ব্যক্তিজীবন ও রুচিবোধ
- মো: আবদুল গনী শিব্বীর
- ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ জীবনের সাথে রুচিবোধের রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। প্রখ্যাত সাহাবি রাবিকুলের শিরোমণি হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতÑ রাসূল সা: বলেন, ‘স্বভাবজাত বিষয় পাঁচটি। খাতনা করা, নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করা, গোঁফ খাটো করা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা’ (সহিহ বুখারি-৫৮৯১)।
উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা রা: থেকে বর্ণিতÑ তিনি বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘১০টি বিষয় স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত। গোঁফ খাটো করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেয়া, নখ কাটা, অঙ্গের গিরাসমূহ ঘষেমেজে ধৌত করা, বগলের পশম উপড়িয়ে ফেলা, নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করা, মলমূত্র ত্যাগের পর পানি ব্যবহার করা তথা ইস্তেঞ্জা করা। জাকারিয়া বলেন, মাসআব বলেছেন, ‘আমি ১০ নম্বরটি ভুলে গেছি। সম্ভবত তা হলো কুলি করা’ (সহিহ মুসলিম-২৬১)।
এ হাদিস দু’টির পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই, যে ১০টি বিষয় উল্লেখ রয়েছে তা ব্যক্তির জন্য সৌন্দর্য ও রুচিবোধের অন্যতম নিয়ামক। প্রত্যেক ব্যক্তি যদি নিয়মিত এ ১০টি আমল যথাযথভাবে পালন করে তাহলে ওই ব্যক্তির পোশাকের অভ্যন্তরীণ জীবন কত যে সুন্দর ও রুচিকর তা সহজেই বোধগম্য। ইসলাম সত্যিকার অর্থে তার সব অনুসারীকে এ ১০টি ফিতরাতের ওপর আমলের নির্দেশনা দিয়েছে।
মানুষের চালচলনে, কথাবার্তায় সৌন্দর্য ও রুচিবোধ ফুটে ওঠে। একেবারে দ্রুতবেগে হাঁটা কিংবা কুঁড়ো বুড়োর মতো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা অথবা হেলেদুলে হাঁটা এগুলো সুরুচি নয় বরং দৃষ্টিকটু। যত্রতত্র নিজের পাণ্ডিত্য জাহির করা, যত্রতত্র আঞ্চলিক ভাষার অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করা, ধূমপান, পানের পিক যত্রতত্র ফেলা, যত্রতত্র থুথু কফ ফেলা এগুলো একেবারেই দৃষ্টিকটু শ্রুতিকটু অসুন্দর ও অরুচিকর। ইসলাম এসব বিষয়ে তার সব অনুসারীকে সতর্ক করে নির্দেশনা দিয়েছে।
হাদিস শরিফে এসেছে, প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা: থেকে বর্ণিতÑ নবী সা: বলেন, ‘যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিমরা নিরাপদ, সে-ই প্রকৃত মুসলিম। আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে, সে-ই প্রকৃত হিজরতকারী’ (মুত্তাফাকুন আলাইহি)। অপর হাদিসে এসেছে, প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ রাবিকুলের শিরোমণি হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতÑ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমরা নিরাপদ থাকে সে ব্যক্তিই প্রকৃত মুসলিম। আর যাকে মানুষ তাদের জান ও মালের জন্য নিরাপদ মনে করে সে-ই প্রকৃত মুমিন’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, ৩৩)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা: থেকে বর্ণিতÑ হজরত রাসূলে করিম সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যে নীরব থাকে সে মুক্তি পায়’ (তিরমিজি-২৫০১)। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিতÑ তিনি বলেন, নবী করিম সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়, মেহমানের সম্মান করে এবং কথা বলার সময় উত্তম কথা বলে অথবা চুপ করে থাকে’ (সহিহ বুখারি-৬০১৮)।
অশ্লীল ও কটুবাক্য, মিথ্যা অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত কথা যারা বলে তাদের বেশির ভাগের মধ্যে মুনাফেকির আলামত বিদ্যমান। আর মুনাফেকরা সবচেয়ে বড় অভদ্র ও অরুচির ধারক-বাহক। ‘মুনাফিক চেনার লক্ষণ হলো চারটি। সেগুলো হলোÑ ক. যে কথায় কথায় মিথ্যা কথা বলে; খ. ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে; গ. তার কাছে কোনো জিনিস আমানত রাখলে খিয়ানত করে এবং ঘ. ঝগড়া-বিবাদে অশ্লীল গালিগালাজপূর্ণ শব্দ বলে’ (সহিহ বুখারি-৩৪)। হজরত উম্মে কুলসুম রা: বর্ণনা করেন, তিনি আল্লাহর রাসূল সা:কে বলতে শুনেছেন, ‘সে ব্যক্তি মিথ্যাচারী নয়, যে মানুষের মধ্যে মীমাংসা করার জন্য উত্তম কথা পৌঁছে দেয় অথবা সুন্দর কথা বলে’ (সহিহ বুখারি-২৬৯২)।
-মুহাদ্দিস, নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদরাসা, সোনাপুর, সদর, নোয়াখালী
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা