২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউক্রেনপন্থীরাই কি নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল

বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে ৭৬০ মাইল লম্বা নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন - ছবি - বিবিসি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলার মধ্যেই গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণ ঘটেছিল। কিন্তু কে বা কারা এ ঘটনা ঘটায় তা এক রহস্য হয়েই ছিল এতদিন।

মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস এক রিপোর্টে বলছে, সম্ভবত ইউক্রেন-সমর্থক একটি গ্রুপ ওই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল।

বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে রাশিয়া থেকে জার্মানিতে গ্যাস নিয়ে যাওয়ার পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম-ওয়ানের ওপর চালানো হয়েছিল ওই আক্রমণটি।

সে সময় এই ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্যে সৃষ্টি করেছিল।

রাশিয়া, ইউক্রেন আর ইউরোপসহ পশ্চিমা বিশ্বের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের তোড়ের মধ্যেই ঠিক কারা এ আক্রমণ চালাতে পারে, তা নিয়ে শুরু হয়েছিল ব্যাপক জল্পনা।

তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন একে 'সাবোটাজ' বলে অভিহিত করেছিলেন।

রাশিয়া এ জন্য পশ্চিমা বিশ্বকে বিশেষ করে ব্রিটেনকে দোষারোপ করেছিল, তবে ব্রিটেন এ অভিযোগ অস্বীকার করে।

পোল্যান্ড ও ইউক্রেন সরাসরি রাশিয়াকে ওই বিস্ফোরণের জন্য দায়ী করেছিল। যদিও তারা কোনো প্রমাণ দেয়নি।

অন্যদিকে ন্যাটো ও পশ্চিমা নেতারা এর নিন্দা করলেও সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের নিজেদের পাইপলাইনে আক্রমণের অভিযোগ করেননি।

এখন মার্কিন নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এক রিপোর্টে মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, এই নাশকতামূলক আক্রমণ চালিয়েছিল একটি ইউক্রেনপন্থী গোষ্ঠী।

এ রিপোর্টের পর ইউরোপ ও মার্কিন মিডিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ওই ঘটনার সাথে ইউক্রেনের কোনো সম্পর্ক ছিল না।

অন্যদিকে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এ রিপোর্টটিকে তার ভাষায় ‘ভুয়া-খবর ছড়ানোর একটি সমন্বিত প্রয়াস’ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, যারা এই পাইপলাইনে আক্রমণ চালিয়েছে তারা স্পষ্টতই দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে চাচ্ছে।

নর্ড স্ট্রিম ওয়ান ও টু - দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিস্ফোরণে
গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর সাগরের নিচে চারটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের ফলে পাইপলাইনটির কমপক্ষে ১৬৪ ফিট দীর্ঘ একটি অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এর পাশেই থাকা আরেকটি নতুন পাইপলাইন, যার নাম ‘নর্ড স্ট্রিম-টু’।

কয়েক দশক ধরেই রাশিয়া জার্মানিসহ বিভিন্ন ইউরোপিয়ান দেশে গ্যাস সরবরাহ করছে। তবে বিস্ফোরণটি যখন ঘটে তার বেশ কিছু দিন আগেই রাশিয়া ‘রক্ষণাবেক্ষণ কাজের’ কারণ দেখিয়ে ‘নর্ড স্ট্রিম ওয়ান’ পাইপলাইনটি দিয়ে গ্যাস পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিল। আর ‘নর্ড স্ট্রিম টু’ দিয়ে গ্যাস পাঠানো কখনো শুরুই হয়নি।

জার্মানি, ডেনমার্ক এবং সুইডেন তিনটি দেশ এ ঘটনার তদন্ত করেছিল।

এ বিস্ফোরণের কারণ এখনো অজানা, তবে এটিকে একটি আক্রমণের ঘটনা বলেই সন্দেহ করা হচ্ছিল।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম অমীমাংসিত রহস্যময় ঘটনা ছিল এটি।

আটলান্টিকের দু’পারেই তদন্তকারীরা এই কথিত নাশকতার পেছনে ঠিক কারা ছিল তার হদিস করতে পারছিলেন না।

নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে বলা হচ্ছে ওই পাইপলাইনে আক্রমণ চালানোর 'মোটিভ' কাদের থাকতে পারে সে বিবেচনায় ইউক্রেন এবং তার সহকর্মীদের কথাই প্রথম মনে আসে, এমনটাই ধারণা ছিল কিছু পশ্চিমা কর্মকর্তার।

কারণ ইউক্রেন অনেক বছর ধরেই এ প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছিল। তাদের মতে এই পাইপলাইন ছিল একটা নিরাপত্তা ঝুঁকি, যা ইউরোপের কাছে রাশিয়ার গ্যাস বিক্রি আরো সহজ করে দেবে।

কী বলছে নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্ট?
নিউইয়র্ক টাইমসের অনুসন্ধানী রিপোর্টটি করেছেন অ্যাডাম এনটুস, জুলিয়ান বার্নস এবং অ্যাডাম গোল্ডম্যান।

রিপোর্টে তারা বলেন, নতুন পাওয়া কিছু মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে আক্রমণটির পরিকল্পনা হয়ত করা হয়েছিল অভিজ্ঞ কিছু ডুবুরির সহায়তা নিয়ে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, আক্রমণটি যারা চালিয়েছে তারা কারা এবং কোন পক্ষের সে সম্পর্কে তারা অনেক কিছুই জানেন না।

গোয়েন্দা তথ্যগুলো থেকে আভাস পাওয়া যায় তারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরোধী। কিন্তু তারা ঠিক কোন গোষ্ঠীর বা এই অপারেশনের পরিচালনা এবং খরচের যোগান কে দিয়েছে তাও নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

কিছু মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, তারা ছিল এমন কেউ যারা দৃশ্যত কোনো সামরিক বা গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে কাজ করছে না। যারা গোয়েন্দা তথ্যগুলো পর্যালোচনা করেছেন।

তবে যারা এ কাজ করেছে তারা হয়ত অতীতে বিশেষ ধরনের সরকারি প্রশিক্ষণ পেয়েছে, এমনটা হতে পারে।

মার্কিন কর্মকর্তারা নতুন পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যগুলো কী ধরনের, কিভাবে পাওয়া গেছে, তথ্য প্রমাণগুলো কতটা জোরালো এগুলো জানাতে অস্বীকার করেছেন।

তারা এটাও বলেন, এগুলো থেকে কোনো 'সুনিশ্চিত সিদ্ধান্তে আসা যায় না।'

নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিকরা বলেন, এর ফলে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না, ইউক্রেনীয় সরকার বা তাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সাথে সংযোগ আছে এমন কোনো ‘প্রক্সি বাহিনী’ এই অপারেশন চালিয়েছে। যেটা কোথাও কাগজে-কলমে লেখা নেই।

গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনাকারী কর্মকর্তারা বলেন, অন্তর্ঘাতীরা খুব সম্ভবত ইউক্রেনীয় বা রুশ নাগরিক, অথবা হয়তো তাদের মধ্যে দু'দেশের লোকই রয়েছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, কোনো আমেরিকান বা ব্রিটিশ নাগরিক এতে জড়িত ছিল না।

'ভূতুড়ে জাহাজ' ও পোলিশ ইয়ট
বিস্ফোরণের কয়েকদিন পরই জেনমার্ক, সুইডেন আর জার্মানি আলাদাভাবে এ ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

কিন্তু সাগরের তলায় ওই বিস্ফোরণের আগের কয়েক ঘণ্টা, দিন বা সপ্তাহে কী ঘটেছিল তার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে আটলান্টিকের দু'পারের তদন্তকারীদের বেশ বেগ পেতে হয়।

বিস্ফোরণটি ঘটেছিল এমন একটি জায়গায় যেখান দিয়ে বহু জাহাজ চলাচল করে। তাই এগুলোর কোনোটির ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিতে হবে তা ঠিক করতেও অসুবিধা হয়।

তবে একটি ইউরোপীয় দেশের গোয়েন্দা সংস্থার ব্রিফিং পাওয়া একজন আইনপ্রণেতা বলেন, তদন্তকারীরা আনুমানিক ৪৫টি 'ভূতুড়ে জাহাজের' ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছিলেন। কারণ বিস্ফোরণের জায়গাটি দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের যোগাযোগের যন্ত্রপাতি কাজ করছিল না, বা বন্ধ ছিল, সম্ভবত তাদের গতিবিধি গোপন করার জন্য।

ওই আইনপ্রণেতা আরো জানান, আক্রমণকারীরা এক হাজার পাউণ্ডেরও বেশি বিস্ফোরক ব্যবহার করেছিল। যে ধরনের বিস্ফোরক যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

এর মধ্যে ‘ডিৎসাইট’ নামের একটি জার্মান ওয়েবসাইট খবর দিয়েছে যে এ আক্রমণের কারণ জানতে জার্মান সরকার যে তদন্ত চালাচ্ছিল তাতে 'গুরুত্বপূর্ণ তথ্য' পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়, জার্মানির কয়েকটি মিডিয়া সংস্থা এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাগরের তলায় বিস্ফোরক পাতার জন্য যে নৌযানটি ব্যবহৃত হয়- তা ছিল একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করা ইয়ট বা প্রমোদতরী।

এ প্রতিষ্ঠানটি পোল্যান্ডভিত্তিক এবং এর মালিক দু'জন ইউক্রেনিয়ান।

যারা আক্রমণটি চালিয়েছে তারা কোন দেশের নাগরিক তা স্পষ্ট নয়, বলা হয় ওই রিপোর্টে।

ইউরোপিয়ান তদন্তকারীরা প্রকাশ্যেই বলেছেন নর্ড স্ট্রিমের ওপর আক্রমণকারীরা যে দক্ষতার সাথে বাল্টিক সাগরের তলদেশে বিস্ফোরক পেতেছে, বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, এবং তাদের কেউ ধরাও পড়েনি। তাতে এটা 'রাষ্ট্রীয় মদতে চালানো আক্রমণ' বলেই মনে হয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ওই আক্রমণের পেছনে কোনো রাষ্ট্রীয় মদতের কথা প্রকাশ্যে বলেনি।

‘মার্কিন-সংশ্লিষ্টতা’ নিয়ে সিমুর হার্শের অনুসন্ধান
গত মাসে মার্কিন অনুসন্ধানী সাংবাদিক সিমুর হার্শ একটি রিপোর্ট করেছিলেন- যা প্রকাশিত হয় ‘সাবস্ট্যাক’ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।

তিনি এতে সিদ্ধান্ত টানেন যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই এ অপারেশন চালিয়েছে।

তার এ উপসংহারের পেছনে তিনি যুক্তি দেন রাশিয়া ইউক্রেনে অভিযান চালানোর আগে বাইডেন ‘নর্ড স্ট্রিম টু-র' অবসান ঘটানোর হুমকি দিয়েছিলেন।

হোয়াইট হাউজে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোৎজকে বাইডেন বলেন, “রাশিয়া যদি ইউক্রেনের ভেতরে অভিযান চালায়, তাহলে ‘নর্ড স্ট্রিম টু’ বলে কিছু থাকবে না। আমরা এর অবসান ঘটাব।”

কিভাবে এটা করা হবে, এ প্রশ্ন করা হলে বাইডেন রহস্যময় উত্তর দিয়ে বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে আমরা এটা করতো পারব।’

মার্কিন উর্ধ্বতন আরো কয়েকজন কর্মকর্তা একই রকম বিবৃতি দিয়েছিলেন।

তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন বা তার সহকর্মীদের কেউ ‘নর্ড স্ট্রিম’ পাইপলাইন ধ্বংসের কোনো মিশনের অনুমতি দেননি। এতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত ছিল না।

রাশিয়া কি এ আক্রমণ চালিয়ে থাকতে পারে?
প্রথমদিকে কিছু মার্কিন ও ইউরোপিয়ান উৎস থেকে ‘নর্ড স্ট্রিমে’ আক্রমণের সাথে রাশিয়ার জড়িত থাকার জল্পনা ছড়িয়েছিল।

এর একটা কারণ সাগরতলের অপারেশনের ক্ষেত্রে রুশদের দক্ষতা। কিন্তু যে পাইপলাইন রাশিয়ার রাজস্ব আয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং ইউরোপের ওপর প্রভাব খাটানোর হাতিয়ার তার ওপর তারা নিজেরাই কেনো নাশকতা চালাবে এটা স্পষ্ট ছিল না।

মার্কিন কর্মকর্তারা আরো বলেন, তাদের অনুসন্ধানে তারা রুশ কর্তৃপক্ষের এতে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাননি।

'ইউক্রেন এ রকম আক্রমণে আগেও চালিয়েছে'
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেন সামরিক, কূটনৈতিক এবং গোয়েন্দা তথ্যের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।

কিন্তু ইউক্রেন তাদের সামরিক তৎপরতার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সব সময় ‘স্বচ্ছতা বজায় রাখে না।’ বিশেষ করে শত্রুপক্ষের ওপর তারা যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে অন্য যে সব আক্রমণ চালায়, সেগুলোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র খুব বেশি কিছু জানতে পারে না।

এতে মার্কিন কর্মকর্তারা হতাশ হচ্ছেন।

বিশেষ করে কিছু আক্রমণের কথা এখানে উল্লেখ করা যায়। আগস্ট মাসে রাশিয়ার সাকি বিমানঘাঁটির ওপর আক্রমণ, ক্রাইমিয়ার কার্চ সংযোগ সেতুর ওপর ট্রাক বোমা-হামলা এবং রিয়াজান ও এঙ্গেলসে রুশ সামরিক ঘাঁটির ওপর ড্রোন হামলা।

এর বাইরেও মস্কোর কাছে একটি গাড়ি-বোমা বিস্ফোরণসহ আরো কিছু আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়, এ সব ঘটনা নিয়ে বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে ব্যক্তিগতভাবে তিরস্কার করেছে, সতর্ক করেছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন এ সব ঘটনায় যুদ্ধ আরো বিস্তৃত হওয়া এবং ইউরোপিয়ান মিত্রদের অসন্তুষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে।

এর পেছনে ইউক্রেন থাকলে পরিণাম কী হতে পারে?
মার্কিন কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এটা স্বীকার করে যে ইউক্রেনে কিভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তার ব্যাপারে তাদের জানাশোনা সীমিত।

নর্ড স্ট্রিমের ওপর হামলার পেছনে ইউক্রেন বা কিয়েভের কোনো প্রক্সি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে ইউরোপে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। বিশেষ করে ইউক্রেন ও জার্মানির স্পর্শকাতর সম্পর্ক এবং ইউক্রেনের প্রতি জার্মান জনসমর্থন নষ্ট হতে পারে।

এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলোর ইউক্রেন প্রশ্নে যে ঐক্য, তা ধরে রাখাটাও কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্টটিতে বলা হচ্ছে, নতুন পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যে ‘নর্ড স্ট্রিমের’ ওপর আক্রমণে ইউক্রেনের সরকারের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ নেই। তা ছাড়া জেলেনস্কি এবং তার জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ওপর বাইডেন প্রশাসনের আস্থাও ক্রমাগত বাড়ছে।

ইউক্রেনীয় সরকার এবং সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ওই আক্রমণে তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না এবং কারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে তাও তারা জানেন না।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পডোলিয়াক টুইটারে লিখেছেন, ‘ইউক্রেন-সমর্থক কোনো অন্তর্ঘাতী গ্রুপের ব্যাপারে তার কোনো তথ্য জানা নেই।’

নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টটিতে একজন সুইডিশ তদন্তকারী ম্যাটস লিউংভিস্টকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘নর্ড স্ট্রিমে’ পাইপলাইনের ওপর কারা আক্রমণ চালিয়েছে তা বের করতে তারা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন কি রাশিয়া উড়িয়ে দিয়েছে? আমার তা কখনোই যৌক্তিক মনে হয় না।’

ম্যাটস আরো বলেন, ‘কিন্তু আপনাকে সব সম্ভাবনাই খোলা রাখতে হবে, ঠিক একটা খুনের মামলায় যেমন হয়।’

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement