দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ থাকায় করোনাকালে সেখান থেকে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ দেয়া যায় কি না, খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার একনেক সভায় আলোচনার সময় তিনি এই প্রস্তাব দেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সভার পর এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিন্তাভাবনা করতে বলেছেন সরকার প্রধান। বিডি নিউজ।
বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ইতিহাসের সর্বোচ্চ চূড়ায় রয়েছে। তিন দিন আগে তা ৩৬ বিলিয়ন বা তিন হাজার ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার আমদানিব্যয় হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে ৯ মাসের আমদানিব্যয় মেটানো সম্ভব।
আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানিব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশী মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। সে হিসাবে বাংলাদেশের এখন অনেক বেশি রয়েছে। এই অর্থ অলস না রেখে তা বিনিয়োগে আনতে অনেক দিন ধরেই অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। করোনা মহামারীতে পুরো বিশ্বের অর্থনীতিই যখন বিধ্বস্ত, তখন তা কাজে লাগানোর দিকে নজর দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বিদেশীদের কাছ থেকে ডলারে ঋণ নিই। আমাদের রিজার্ভ এখন ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এখান থেকে আমরা ঋণ নিতে পারি কি না? বাংলাদেশ ব্যাংক জনগণের পক্ষে এই টাকা সংরক্ষণ করে। ওখান থেকে আমরা প্রকল্পের জন্য ঋণ নিতে পারি। এ সময় তিনি আরো বলেছেন, বিদেশ থেকে আমরা যে সুদে ঋণ আনি তা একটু কম হলেও দেশের টাকা ব্যবহার করলে লাভটা দেশেই থাকবে’।
‘তার নির্দেশনা হল কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবে। কিভাবে এটা করা যায়, তার খুঁটিনাটি দেখবে। অর্থনীতিতে এর প্রভাব কী হতে পারে, তা খতিয়ে দেখতে পারে,’ বলেন মান্নান।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাবের প্রশংসা করে বলেন, তিনি অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী ও যুগান্তকারী মন্তব্য করেছেন। ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সাধারণত তিন মাসের আমদানিব্যয় মেটাতে বিদেশী টাকা হাতে রাখা যেকোনো অর্থনীতিতে সেইফ এবং স্বস্তিদায়ক মনে করা হয়। এখন প্রায় এক বছরের আমদানিব্যয় আমরা মেকআপ করতে পারব।’
‘সুতরাং তিনি (প্রধানমন্ত্রী) মনে করেন, আমদানি ব্যয়ের একটা যুক্তিসংগত পরিমাণ হাতে রেখে রিজার্ভের বাকিটাকে নিজেদের অর্থ নিজেরা ঋণ নিতে পারি,’ বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, ‘আমরা যেসব দাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিই, অনেক সময় তাদের নানা রকম শর্তের কারণেও প্রকল্পের কাজ সমস্যায় পড়ে। দেশী অর্থায়ন হলে সেই সমস্যাও থাকবে না।
‘এসময় (সভায়) আমি একটা মন্তব্য করেছিলাম যারা ঋণ নেবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা যেমনভাবে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেবে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধ করবে। এখন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে কিভাবে কী করা যায়।’
মান্নান জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ জন্য সেন্ট্রাল ব্যাংক এবং অর্থ বিভাগ নিয়মকানুন নীতিমালা নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। আর আমরা পরিকল্পনার দিক দিয়ে সহায়তা দেবো।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা