১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


রাখাইনে গোলায় অন্তঃসত্ত্বাসহ ২ রোহিঙ্গা নারী নিহত আইসিজের আদেশ অগ্রাহ্য

-

জাতিসঙ্ঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) আদেশ দেয়ার দু’দিন পরই মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর গোলায় নিহত হয়েছেন দু’জন রোহিঙ্গা নারী। তাদের একজন অন্তঃসত্ত্বা। আহত হয়েছেন সাতজন। পার্লামেন্টের সদস্য ও গ্রামের এক বাসিন্দার বরাতে গতকাল এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমার সরকারকে আইসিজে চার দফা নির্দেশনা দেয়ার দু’দিন পরেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। উত্তর রাখাইনের বুথিডং শহরতলী থেকে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্য মোং কিউ জান বলেন, নিকটস্থ সেনা ব্যাটালিয়ন থেকে ছোড়া ওই গোলা কিন তুয়াং গ্রামে গত শুক্রবার মধ্যরাতে আঘাত হানে। তিনি বলেন, যখন এই কামানের গোলা ছোড়া হয়, তখন কোনো সঙ্ঘাত ছিল না। বিনা উসকানিতেই ওই গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে।
চলতি মাসে এভাবে বেসামরিক লোক হত্যার ঘটনা এটা দ্বিতীয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। বিদ্রোহীদের ওপর দায় চাপিয়ে তারা জানায়, সকাল হওয়ার আগেই একটি সেতুর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
সম্প্রতি ওই অঞ্চল আবার এক উত্তেজনাপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়। সেখানে বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির সাথে যুদ্ধ শুরু হয়েছে সেনাবাহিনীর। আরাকান আর্মি হলো ওই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের একটি বিদ্রোহী গ্রুপ। তারা স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করছে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বাস্তচ্যুত হয়েছে। নিহত হয়েছেন কয়েক ডজন।
এখনো রাখাইনে যে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন, তারা সেখানে রয়েছেন বর্ণবাদের শিকার মানুষের মতো অবরুদ্ধ হয়ে। তাদের চলাফেরায় স্বাধীনতা নেই। নেই স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা লাভের কোনো সুযোগ। আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যুদ্ধের মাঝখানে তারা আটকা পড়েছেন। চলাচলে বিধিনিষেধ থাকার কারণে তারা বৌদ্ধ প্রধান অঞ্চল থেকে পালাতে পারছেন না। গত ৭ জানুয়ারি এক বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা চার শিশু নিহত হয়। এ জন্য সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মি একে অন্যকে দোষারোপ করে। সর্বশেষ যে দু’জন নারী নিহত হয়েছেন, তাদের বিষয়ে রয়র্টাস বক্তব্য নিতে সেনাবাহিনীর দু’জন মুখপাত্রকে ফোন করে। কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেননি।
কিং তাং গ্রাম থেকে প্রায় এক মাইল দূরের আরেক গ্রামে বসবাস করেন সোয়ে তুন ওও। তিনি ফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, শুক্রবার মধ্যরাতের ওই গোলাগুলিতে দু’টি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেনারা সব সময়ই ভারী অস্ত্র থেকে গোলা বর্ষণ করে। তারা কোনো এলাকাকে সন্দেহপ্রবণ মনে করলেই পুরো এলাকায় এভাবে গোলা ছোড়ে। ফলে পালিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া অসম্ভব।
উত্তর রাখাইনে ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনীর ধরপাকড়ে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের ওপর হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও নিপীড়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জাতিসঙ্ঘ বলছে, গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়েই মিয়ানমার বাহিনী সামরিক অভিযান চালায়।
রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী এ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ডিসেম্বরে শুনানির পর গত ২৩ জানুয়ারি মামলার অন্তর্বর্তী আদেশ দেন আদালত। এতে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ ও রাখাইনে বাস করা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে কম্বোডিয়ায় দু’টি চীনা যুদ্ধজাহাজ, উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন হাতিয়ায় হরিণের গোশত জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড আশুগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অটোরিকশা চালকের মৃত্যু রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার দ্রুত চাপে পড়বে : প্রত্যাশা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী কানাডা মহাদেবপুরে বাসচাপায় মাদরাসাছাত্র নিহত কিরগিজস্তানের পরিস্থিতি শান্ত হলেও উদ্বেগজনক সারা দেশে টানা ৩ দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস দাগনভূঞায় অগ্নিদগ্ধ পরিবারের মাঝে জামায়াতের উদ্যোগে গৃহ নির্মাণ উদ্বোধন ২৫ মে বঙ্গবাজার বিপণিবিতান নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী এখনো নিখোঁজ প্রেসিডেন্ট রাইসি : অনুসন্ধানে ৪০ দল

সকল