২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় বিপুলসংখ্যক মানুষ

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাড়ান

-


দীর্ঘদিন ধরে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি থাকায় জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বাসাভাড়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যাতায়াতসহ প্রতিটি খাতে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে। যে কারণে অনেক মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ কমেছে।

খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপের তথ্য, দেশের এক-চতুর্থাংশ পরিবার খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার মতো মৌলিক চাহিদা মেটাতে ঋণ করে। এ ঋণের বড় অংশ মানুষজন নিচ্ছে এনজিও থেকে চড়া সুদে। এর বাইরে আত্মীয়স্বজন, ব্যাংক, মহাজন বা অন্যান্য উৎস থেকেও ঋণ করে পরিবারগুলো। বিবিএসের ‘খাদ্যনিরাপত্তা পরিসংখ্যান-২০২৩’-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় সাফল্য সত্ত্বেও বিপুল জনগোষ্ঠী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ যেন প্রদীপের নিচে অন্ধকার। সাধারণত অর্থ বা অন্যান্য সম্পদের অভাবে খাদ্য গ্রহণ বা খাওয়ার ধরনে বিঘ্ন হলে তাকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মাঝারি পর্যায়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা পরিবার বলতে বোঝানো হয়েছে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার গ্রহণে যারা অক্ষম তাদের। তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা পরিবার বলতে বোঝানো হয়েছে খাদ্য কমানোর উচ্চঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলো। বিবিএসের হিসাবে, দেশে প্রায় ২২ শতাংশ পরিবার মাঝারি পর্যায়ের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ছিল। আর শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ পরিবার তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ছিল।

সংস্থাটি বলছে, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা সরাসরি জনস্বাস্থ্যের সাথে সম্পর্কিত। আর্থসামাজিক বৈষম্যের সাথে সম্পর্কিত বিষয়টি কখনো জীবন হুমকিরও কারণ হতে পারে। বিবিএসের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোট পরিবার বা খানার সংখ্যা চার কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৬ শতাংশ পরিবার মৌলিক চাহিদা পূরণে ঋণ করছে। এসব পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে গ্রামের মানুষ। মৌলিক চাহিদা পূরণে ঋণগ্রস্ত পরিবারের প্রায় ২৮ শতাংশ গ্রামের। শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় এ হার যথাক্রমে ২৪ ও ১৫ শতাংশ।

গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, দেশের ৭১ শতাংশ পরিবার খাদ্যের বাড়তি দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন। মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের অনেক মানুষকে বাধ্য হয়ে ঋণ করতে হচ্ছে। জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) ২০২৩ সালের এক সমীক্ষায় বলা হয়, গত বছর দেশের চার কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। মৌলিক চাহিদা মেটাতে মানুষের ঋণ করার এ প্রবণতা যে এখনো কমেনি, তা উঠে এসেছে বিবিএসের সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপের (২০২২) তথ্যেও।
সহযোগী একটি দৈনিককে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেছেন, ‘আমাদের বিভিন্ন জরিপে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে বিবিএসের তথ্যের চেয়েও বেশিসংখ্যক পরিবার এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা এসব পরিবারের পক্ষে ঋণ করে টিকে থাকাও ক্রমে দুষ্কর হয়ে উঠছে।’
দেশে প্রভূত উন্নয়নের সরকারি বয়ান যে শুভঙ্করের ফাঁকি; তা সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ হারে হারে টের পাচ্ছে। মূলত সরকারঘনিষ্ঠ মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ছাড়া বেশির ভাগ মানুষ এখন নিদারুণ কষ্টে আছে। তাদের জীবনে স্বস্তি ফেরাতে অতিদ্রুত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানোর আপাতত বিকল্প কিছু আছে বলে মনে হয় না।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিষখালী নদী থেকে ২২ ঘণ্টা পর নিখোঁজ জেলের লাশ উদ্ধার ৩ জেলায় বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ ছত্তিশগড়ে ২৯ জন মাওবাদী নিহত হওয়ার পর এলাকায় যে ভয়ের পরিবেশ নেতানিয়াহুকে গাজার কসাই বললেন এরদোগান রাশিয়া ইউক্রেনের ৬৮টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে গুচ্ছ পরীক্ষা দিতে এসে জবি কেন্দ্রে অসুস্থ এক শিক্ষার্থী থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান কক্সবাজার সৈকতে নেমে হৃদরোগে পর্যটকের মৃত্যু বাকেরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হজের নিবন্ধনে দালাল চক্র থেকে সতর্ক করল সৌদি আরব বিএনপি আতঙ্কে ওবায়দুল কাদেরের ঘুমও ভেঙে যায় : সালাম

সকল