০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে...

রাস্তার দু’পাশে ব্রহ্মপুত্র নদ থাকায় খোলা শীতল হাওয়া সবসময়ই থাকে - ছবি - নয়া দিগন্ত

‘এসো নীপবনে ছায়াবীথি তলে’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গানের লাইনটি গুনগুন করে অনেকে গেয়ে উঠবে যখন প্রচণ্ড গরমে সারি সারি গাছের ছায়া প্রাণ জুড়িয়ে যাবে।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় এমনই প্রশান্তিময় এক জায়গা খেটে খাওয়া ও পথচারীরা তীব্র গরমে ক্লান্ত হয়ে আশ্রয় নেয়।

এ উপজেলার থানার সামনে থেকে জালালপুরের রাস্তার দু’পাশে রয়েছে সারি সারি নানা প্রজাতির গাছের সমারোহ। চারদিকে ছেয়ে আছে শুধু সবুজ ডালপালা। প্রায় অর্ধশত বছর হতে চলেছে এসব গাছের। রাস্তার দু’পাশে ব্রহ্মপুত্র নদ থাকায় খোলা শীতল হাওয়া সবসময়ই থাকে। পুরনো এসব গাছের শীতল ছায়া এখনো পথিকদের দিচ্ছে গরমে একটু শান্তির পরশ। এ পরম শীতল হাওয়ার সংস্পর্শে এলে নিমিষেই জুড়িয়ে যাবে যে কারো প্রাণ।

বর্তমানে গ্রীষ্মকালে এসেও মহান সৃষ্টিকর্তার দান প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যে মোহিত হচ্ছে এখানকার সবুজ গাছের পাতায় পাতায়। যেন শীত ঋতুর শৈত্য প্রবাহের মতো।

কটিয়াদী উপজেলার মডেল থানার সামনে ব্রহ্মপুত্র নদের বাঁধে এমনি মনোমুগ্ধকর গাছপালা রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে যেন এই সবুজ গাছপালা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কটিয়াদী পৌর এলাকার কিছু অংশ স্পর্শ করেছে এই সবুজ গাছপালা। বাকিটুকু জালালপুর ইউনিয়নের সীমানায়। প্রায় আধা কিলোমিটার পথ জুড়ে স্বাধীনতার পর এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়। বাঁধ টেকসই করার জন্য তৎকালীন জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মরহুম মুজিবুর রহমান ভুঁইয়া রাস্তার দু’পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল করার পরিকল্পনা গ্রহণে উদ্যোগী হন। এরপরে রেইনট্রি গাছের চারা রোপন করা হয়। একসময় তা রূপ নেয় সবুজ বনে। বর্তমানে অযত্ন আর অবহেলা ও বেদখলে সরকারি অনেক গাছ মরে গেছে। কিছু আছে আধমরা অবস্থায়। তবুও কিছু কিছু এখনো টিকে আছে, যা আকৃষ্ট করার মতো।

কটিয়াদী-২

পথচারী আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়ি পাশের উপজেলা পাকুন্দিয়ায়। একসাথে এতো গাছ আগে দেখিনি কখনো। তীব্র দাবদাহে এখানে এসে শীতল ছায়ার স্পর্শ পেয়ে শান্তি পেলাম। প্রাণ জুড়িয়ে গেলো। যখনই আসি একটু দাঁড়িয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি।’

কয়েকজন রিকশাচালক জানান, ‘যখনই এই রাস্তা দিয়ে যাই খুবই ছায়া পাই। মাঝে মধ্যে রিকশার মধ্যে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এই তীব্র গরমের মধ্যে এই জায়গাটা আমাদের জন্য আল্লাহর অশেষ রহমত।’

তবে এখানকার সবুজ গাছপালার সৌন্দর্য রক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট দফতর ও স্থানীয় প্রশাসন উদাসীন। গাছের গোড়া দখল করে আছে অবৈধ বন উজাড়কারী দখলদার। বেদখল হয়ে আছে সরকারি অনেক খাস জমি। এভাবেই সরকারি জায়গা ও সবুজ গাছপালা ক্রমেই বিলুপ্তি হওয়ার পথে।

কটিয়াদী-৩


আরো সংবাদ



premium cement