সামনে ২১১ রানের বিশাল লক্ষ্য, ২.১ ওভারেই নেই ২ উইকেট। সেখান থেকেও কুমিল্লা জয় নিয়ে ফিরবে- এমনটা হয়তো খুব কম মানুষই ভেবেছিলেন। তবে ক্রিকেট যে চির অনিশ্চয়তার খেলা, সেটাই হয়তো মনে করিয়ে দিলেন জনসন চার্লস ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। এই দু’জনের ব্যাটে ভর করে ৭ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। একইসাথে প্রথম বিপিএল সেঞ্চুরিটাও পেয়ে যান চার্লস।
মঙ্গলবার সিলেটের এ ম্যাচে শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না কুমিল্লার। দ্বিতীয় বলেই চোটাক্রান্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন লিটন দাস। অথচ এত বড় এই লক্ষ্য তাড়ায় লিটনেই ভরসা খুঁজছিল সাধারণ সমর্থকেরা। লিটনের স্থলে ওয়ানডাউনে নামা ইমরুল কায়েসকে ৫ রান করার পরই ফেরান শফিকুল ইসলাম। তবে অপরপ্রান্তে শুরু থেকেই সহজাত ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন রিজওয়ান।
রিজওয়ানের ব্যাট যেন হয়ে হয়ে উঠে খাপছাড়া তলোয়ার, শুরু থেকেই কচুকাটা করতে থাকেন খুলনা টাইগার্সের বোলারদের। তার ব্যাটে ভর করেই জয়ের পথে থাকে কুমিল্লা, যেখানে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন জনসন চার্লস। মাত্র ২৪ বলে অর্ধশতক ছুঁয়ে ফেলেন রিজওয়ান, চার্লসের অর্ধশতক আসে ৩৫ বলে। সেইসাথে দু’জনে মিলে গড়ে তোলেন শতাধিক রানের জুটি, ৭৩ বলে ১২২ রান আসে তাদের যুগলবন্দীতে।
১৩.৪ ওভারে দলীয় সংগ্রহ যখন ১৪৪ রান, তখন ৮ চার আর ৪ ছক্কায় ৩৯ বলে ৭৪ রান করে নাসুম আহমেদের শিকার হন রিজওয়ান। তবে তাতে কুমিল্লার জয়ের পথে বাধা আসেনি, বলা যায় বাধা আসতে দেননি জনসন চার্লস। পরের মাত্র ১৮ বলে চার্লস তুলে নেন তার দ্বিতীয় অর্ধশত রান। অর্থাৎ ৫৩ বলে শতক স্পর্শ করেন এই ক্যারিবীয় ব্যাটার। ছক্কা হাঁকিয়েই তিন অংকের ঘরে পৌঁছান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫ চার আর ১১ ছক্কায় ৫৬ বলে ১০৭ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন চার্লস। কুমিল্লা জিতে যায় ১০ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই।
এর আগে দেখা মেলে বিধ্বংসী তামিম ইকবালের। বাইশগজে ব্যাট হাতে টিকে যাওয়া তামিম কতটা ভয়ংকর, তার দেখা মেলে আজ। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রায় করে ফেলছিলেন বিপিএলে নিজের তৃতীয় শতকটাও! যদিও শেষ পর্যন্ত তা আর পাওয়া হয়নি; ৬১ বলে ৯৫ রান হয়েছে সঙ্গী। শতক মিস করেছেন সতীর্থ শাইহোপও, ৫৫ বলে ৯১ রানে অপরাজিত ছিলেন এই ক্যারিবীয়। এই দু’জনের এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ওভার শেষে ২ উইকেটে ২১০ রান আসে খুলনার স্কোরবোর্ডে।
এদিন খুলনার হয়ে টস করতে আসেননি ইয়াসির আলী, তার বদলে নেতৃত্বের ঝান্ডা দেখা যায় ক্যারিবীয় শাইহোপের হাতে। তবে টসে জেতা হয়নি শাইহোপের, টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে তার দল খুলনা টাইগার্স। ব্যাট করতে নেমে মধ্যম মানের শুরু পায় খুলনা, পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে আসে ৩৭ রান। ৫ বলে ১ রান করে নাসিম শাহের শিকার হন মাহমুদুল হাসান জয়।
সেখানেই যেন থমকে যায় কুমিল্লার উইকেট উদযাপন। দ্বিতীয়বার যখন উইকেট উদযাপনের সুযোগ আসে, ততক্ষণে খেলা শেষ ওভারে গড়িয়েছে। শেষ ওভারের প্রথম বলে মোসাদ্দেকের শিকার হয়ে ফিরেন তামিম ইকবাল। অবশ্য আউট হওয়ার আগে যা করার করে দিয়ে গেছেন এই ব্যাটার, শাইহোপের সাথে গড়ে তুলেছিলেন ১০৭ বলে ১৮৪ রানের জুটি।
যদিও তামিম শুরুটা করেছিলেন দু’জনে বেশ ধীর গতিতে, তবে শাইহোপ ব্যাট করেন বেশ সাবলীলভাবে। ৪৫ বলে অর্ধশতক স্পর্শ করেন তামিম। বিপরীতে মাত্র ২৭ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন শাইহোপ। তবে শেষদিকে এসে দু’জনেই খেলতে থাকেন হাতখোলে, মারতে থাকেন জোরেশোরে। বিশেষ করে তানভীর ইসলামের এক ওভারে ২৭ রান নিয়ে নিজের রানের গতিটা বাড়িয়ে নেন তামিম।
একটা সময় মনে হচ্ছিল জোড়া সেঞ্চুরি হয়তো দেখতে যাচ্ছে বিপিএল। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি, এমনকি একক শতকও আসেনি। শেষ ওভারে ১১ চার ৫ ছক্কায় তামিম আউট হন ৬১ বলে ৯৫ রানে। আর শাইহোপ অপরাজিত থাকেন ৫ চার আর ৭ ছক্কায় ৫৫ বলে ৯১ রানে। আর শেষে ৪ বলে ১২ রান আসে আজম খানের ব্যাটে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা