১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


লুইসের ক্যাচে স্বপ্নভঙ্গ কলকাতার

লুইসের এই ক্যাচেই স্বপ্নভঙ্গ কলকাতার - ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেটে বলা হয়, ক্যাচ ম্যাচ জেতায়। সেটা যে কতটা খাঁটি কথা তা বোঝা গেল বুধবার অনুষ্ঠিত কলকাতা-লখনউ ম্যাচে। হারতে থাকা ম্যাচ জয়ের কাছে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটার রিঙ্কু সিংহ। কিন্তু তিন রান বাকি থাকতে তার দুরন্ত ক্যাচ ধরলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের এভিন লুইস। এ বারের আইপিএলের অন্যতম সেরা ক্যাচ। সেই ক্যাচেই স্বপ্নভঙ্গ হলো শ্রেয়স আয়ারদের।

শেষ ওভারে জেতার জন্য দরকার ছিল ২১ রান। ব্যাট করছিলেন রিঙ্কু। মার্কাস স্টোইনিসের প্রথম বলেই চার মারেন তিনি। তার পরের দু’টি বল গিয়ে পড়ে গ্যালারিতে। তিন বলে দরকার ছিল পাঁচ রান। চতুর্থ বলে দু’রান নেন রিঙ্কু। দু’বলে ৩ রান দরকার ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল ম্যাচ জিতে যাবে কেকেআর। তখনই হলো সেই অবিশ্বাস্য ঘটনা।

পঞ্চম বল অফ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন স্টোইনিস। কভারের উপর দিয়ে মারতে যান রিঙ্কু। বল ব্যাটে লেগে উপরের দিকে উঠে যায়। দু’জন ফিল্ডার ছুটে আসছিলেন। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছিল দুই ফিল্ডারের মাঝে বল পড়ে যাবে। সবাইকে অবাক করে শেষ মুহূর্তে ঝাঁপ দেন লুইস। ১৭ মিটার ছুটে এসে মাটির একটু উপরে বাঁ হাতে বল তালুবন্দি করেন। সেই ক্যাচ দেখে বিশ্বাস হচ্ছিল না কারও। ব্যাটার রিঙ্কু থেকে বোলার স্টোইনিস সবাই হতবাক হয়ে যান। সেই ক্যাচেই ম্যাচ জেতার আশা শেষ হয়ে যায় কলকাতার। শেষ বলে আউট হয়ে যান উমেশ। দু’রানে ম্যাচ হারে কলকাতা। সেইসাথে আইপিএলের প্লে-অফে ওঠার আশা শেষ হয়ে যায় শ্রেয়সদের।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিংয়েই ২১০ রান তুললেন ডি’কক ও রাহুল। রচিত হলো আইপিএল ইতিহাসে সর্বাধিক রানের ওপেনিং জুটির রেকর্ড। ৭০ বলে ১৪০ রানে অপরাজিত থাকলেন কুইন্টন। চলতি আসরে এটাই ব্যক্তিগত সর্বাধিক স্কোর। অধিনায়ক রাহুল ৫১ বলে নট আউট থাকলেন ৬৮ রানে। দু’জনের দাপটে অসহায় দেখাল শ্রেয়স আয়ারের দলকে।

অঙ্কের বিচারে প্লে-অফের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে বড় ব্যবধানে জেতা জরুরি ছিল কলকাতার। তার জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল বেগুনি জার্সিধারীরা। কে জানত, বুধবারই এমন তাণ্ডবের সামনে পড়তে হবে উমেশ-সাউদিদের। ফিল্ডাররাও সাহায্যের হাত বাড়াতে পারলেন না। ১২ রানে কুইন্টনের ক্যাচ ফেলেন আইপিএলে অভিষেক হওয়া অভিজিৎ তোমার। সেটাই ঘোর সংকটে ফেলে দেয় নাইটদের। মরণ-বাঁচন ম্যাচে ক্যাচ পড়া যে কতটা আত্মঘাতী হতে পারে, তার সেরা উদাহরণ হয়ে উঠল বাঁহাতি ওপেনারের বিধ্বংসী ইনিংস। নাইট বোলারদের নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করলেন প্রোটিয়া তারকা। মারলেন ১০টি চার ও ১০টি ছয়। অর্থাৎ, স্রেফ বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি থেকেই এল ১০০ রান! আইপিএল কেরিয়ারে ডি’ককের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এল মাত্র ৫৯ বলে। মারমুখী রাহুলও সারাক্ষণ যোগ্য সঙ্গত করে গেলেন ডি’কককে। ৪১ বলে অর্ধশতরানে পৌঁছন তিনি। এই নিয়ে ৩৪বার আইপিএলে পেরলেন পঞ্চাশের গণ্ডি। আইপিএলে টানা পাঁচ মরশুম পাঁচ শ'র ওপর রান করলেন রাহুল। এদিন তার ইনিংসে ছিল চারটি ছয় ও চারটি চার।

কলকাতার প্রয়োজন ছিল শুরুতে ঝড় তোলা। সেই লক্ষ্যে কলকাতা এদিন নেমেছিল নতুন ওপেনিং জুটিতে। কিন্তু ইনিংসের চতুর্থ বলেই ফিরলেন বেঙ্কটেশ আয়ার (০)। মহসিন খানের বলে অসাধারণ দক্ষতায় তাঁর ক্যাচ তালুবন্দি করলেন ডি’কক। অভিজিৎ তোমারও (৪) শিকার হলেন মহসিনের। ৯ রানের মধ্যে জোড়া ওপেনারকে খুইয়ে চাপে পড়ে যায় কলকাতা। তবে তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন নীতীশ রানা ও শ্রেয়স আয়ার। তারা জুটিতে তোলেন ৫৬ রান। নীতীশ ৪২ রানে আউট হলেও শ্রেয়স অর্ধশতরান পূর্ণ করেন ২৯ বলে। বিলিংস চালিয়ে খেলে ৩৬ রান যোগ করেন। রাসেল ৫ রানে আউট হন। রিঙ্কু সিংয়ের ১৫ বলে ৪০ রানের ইনিংসেও শেষ রক্ষা হয়নি।
সূত্র : আনন্দবাজার ও বর্তমান


আরো সংবাদ



premium cement