০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫
`


চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান

ভালো-মন্দের পার্থক্য চিহ্নিত করা প্রয়োজন

-

চিকিৎসা মৌলিক অধিকার। অথচ রাষ্ট্র এ অধিকার নিশ্চিত করতে পারছে না। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সীমিত আয়োজনের কারণে চিকিৎসাসেবা নিতে সামর্থ্যবানেরা দৌড়াচ্ছেন বিদেশে। পড়শি ভারত যেন বাংলাদেশের মানুষের চিকিৎসা-বাজারে পরিণত হয়েছে। এ জন্য যারা ভারত যাচ্ছেন, তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কারণ, দেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে বড় ধরনের আস্থার সঙ্কট রয়েছে। তা ছাড়া সরকারি হাসপাতালগুলোয় রোগীর সাথে এমন অমানবিক আচরণ করা হয়Ñ যা অনেক সময় রোগী এবং তার অভিভাবকেরা হজম করতে পারেন না।
তবে এটাও ঠিক, দেশে চিকিৎসাব্যবস্থা থাকার পরও একটি দেশের মানুষ বিদেশে যেতে আগ্রহী হয়ে ওঠে নানা কারণে। এর মধ্যে মানসিক স্বস্তির বিষয়টিও গুরুত্ব পায়। বাংলাদেশে সরকারি ব্যবস্থাপনার বাইরেও এখন ভালো মানের অনেক হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। তাদের চিকিৎসাব্যবস্থাও উন্নত মানের, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারও রয়েছেন। তারপরও সাধারণ মানুষ সেসব হাসপাতালে যেতে পারেন না। কারণ, এ ধরনের হাসপাতালগুলোর খরচ প্রায় ভারতের সমান। অথচ আস্থার জায়গাটি এখনো ভারতের মানে পৌঁছতে পারেনি। তারপরও মধ্যবিত্তের চিকিৎসার জন্য অনেক ভালো মানের হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। তাদের চিকিৎসাসেবা মোটামুটি মানসম্পন্ন। চিকিৎসা খরচও সামর্থ্যরে মধ্যে। এ ধরনের হাসপাতালগুলো ভালো ডাক্তারও পাচ্ছে, রোগীর ভিড়ও কম নেই।
সমস্যা দাঁড়িয়েছে এমন কিছু হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির অস্তিত্ব রয়েছে, যারা কোনো মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা দেয়ার মতো অবস্থা তাদের নেই; তার ওপর প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির নামে এরা পুকুরচুরি করে চলেছে। কোনো ভালো যন্ত্রপাতি নেই, ভালো ডাক্তার নেই, ভালো ল্যাব টেকনিশিয়ান নেই। এরাই চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে যাচ্ছে। এ ধরনের প্রায় দুই ডজন হাসপাতাল ক’দিন আগে মোহাম্মদপুর এলাকায় চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। চিকিৎসাসেবা এতটা স্পর্শকাতর বিষয় যে, এর মান রক্ষা না করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বরং এরা চিকিৎসার নামে কুচিকিৎসার প্রসার ঘটাচ্ছে। এমন কিছু ক্লিনিক আছে, যেগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে প্রসূতিদের প্রলুব্ধ করে সিজার করে সন্তান ডেলিভারির জন্যই।
তাই চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর বিষয়, যেখানে মানুষের জীবন-মরণ সমস্যা জড়িত, সেখানে ন্যূনতম মান সংরক্ষণ হচ্ছে কি না তা রীতিমতো তদারকি করা জরুরি। তা ছাড়া সরকারি ব্যবস্থাপনার অপ্রতুলতার অভাব ঘুচাচ্ছেÑ এমন বেসরকারি কিন্তু মানসম্পন্ন হাসপাতালগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। অনেক সময় নীতিনিষ্ঠ ডাক্তার, নার্স ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতরা বিভিন্ন কারণে হয়রানির শিকার হন। তাই সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচিত, চিকিৎসা খাতে বেসরকারি উদ্যোগগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া। এর মধ্যে ভালো-খারাপ চিহ্নিত করাও জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল