খাবার পানির অভাব খেরাসনের হাজার মানুষের

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলছেন, মঙ্গলবার দেশটির দক্ষিণে একটি বড় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষের কাছে এখন খাবার পানি নেই।

তিনি বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল বিভক্তকারী নিপ্রো নদীর বন্যার পানিতে খেরসন অঞ্চলে কয়েক হাজার মানুষ আটকা পড়েছে। আশপাশের কয়েকটি এলাকা সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, সেখানকার সেচ ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ার ফলে কৃষিতে বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা করছেন তারা।

ইউক্রেন ও রাশিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে লড়াইয়ে নোভা কাখভকা বাঁধকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ করেছে।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বলেছে, বাঁধ ধ্বংসে জাপোরিশা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েনি।

বুধবার বন্যার পানির উচ্চতা বাড়তে পারে এমন আশঙ্কার মধ্যে খেরসনের আশপাশের এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।

খেরসন শহরটি ইউক্রেন বাহিনী যা গত বছরের শেষের দিকে রুশ বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করেছিল।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ৪২ হাজার মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।

বিবিসির ইউক্রেন সংবাদদাতা জেমস ওয়াটারহাউস ওই শহর থেকে জানিয়েছেন, বন্যার পানিতে অনেক বাড়ির ছাদ ডুবে গেছে। উদ্ধারের অপেক্ষায় খেরসনের অনেক মানুষ ছাদ ও গাছে রাত কাটিয়েছে।

কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, নোভা কাখভকাতে বন্যা এখন কমছে।

কাখভকা জলাধারে পানি কমে আসার ফলে তা দক্ষিণ ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ কৃষি শিল্পের ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ বিশাল এলাকাটি সেচের পানির ওপর নির্ভরশীল।

দূষণ ও বন্যার কারণে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতিরও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ইউক্রেন সরকার একে গত কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপে সবচেয়ে খারাপ পরিবেশগত বিপর্যয়গুলোর মধ্যে একটি বলে বর্ণনা করেছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বন্যায় অন্তত সাত ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে।

পারষ্পরিক দোষারোপ
ওই বাঁধটি ধ্বংসের জন্য ইউক্রেন ও রাশিয়া একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়েছে।

‘গণ-বিধ্বংসী পরিবেশ বোমা’ ব্যবহারের জন্য প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন।

আবার রাশিয়া দাবি করছে, পাল্টা হামলার ব্যর্থতা ঢাকতে কিয়েভ সরকার ওই বাঁধে আক্রমণ চালিয়েছে।

কাখভকা বাঁধ থেকে উজানে ইউক্রেনের একটি শহরের বাসিন্দাদের পানি সংরক্ষণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে লেখা এক পোস্টে নিকোপোলের মেয়র ইয়েভেনি ইয়েভতুশেঙ্কো বলেছেন, কর্তৃপক্ষ স্থানীয় দোকানগুলোতে পর্যাপ্ত বোতলজাত খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার কাজ করছে।

নিকোপোল ওই বাঁধ থেকে প্রায় ৭৫ মাইল উজানে। তা নিপ্রো নদীর তীরে ইউক্রেনিয়ান শহরগুলোর মধ্যে একটি- যা তাদের পানির প্রাথমিক উৎস হিসেবে জলাধারটি ব্যবহার করত।
সূত্র : বিবিসি