০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`


সারা দেশে তীব্র গরম

স্বাস্থ্যসচেতন হোন

-

অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত জনজীবন। প্রাণিকূলের অবস্থাও একই রকম। তীব্র তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষজন। আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর ও হিটস্ট্রোকে। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি ভুগছে। এদিকে শ্রমজীবীরা ঘর থেকে বেরুলেও কাজ পাচ্ছেন না। তাদের আয়রোজগার বন্ধের উপক্রম। অব্যাহত তাপপ্রবাহের মধ্যেও গ্রামাঞ্চলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং।
চলমান তাপপ্রবাহে বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় প্রচুর ঘাম হচ্ছে মানুষের শরীরে। দেখা দিচ্ছে পানিশূন্যতা। ডায়রিয়ার চিকিৎসায় সব হাসপাতালে রোগী বাড়ছে। রোগীদের বড় অংশ শিশু। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইসিডিডিআরবি মহাখালী হাসপাতালে এখন প্রায় প্রতিদিন সাড়ে চার শ' থেকে পাঁচ শ'র মতো ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছে।
টানা তিন দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। গত বৃহস্পতিবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়। ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও তাপমাত্রার অনুভূতি ছিল ৪০-৪৬ ডিগ্রি। মাত্রাতিরিক্ত তাপে চুয়াডাঙ্গায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ঢাকায় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ না হলেও এখানে গরমের অনুভূতি অনেক বেশি। রাজধানীতে গত বৃহস্পতিবার ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ঢাকায় কিছু জায়গা আছে যেখানে দুপুরবেলা কাঠফাটা রোদ ওঠে। রাস্তার পিচ নরম হয়ে যায়। গরমে মাথা বেয়ে ঘাম ঝরতে থাকে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলমান তাপপ্রবাহ আরো এক সপ্তাহ চলতে পারে। এর মধ্যে হয়তো কিছুটা কমতেও পারে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হলে। তবে আগামী কয়েক দিনে সারা দেশে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বাংলাদেশে বছরের এ সময়ে এমনিতে তীব্র গরম থাকে। বৃষ্টি কম হওয়ায় তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে উঠে যায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। কোনো কোনো সময় আরো বেশি।
তীব্র গরমে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে বেশি করে বিশুদ্ধ পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিশুদ্ধ পানি পান না করলে ডায়রিয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ, এ সময় পানিতে জীবাণুর ঘনত্ব বেড়ে যায়। অল্প পরিমাণ অনিরাপদ পানিও ঝুঁকির কারণ হতে পারে। একই সাথে বাসি খাবার বর্জন করতে হবে। ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন পানের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে খাবার স্যালাইনের প্যাকেটে যেভাবে নির্দেশনা দেয়া আছে, সে অনুযায়ী স্যালাইন গুলতে হবে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আমাদের দেশে বৈশাখ মাসের এ সময় বাতাসে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে; তা দিয়ে মেঘ তৈরি হয় না বলে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতও হয় না। বৃষ্টি হতে না পারলে বেড়ে যায় গরম। আর এ সময় বঙ্গোপসাগর থেকে পর্যাপ্ত জলীয়বাষ্প আসে না, যেটুকু আসে তা থেকে বৃষ্টি হওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয় না। তবে মাঝে মধ্যে কালবৈশাখীর সাথে কিছু বৃষ্টি হলেও তা গরম কমাতে তেমন সহায়তা করে না। ঘণ্টা কয়েক পর আবার বেড়ে যায়।
যেহেতু প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের কোনো প্রতিকার নেই, তাই খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হওয়াই ভালো। সেই সাথে স্বাস্থ্যসচেতন হতে হবে সবাইকে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement