প্রকৃত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে
- ০৫ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চলমান মেগা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম থমকে গেছে বলে পত্রিকায় খবর এসেছে। বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলকতুল্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। অতীব গুরুত্বপূর্ণ মেট্রোরেলের কাজ চলছে নামেমাত্র। সরকারের চমক লাগানো ও চ্যালেঞ্জরূপী পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ না হলেও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল এবং কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের মতো মেগা প্রজেক্টের কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে শ্রমিকরা চলে যাওয়ায়। এ অবস্থায় বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকের সচিত্র প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিরাজমান অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যেও পদ্মা সেতু প্রকল্পের স্প্যান বসানো হচ্ছে এবং সেতুটির উল্লেখযোগ্য অংশ হয়ে উঠছে দৃশ্যমান, তখন খোদ রাজধানীতেই একাধিক মহাপ্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। আলোচ্য প্রতিবেদনের সূচনায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও সার্বিক জীবনযাত্রা থমকে গেছে। স্থবির হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। বিশেষত, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে গৃহীত মেগা প্রকল্পগুলোর প্রায় সব কাজই বন্ধ হয়ে গেছে। পরিস্থিতির কারণে, সংশ্লিষ্ট নির্মাণকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। বহুলালোচিত পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ অবশ্য এখনো পর্যন্ত আগের মতো চলছে।
বৃহত্তর রাজধানীর মেট্রোরেল লাইন-৬ চালু হওয়ার কথা ২০২২ সালের প্রথম দিকেই। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকার যানজট অনেকটা কমে আসবে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। নিকট অতীতে এর কাজের গতি কিছুটা মন্থর হয়ে পড়েছিল এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এটা চালু করার জন্য কাজের গতি পরে বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ ‘কালো মেঘের ছায়া’ পড়েছে এ ক্ষেত্রে। করোনা বিপর্যয়ে দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ চলতে থাকায় প্রকল্পটির কাজ চলছে সীমিত মাত্রায় এবং অনেক ক্ষেত্রে কোনো কাজই চলছে না। এ প্রকল্পে শ্রমিকদের সমাগম কিংবা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার আর দেখা যায় না। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন, ভাইরাস ঠেকাতে সাধারণ ছুটি চললেও ‘কাজ একদম বন্ধ হয়নি।’ হোম অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে বিশেষ করে বিদেশীরা নকশার কাজ করছেন বলে জানানো হয়েছে। তবে স্বীকার করা হয়েছে, শ্রমিকদের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এই প্রকল্পের জরুরি সভার কাজ করতে হচ্ছে ভিডিও কলের মাধ্যমে। অপর দিকে, দেশের প্রথম টানেল প্রকল্পের কাজ কর্ণফুলী নদীর তলায় হওয়ার কথা থাকলেও তা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, ‘আল্লাহ যদি এ দুর্যোগ থেকে রক্ষা করেন, তবেই কাজ পুরোদমে শুরু করা যাবে।’ চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কার্যক্রম এবার মাত্র দুই দিন সীমিত আকারে চালানোর পর বন্ধ হয়ে রয়েছে। বর্তমানে দেশী শ্রমিকরা বাড়িতে আর বিদেশীরা ঘরবন্দী। ২০২২ সালের মধ্যে এ প্রকল্প সম্পন্ন হওয়ার কথা এবং এর ৬১ শতাংশ কাজ বাকি রয়ে গেছে। রাজধানীর উত্তরাংশের কাওলা থেকে দক্ষিণাংশের কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজও বন্ধ এখন। চীনের অর্থসাহায্যে এর কাজ হওয়ার কথা এবং করোনাভাইরাসের দরুন সে ক্ষেত্রে বিলম্ব ঘটেছে।
বাংলাদেশের জন্য বিশেষত অবকাঠামোর উন্নয়ন সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং এ কাজে অত্যধিক বিলম্ব ঘটলে তাতে সরকারের ব্যয় ও জনগণের দুর্ভোগ-দুটোই বাড়বে। অন্য দিকে, দেশ ও জাতির স্বার্থে উন্নয়নকাজ হতে হবে কল্যাণমুখী, টেকসই ও নিরাপদ। ভাইরাসের তাণ্ডব চলে গেলে যথাশিগগির প্রকৃত উন্নয়নের মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ আবার শুরু করার ব্যাপারে সবাই আশাবাদী। তবে কোনো অবস্থাতেই জনগণের অর্থের অপচয়, দুর্নীতি, অনিয়ম প্রভৃতি যাতে প্রশ্রয় না পায়, তা নিশ্চিত করা চাই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা