ফ্রান্সের ইয়েলো ভেস্ট বা সবুজ জ্যাকেট বিক্ষোভকারীরা নতুন করে সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নেমেছে। বিক্ষোভ দমনে সরকার সারা দেশে ৯০ হাজার নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছে। রাজধানী প্যারিসে শনিবার বিক্ষোভ চলাকালে প্রতিবাদকারীদের লক্ষ করে টিয়ার গ্যাস ছুড়তে দেখা গেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ২৭২ জনকে।
খবরে বলা হয়, রাজধানী প্যারিসেই মোতায়েন করা হয়েছে আট হাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ১২টি সাঁজোয়া যান। সেখানে প্রায় পাঁচ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে পুলিশি বেস্টনিতে প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়ে। তবে বড় ধরনের সহিংসতার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ২৮ বছরের বিক্ষোভকারী জুইলাউমি লি গ্রাক বলেন, আমরা এখানে শান্তিপূর্ণ মিছিলে এসেছি, ভাঙচুর করতে নয়। আমরা জীবনমানের উন্নতি চাই, আমরা বাঁচতে চাই, টিকে থাকতে চাই না।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লা মন্ডের সাংবাদিক অ্যালাইন লেকলার্ক জানান, আগের তুলনায় শনিবার বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা কম। বেশির ভাগই পুরুষ এবং বয়স ২০-৪০ বছরের মধ্যে। সহিংসতার আশঙ্কায় নারী ও বৃদ্ধদের বিক্ষোভে রাখা হয়নি। জ্বালানির কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে ফ্রান্সে গত ১৭ নভেম্বর থেকে চলছে ‘ইয়েলো ভেস্টস’ আন্দোলন। ফ্রান্সের ইতিহাসে গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। ক্রমাগত এ আন্দোলন আরো জোরালো হয়ে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হতে থাকে।
একই সাথে সহিংস রূপ ধারণ করে তা। ১ ডিসেম্বর প্যারিসের রাস্তায় কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা হতে দেখা গেছে। সহিংসতায় প্রাণ হারান তিনজন। ইয়েলো ভেস্টস আন্দোলনকারীরা হলুদ রঙের জ্যাকেট পরে রাস্তায় নামেন। প্রতীকীভাবে হলুদ রঙ বেছে নেয়া হয়েছে। কারণ, ফরাসি আইন অনুযায়ী প্রত্যেক গাড়িতে হলুদ রঙের কাপড় থাকতে হয়।
প্রচণ্ড বিক্ষোভের মুখে গত সপ্তাহে ফ্রান্স সরকার জ্বালানি কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তটি বাতিল করলেও বিক্ষোভকারীদের অসন্তোষ থেকেই গেছে এবং অন্য ইস্যুগুলো নিয়ে বিক্ষোভ চলছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বহীন ইয়েলো ভেস্টস বিক্ষোভকারীরা সরকারকে ন্যূনতম পেনশন, করব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন, অবসরের বয়সসীমা কমানোসহ ৪০টিরও বেশি দাবি-দাওয়া দিয়েছেন। গতকাল শনিবার উগ্র-ডানপন্থী ও বামপন্থী দুই পক্ষের আন্দোলনকারীরাই রাস্তায় নামেন।
বিক্ষোভে আরো সহিংসতা হওয়ার আশঙ্কায় নিরাপত্তাব্যবস্থা আগেই জোরদার করে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ এদুয়া ঘোষণা করেছেন, শনিবার আইফেল টাওয়ার খুলবে না। প্যারিসের চ্যাম্পস-এলিসিসে দোকান ও রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ রাখার আহ্বান জানায় পুলিশ। বাইরে থাকা টেবিল-চেয়ারও সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। স্থগিত করা হয় বেশ কয়েকটি ফুটবল ম্যাচও। সরকারের মন্ত্ররীা বলছেন, আন্দোলন চরমপন্থীদের হাতে চলে গেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা