অসুস্থতায় ৩৫১ জন নার্স মারা গেছেন। মেক্সিকোতে মারা গেছেন ২১২ জন নার্স। ৩২টি দেশে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৭৮ জন নার্স কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন; যা মোট সংক্রমণের ১০ শতাংশ।
ভারতে ৬০ লাখ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বেকার : লকডাউনে চাকরি হারিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক, শিক্ষক অ্যাকাউন্ট্যান্ট, পেশাদারসহ ভারতের ৬০ লাখ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। ২০১৬ সালে উচ্চপদস্থ চাকরিজীবীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ। মে-আগস্ট, ২০১৯ সালে দাঁড়ায় ১ কোটি ৮৮ লাখে। সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর, ২০১৯ এ তা হয় ১ কোটি ৮৭ লাখ। জানুয়ারি-এপ্রিল মাসে এ পরিসংখ্যান কমে হয় ১ কোটি ৮১ লাখ। মে-আগস্ট, ২০২০ সালে করোনার প্রভাবে উচ্চপদস্থ কর্মীর সংখ্যা কমে হয়েছে ১ কোটি ২২ লাখে দাঁড়ায়। অর্থাৎ ৫৯ লাখ পেশাদার চাকরি হারিয়েছেন। গত বছরের একই সময়কালের তুলনায় চাকরি কমেছে প্রায় ৬৬ লাখ তথা বেকারত্ব বেড়েছে ২৬ শতাংশ।
রাশিয়ার ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : রাশিয়ায় তৈরি করোনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি প্রয়োগের পর স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ৪০ হাজারের মধ্যে ৩০০ এর কিছু বেশি স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে পরীক্ষামূলক ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। তাতে ২৪ ঘণ্টায় ১৪ শতাংশ এর মধ্যে দুর্বলতা, পেশির যন্ত্রণা এবং শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির মতো সমস্যা দেখা গেছে। তবে এসব উপসর্গের কথা ভ্যাকসিন প্রয়োগের নির্দেশের আগেই উল্লেখ করা ছিল। প্রথম ডোজ প্রয়োগের ২১ দিন পর স্বেচ্ছাসেবীদের শরীরে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে।
করোনার সময়ে ভারতে নতুন বিলিয়নিয়ার ১৫ জন : করোনা মহামারীর মধ্যেও গত ছয় মাসে ভারতে নতুন ১৫ জন শত কোটিপতি (বিলিয়নিয়ার) তৈরি হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ফোর্বস’-এর ‘রিয়েল টাইম বিলিয়নিয়ার’ তালিকার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। ওই তালিকায় আপাতত মোট ১১৭ জন ভারতীয়ের নাম রয়েছে। মার্চ মাসে এই সংখ্যা ছিল ১০২। ওই সংখ্যায় আরো যোগ হয়েছে ১৫ জন। ১১৭ জন ভারতীয়ের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি ডলার। একে ধনী-গরিবের মধ্যে পার্থক্য আরো বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ হিসেবেই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
যুক্তরাজ্যে ফের জারি হতে পারে লকডাউন: যুক্তরাজ্যে ফের বাড়ছে মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। প্রতি আট দিনে সেখানে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। চলমান এই পরিস্থিতিতে দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছে ফের লকডাউন জারির সম্ভাবনা। এ সম্পর্কে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, ‘আমরা দেশজুড়ে ফের লকডাউনের বিপক্ষে, কিন্তু প্রয়োজন হলেই তা করতে প্রস্তুত আমরা।’ তিনি বলেন, ‘খুব দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ করছি যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রতি আট দিনে দ্বিগুণ হচ্ছে। তাই আমাদের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।’


আরো সংবাদ



premium cement