১৯৯২ বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে কেন লাফ দিয়েছিলেন মিয়াঁদাদ?

ক্রিকেট ইতিহাস কখনো ভুলবে না ১৯৯২ সালের কিরণ মোরে বনাম জাভেদ মিয়াঁদাদের বিতর্কিত মজাদার সেই ঘটনা। যখন জাভেদ মিয়াঁদাদ ব্যাট করছিলেন ও কিরণ মোরে তার উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়েছিলেন। একটা সময় জাভেদ মিয়াঁদাদকে রান আউট করার সুযোগ পান মোরে। কিন্তু আউট না হওয়ার পরে মোরের উপর বিরক্ত হয়ে মাঠের মধ্যেই ব্যাট হাতে লাফাতে শুরু করেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। তখন মিয়াঁদাদ নাকি মোরেকে উদ্দেশ্য করেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন।

ওই ঘটনার স্মৃতিচারণ করলেন ভারতের সাবেক উইকেটরক্ষক কিরণ মোরে। জানালেন ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপের ওই স্মরণীয় ঘটনা। ম্যাচের ২৫তম ওভারের ঘটনা, তখন ভারতের রান তাড়া করছে পাকিস্তান। উইকেটের পিছন থেকে মোরে মিয়াঁদাদকে কিছু একটা বলে চলেছেন। এমন সময় মিয়াঁদাদকে একটা রান আউট করার সুযোগ আসে। কিন্তু বেঁচে যান মিয়াঁদাদ। এরপরেই মাঠের মধ্যেই লাফাতে শুরু করেন।

কী হয়েছিল ওই দিন। প্রায় ২৯ বছর পরে মাঠের ওই ঘটনা সকলের সামনে তুলে ধরলেন কিরণ মোরে। ভারতের সাবেক উইকেটরক্ষক ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেস বোলার কার্টলে অ্যামব্রোজের ইউটিউব চ্যানেলে এসে জানান, ‘জাভেদ আমার খুব ভালো বন্ধু। তবে সেই ম্যাচটি আমরা ১৯৯২ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলছিলাম। তাই চতুর্দিকে ভারত নিজেদের মতো করে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে তৈরি হয়ে এসেছিল। এটা কানায় কানায় ভর্তি না থাকলেও দর্শকরা প্রচণ্ড আওয়াজ করছিলেন এবং আমরা চাপে ছিলাম। আমাদের ভারতে ফিরে যাওয়া কঠিন ছিল।’

এরপর তিনি জানান, ‘আমরা যখন ব্যাট করতে গিয়েছিলাম, তারা তখন আমাদের অনেক কিছু বলেছিল। আমরা যখন পপিং ক্রিজে গিয়েছিলাম, মইন খান, জাভেদ মিয়াঁদাদ, সেলিম মালিক ছিলেন। সবাই আমাদের ঘিরে ছিলেন। ইমরান (খান) নিজে থেকে কিছু একটা করতেন। সুতরাং আমরা যখন মাঠে নামলাম, আমি তাদের আবার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দলের নেতৃত্বে ছিলাম। আমি এটি শুরু করেছিলাম, তারপরে শচিন টেন্ডুলকার, কপিল দেব, সবাই উত্তেজিত হয়েছিল। আমরা ওই ম্যাচটি জিততে চেয়েছিলাম। এবং আমি আমির সোহেলের সাথে কথা বলতে শুরু করি, এবং এরপরে জাভেদ মাঠে আসেন।’

মোরে জানান, ‘জাভেদ মিয়াঁদাদের পিঠে চোট ছিল। আমি বোলারদের সঙ্গে কথা বলেই চলি, ওর সামনে বল দাও, ওকে শর্ট বল করবেন না। যদি ওর পিঠে সমস্যা রয়েছে, তোমরা ওকে শর্ট বল করলে ও খুব সহজে কাট শট মারবে। তাই শুনে সে বিরক্ত হয়ে উঠছিল। হতাশ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। তিনি বলটি মিড-অফ এবং কভারে চালানোর চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু বলটি যাচ্ছে না।’

কিরণ মোরে আরো বলেন, ‘হিন্দিতে, জাভেদ মিয়াঁদাদ বলছিলেন,‘ চিন্তা করবেন না আমরা এই ম্যাচটি সহজেই জিততে পারি, জবাবে আমি বলেছিলাম, ‘জাহান্নামে যাও, আমরা এই ম্যাচটি জিতবই। শচিন টেন্ডুলকার লেগ সাইডে আবেদন করেছিলেন। আমি ভাবলাম ওকে পেছনে ফেলেছে। আমি আউটের আবেদন করি এবং জাভেদ আমাকে কথা শোনায়। আমি ওকে চুপ থাকতে বলি। সেও আমায় একই কথা শোনায়। এরপর একটা রান আউটে আবেদন হয়, আমি লাফিয়ে আবেদন করতে থাকি। এরপর সে আমায় নকল করতে থাকে। এরপর আমি উইকেটের পেছনে গিয়ে গ্লাভস দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রেখে ওকে কথা শোনাই। ওই সময় উইকেটের মাইক ব্যবহার হতো। এরপরে আম্পায়ার ডেভিড সেফার্ড আসেন এবং মিয়াঁদাদকে বলেন, এরপর এই রকম করলে মাঠের বাইরে বের করে দেব।’

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস