সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা ছাড়া একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া ঠিক হবে না বলে পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। একই সাথে দাবি আদায়ে আন্দোলনের বিকল্প নেই বলেও মত দেন। তারা বলেছেন, মামলা-হামলার কারণে নেতারা নিজ এলাকায় যেতে পারছেন না, কার্যালয়ে বসতে পারছেন না। অথচ মতাসীন দলের নেতারা প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এ ছাড়াও খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে গেলে তৃণমূল গ্রহণ করবে না বলেও দলের নীতিনির্ধারকদের আশঙ্কার কথা জানান কেন্দ্রীয় নেতারা।
গতকাল রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নির্বাচন ও আন্দোলন ইস্যুতে উপদেষ্টা-ভাইস চেয়ারম্যান ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সাথে বৈঠক করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বেলা ৩টা থেকে পর্যায়ক্রমে সম্পাদকমণ্ডলী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সাথে এই বৈঠক হয়।
বেলা ৩টায় প্রথম দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সাথে বৈঠকে বসেন নীতিনির্ধারকেরা। এ সময় উপস্থিত সব নেতার মতামত নেন তারা। সূত্র জানায়, সম্পাদকদের মধ্যে দু’জন নেতা ছাড়া সবাই বর্তমান অবস্থায় নির্বাচনে না যাওয়ার পে পরামর্শ দেন। একই সাথে খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে মত দেন।
বৈঠকে একজন সম্পাদক বলেন, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার, মামলা-হামলা অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে গেলেও এলাকায় প্রচারণা করতে পারব না। কারণ তৃণমূল নির্বাচনে যাওয়ার পে নয়। তাদের কাছ থেকেও আমরা বাধার সম্মুখীন হতে পারি।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, নাটোরে নেতাকর্মীরা এলাকাছাড়া। তাদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা। জেলখানায় জায়গা খালি নেই। দলের কার্যালয়ে কেউ বসতে পারেন না। যেখানে মতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছেন, সেখানে বিএনপি নেতারা তাদের কার্যালয়েই বসতে পারছে না। ম্যাডাম খালেদা জিয়া জেলাখানায়। এ অবস্থায় নির্বাচনে যাওয়া হবে বর্তমান সরকারের বৈধতা দেয়া। তাদের বৈধতা দিতে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে যদি দল সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমাদের কথা নেই। তবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনের পে আমি নই।
তবে বৈঠকে একজন যুগ্ম মহাসচিব ও একজন সম্পাদক নির্বাচনে যাওয়ার পে মত দেন। তারা যুক্তি দিয়ে বলেন, নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। এ কারণেই মঙ্গলবারের সমাবেশে এত সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম হয়েছিল। নির্বাচনে না গেলে এ আমেজ থাকবে না।
সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের সাথে বৈঠক করেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও এসব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে নির্বাচন ও আন্দোলন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামত সারসংপে করা হয়। সূত্র জানায়, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাথে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির আট সদস্য সাাৎ চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপরে কাছে গত ৮ অক্টোবর চিঠি দিয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা খালেদা জিয়ার সাথে হাসপাতালে দেখা করার অনুমতি পেতে পারেন। না হলে আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে করণীয় বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের তৈরি করা সারসংপে আইনজীবীদের মধ্যেমে খালেদা জিয়ার কাছে পাঠানো হতে পারে। অন্য দিকে লন্ডনে থাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একই সারসংপে পাঠানো হবে। এটি পাঠানোর পর বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে নাকি আন্দোলনে যাবেÑ এ বিষয়ে এই দুই শীর্ষ নেতা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা