২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মালির ছেলে থেকে ফুটবলের ‘গোল্ডেন বয়’ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো

ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো - ফাইল ছবি

ফুটবল সাম্রাজ্যের এক মুকুটহীন রাজার নাম ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। বছরের পর বছর ধরে, যুগ পেরিয়ে শাসন করে চলেছেন ফুটবল বিশ্ব, মিলেছে ইতিহাসের অন্যতম সেরাদের একজন- এই স্বীকৃতিও। দুই পায়ের জাদুতে মুগ্ধ করে রেখেছেন তিনি, সমালোচককেও বাধ্য করেছেন প্রশংসা করতে।

রোদেলা আকাশেও তো ছায়া আসে, মায়াবী চাঁদও তো ঢেকে যায় মেঘে। সুবাসে সুন্দর গোলাপ, তাতেও কিন্তু কাঁটা আছে; জীবনেও তেমন উত্থান-পতন আছে। পতন আছেন বলেই উত্থান এতো সুন্দর, খারাপ আছে বলেই তো ‘সুন্দর’ শব্দটা এতো মনোমুগ্ধকর। তেমনি নানা সময়ে উত্থান-পতনও সঙ্গী হয়েছে রোনালদোর ললাটে। উত্থান-পতন সঙ্গী করেই ছুটে চলেছেন অবিরাম ধারায়, থামতে নয়, রোনালদো করতে চান লড়াই।

রোনালদো লড়াই করেছেন পর্তুগালে, রোনালদো লড়াই করেছেন ইংল্যান্ডে, লড়াই করেছেন স্পেনে। শুধু লড়াই করেননি, জিতেছেন, হয়েছেন বিজয়ী। কখনো ব্যর্থ হলেও থেমে থাকেননি, পরিশ্রমকেই করেছেন পুঁজি। কেননা জীবনের বাস্তবতা খুব ছোট বেলাতেই রোনালদোকে পরিশ্রমী হতে শিখিয়ে দিয়েছে, শিখিয়েছে বাঁচতে হলে লড়াই করতেই হবে, সফল হতে চেষ্টার বিকল্প নেই।

রোনালদোর লড়াইয়ের শুরু অনেক আগেই, সেই ছোটবেলা থেকেই লড়াই করে আসছেন তিনি। একজন মদ্যপ মালির ছেলে থেকে বিশ্ব ফুটবলের গোল্ডেন বয়। নিশ্চয়ই এমনি এমনিই হননি। কিংবা ক্ষুধার যন্ত্রণায় অন্যের বাড়ি বাবুর্চির কাজ করা মায়ের সন্তান থেকে বিশ্বের অন্যতন সেরা ধনী ক্রীড়াবিদ তো লড়াই করেই হতে হয়েছে তাকে। ফোবর্সের তথ্যমতে ২০২২ সালের মাঝেই ১২৪ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করেছেন এই পর্তুগিজ সুপারস্টার।

এতো সম্পদের মালিক হবার পরও রোনালদো ভুলে যাননি তার অতীতকে। ম্যাকডোনাল্ডসের এক রেস্টুরেন্ট কর্মচারীর নাম ছিল এডানা, প্রায়ই তীব্র ক্ষুধা নিয়ে ছোট্ট রোনালদো চলে যেতেন তার কাছে। জিজ্ঞেস করতেন, ‘খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত কিছু কি বেঁচে আছে?’ এডানা ওই ক্ষুধার্ত রোনালদোকে চেষ্টা করতেন কিছু খেতে দিতে। বিলিয়নিয়ার হওয়ার পরে সেই এডানাকে খুঁজে বেরিয়েছেন এই রোনালদোই। শুধুই কি লড়াই আর পরিশ্রম? কৃতজ্ঞতা, শব্দটাও যেনো রোনালদোর অতি প্রিয়।

ছোট্ট এক টিনের কুঁড়েঘর ছিল সম্বল, সেখান থেকেই এখন একটা বিজ্ঞাপনের জন্যও তার পেছনে ব্যয় শত মিলিয়ন, ভাবা যায়! অথচ রোনালদোর দৌঁড় শেষ হয়ে যেত ১৫ বছর বয়সেই, তার স্বপ্ন ভেঙে যেত অকালেই। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই ধরা পড়ে হৃদরোগ। দুটো পথ দেখালেন চিকিৎসক; হয়তো খেলা ছাড়তে হবে, নয়তো করতে হবে অস্ত্রোপচার। শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্তই হয়, আর রোনালদো হয়ে উঠেন আজকের রোনালদো।

সোনার চামচ মুখে রাজার মতো জন্ম না নিলেও, ছোট থেকেই রাজা ছিলেন রোনালদো। ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সালে পর্তুগালের এক মফস্বল শহরে জন্মগ্রহণের পর আমেরিকার ৪০তম রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রিগানের নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন তার বাবা।

আজ ছিল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ৩৯তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন রোনালদো। আপনি জন্ম না নিলে হয়তো ফুটবলই অপূর্ণ থেকে যেতো।


আরো সংবাদ



premium cement