২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মোটরবাইক দুর্ঘটনায় ১০২৬ নিহত

সতর্কতাই একমাত্র সমাধান

-

গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ১০ মাসে বাংলাদেশে সহস্রাধিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মোট হতাহতের সংখ্যা দুই হাজার ৪৪৩। তাদের মধ্যে এক হাজার ২৬ জন নিহত হয়েছেন। তাদের ৭২৪ জন অর্থাৎ ৭০ শতাংশেরও বেশি ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়স্ক। এ সময়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন শিক্ষক আর ৩০৮ জন শিক্ষার্থী। এই যান্ত্রিক দ্বিচক্রযানের প্রচণ্ড ধাক্কায় ১২৪ জন পথচারী প্রাণ হারিয়েছেন। তারা মোট নিহতের প্রায় ১৩ শতাংশ। বেসরকারি রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি সহযোগী দৈনিক এ তথ্যগুলো প্রকাশ করেছে।
আলোচ্য প্রতিবেদনে দেশে অহরহ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, কিশোর-তরুণদের বেপরোয়া চালনা, অত্যন্ত উচ্চ গতিবেগসম্পন্ন মোটরসাইকেল কেনা ও চালনা দেশে সহজ হয়ে যাওয়া, সংশ্লিষ্ট আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং তা না মানার প্রবণতা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার মারাত্মক ত্রুটি, কর্তৃপক্ষের অপর্যাপ্ত নজরদারি, বড় যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, মোটরবাইক চালকের অদক্ষতা ও অস্থিরতা, স্বল্পগতির যান অপরিকল্পিতভাবে ও অদক্ষতার সাথে চালনা, সড়কে ডিভাইডার না থাকা, সড়ক নিরাপত্তার বিষয়ে প্রচার না করা, পরিবার থেকে সন্তানদের লাগামছাড়া আচরণকে প্রশ্রয় দেয়া, মোটরসাইকেল চালনাসহ নানা ক্ষেত্রে বেপরোয়া প্রবণতাকে অপরাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রভৃতি।
‘সড়ক নিরাপত্তা ফাউন্ডেশন’ বিশেষ করে মোটরসাইকেলের অব্যাহত দুর্ঘটনা এবং তজ্জনিত প্রাণহানি, পঙ্গুত্ববরণ বা আহত হওয়া ঠেকাতে ও কমাতে কয়েকটি সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে আছেÑ বেপরোয়া চালনা রোধে প্রশাসনিক কঠোরতা, অতিরিক্ত গতির মোটরবাইক নির্মাণ, বিক্রয় ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ, চালকদের দক্ষতা নিশ্চিতকরণ, গণপরিবহন চালকদের বেতনভাতা ও কর্মসময় সুনির্দিষ্ট করে দেয়া, যান চলাচল সুষ্ঠু করার জন্য সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়ানো, আইনের যথার্থ প্রয়োগ অবাধ ও পর্যাপ্ত করা, মোটরসাইকেল গমনের জন্য সড়ক-মহাসড়কে পৃথক লেন থাকা, স্বল্পগতিসম্পন্ন স্থানীয় যানবাহন সেসব রাস্তায় না চলা, সব সড়কে ডিভাইডার নিশ্চিত করা, মোটরবাইককে নিরুৎসাহিত করতে গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, রেলপথ ও নদীপথ সংস্কার ও সম্প্রসারিত করে সড়কপথে যানের চাপ হ্রাস করা, গণমাধ্যমে কার্যকর প্রচার চালিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করা, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর যথাযথ প্রয়োগ প্রভৃতি। আশা করা যায়, তাদের পরামর্শগুলো কর্তৃপক্ষের দ্বারা অবিলম্বে মূল্যায়িত ও বিবেচিত হবে।
ফাউন্ডেশন সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দ্রুতগতির বাস-ট্রাক-পিকআপ-কার-মাইক্রোবাস এবং অপেক্ষাকৃত স্বল্পগতির সিএনজি-ইজিবাইক-নসিমন-করিমন-ভটভটি প্রভৃতিকে দায়ী করেছে। তারা বলেছেন, সড়ক-মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের মতো বৃহৎ যানবাহনের চাপ কমানো জরুরি।
‘সময়ের চেয়ে জীবনের দাম বেশি’ এবং ‘একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না’Ñ কথা দুটো বহুল ব্যবহৃত হলেও দুর্ঘটনাকারীদের কাছে যেন এসব মূল্যবান বাণীও মূল্যহীন। এ দিকে, দেশে প্রতিদিন বিশেষত সড়কে দুর্ঘটনার নামে চলছে মৃত্যুর মিছিল। এ জন্য প্রধানত ওভার লোড, ওভার স্পিড এবং ওভারটেকিং দায়ী। সবার সতর্কতা ও দায়িত্ববোধ এবং সব ক্ষেত্রে আইনের কঠোর প্রয়োগ আর যথাসময়ে সচেতনতার বিকল্প নেই এ ক্ষেত্রে। আগে থেকেই জনমনে এ শঙ্কা প্রবল যে, মোটরসাইকেল বা মোটরবাইকের ব্যাপক সম্ভাবনা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা সত্ত্বেও সড়ক দুর্ঘটনার শিকার তারাই বেশি। তারই সত্যতা প্রমাণিত হচ্ছে। ইদানীং রাজধানীসহ সর্বত্র রাস্তাঘাটের জীর্ণদশা এবং যানবাহনের আধিক্য দুর্ঘটনার হার বাড়িয়ে দিয়েছে। ঈদের আনন্দকেও ম্লান করে দেয় সড়কে মৃত্যুর কাফেলা! অসংখ্য পরিবার এ কারণে কেবল হাহাকারই করছে না; পথেও বসতে হচ্ছে তাদের।
আমাদের প্রত্যাশা, আলোচ্য পরিসংখ্যান থেকে শিক্ষা নিয়ে সবাই সতর্ক হবেন, যেন সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস পায়।


আরো সংবাদ



premium cement
মুজিবনগরে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১৩ বাগেরহাটের রামপালে ট্রাকের চাপায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভে উত্তাল পূর্ব আফ্রিকায় প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা, কমপক্ষে ১৫৫ জনের প্রাণহানি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রশ্নবিদ্ধ তথ্য প্রচারের নিন্দা ডিআরইউর ভয়াবহ দুর্ঘটনা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন উগ্র ইসরাইলি মন্ত্রী শেরে বাংলার সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন হাত কাটা বন্দীর নেতানিয়াহুর সমালোচনা ইসরাইলের আলটিমেটাম, যা বলল হামাস রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থনের বিরুদ্ধে ব্লিংকেনের হুঁশিয়ারি ইতিহাস গড়া জয় পেল পাঞ্জাব

সকল