২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেফতার

ধর্ষণ
আটক লিটন - ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে রাস্তা থেকে জোর করে ধরে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে লিটন (২৪) নামের এক যুবককে রোববার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ধর্ষিতার পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের প্রভাকরদী এলাকার এক দরিদ্র কাঠমিস্ত্রির কন্যা নবম শ্রেণীর ছাত্রী (১৪) গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে একই এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৪) ও মো: আলী মিয়ার ছেলে সাইফুল (২৫) তাকে জোর করে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে পার্শ্ববর্তী মোবারক মিয়ার পরিত্যক্ত গরুর খামারে নিয়ে যায়। সেখানে সাইফুলের সহযোগিতায় লিটন মিয়া মেয়েটিকে ধর্ষণ করে তাকে ঘটনাস্থলে ফেলে চলে যায়। পরে মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে ঘটনাটি জানালে তারা ধর্ষক লিটন ও সহযোগী সাইফুলের বাবাকে জানান।

এ ঘটনায় স্থানীয় ভাবে সমাধান করে দিবে বলে একটি প্রভাবশালী মহল তালবাহানা করে। তারা ধর্ষিতাকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপার প্রস্তাব করে বলে ধর্ষিতার মা জানান। পরে ধর্ষিতার মা ধর্ষক লিটন ও সহযোগী সাইফুলের বিরুদ্ধে রোববার রাতে আড়াইহাজার থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ধর্ষক লিটনকে গ্রেফতার করে।

এদিকে, অভিযোগ করা হচ্ছে, প্রভাবশালী মহলটি থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই ফাইজুর রহমানের মাধ্যমে থানায় বিচারের মাধ্যমে আপস করার চেষ্টা চালিয়েছে।

আড়াইহাজার থানার সেকেন্ড অফিসার ফাইজুর রহমান ধর্ষক লিটনকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে জানান, বিবাদীদের এক ঘন্টা সময় দেয়া হয়েছে যদি ধর্ষিতাকে বিয়ে করে তবেই লিটনকে ছাড়া যেতে পারে।

আরো পড়ুন :
টাঙ্গাইলে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ : ৩ জনের স্বীকারোক্তি, ৩ জন রিমান্ডে
মালেক আদনান, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইল শহরের ডিসি লেকের পাড়ে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেছে বখাটেরা। তারা ওই নারীকে শহরের একাধিক স্থানে নিয়ে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার ভোরে এ ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজন ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। বাকি তিনজনকে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।

ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে পৌর এলাকার চরজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সকালে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- শহরের কোদালিয়ার আলমগীর হোসেনের ছেলে ইউসুফ, আব্দুর রশিদের ছেলে রবিউল ইসলাম রবিন, ফজলু মিয়ার ছেলে মফিজ, রকিবুল ইসলামের ছেলে তানজিরুল ইসলাম তাছিন, দেওলার আবুল হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম ও বিশ্বাস বেতকার বাদশা মিয়ার ছেলে ইমন।

পুলিশ জানায়, ওই নারী মির্জাপুরের গোড়াইয়ে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তার স্বামী ওই এলাকায় একজন নির্মাণ শ্রমিক। তাদের গত ১০ মাস আগে বিয়ে হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ওই নারী তার স্বামীকে নিয়ে কালিহাতীর পিত্রালয় থেকে মির্জাপুর কর্মস্থলে ফিরছিলেন।

কালিহাতী থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে তারা রাত ১০টার দিকে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাসটার্মিনালে এসে নামেন। এ সময় তিন বখাটে ওই নারীর স্বামীকে ডেকে দূরে নিয়ে বেদম মারপিট করে আটকে রাখে। অন্যদিকে দলের কয়েকজন ওই নারীকে জোরপূর্বক লেকের পাড়ে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

পরে তারা ওই নারীকে অপর বখাটেদের হাতে তুলে দেয়। তারা তাকে কোদালিয়া এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই নারীর স্বামী রাত ১২টার দিকে বখাটেদের কবল থেকে কৌশলে পালিয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় গিয়ে ওসির কাছে ঘটনা খুলে বলেন। পরে পুলিশের চারটি দল বিভক্ত হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নারীটিকে উদ্ধারসহ ধর্ষণের সাথে জড়িত অভিযোগে মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করে।

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান জানান, ঘটনা জানার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ইউসুফ, রবিন ও মফিজ ধষর্ণের কথা স্বীকার করেছে। উজ্জল ও হাসান নামে তাদের দুইজন সহযোগীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নারায়ন চন্দ্র সাহা জানান, ভিকটিমকে পরীক্ষার জন্য গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা: জাকিয়া সুলতানাকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে গণধর্ষণের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে দুপুরে ধর্ষিত ওই নারীর স্বামী বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত ছয়জন ও পলাতক উজ্জল ও হাসানসহ মোট আটজনকে আসামী করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ মোশারফ হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতদের শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলেল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে তাদের মধ্য থেকে তিনজন সন্ধ্যায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তারা হচ্ছে ইউসুফ, রবিউল ইসলাম রবিন ও জাহিদুল ইসলাম। তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন কুমার সরকার। অপর তিন আসামিকে তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ধর্ষিত নারী ২২ ধারায় ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে আদালতে একই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement