২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুরন্ত চট্টগ্রামে উড়ে গেল খুলনা

দুরন্ত চট্টগ্রামে উড়ে গেল খুলনা - ছবি : নয়া দিগন্ত

ঠিক যেন আগের ম্যাচেই প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই বেক্সিমকো ঢাকাকে ৮৮ রানে অল আউট করেছিল গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। মাত্র এক উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রাম জয়ের বন্দরে পৌঁছেছিল হেসে-খেলে। এবার সেই চট্টগ্রামের শিকার সাকিব-রিয়াদের জেমকন খুলনা।

খুলনার সমৃদ্ধ ব্যাটিং লাইনআপকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ঝলসে উঠেছিল চট্টগ্রামের মোস্তাফিজ, নাহিদুল ও তাইজুলরা। ১৭.৫ ওভারে মাত্র ৮৬ রানে অল আউট হয় খুলনা। জবাবে চট্টগ্রাম ৯ উইকেটের দাপুটে জয় পায় ১৩.৫ ওভারে, মাত্র এক উইকেট হারিয়ে।

টুর্নামেন্টে টানা দুই জয়ে রীতিমতো উড়ছে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম। সেখানে তিন ম্যাচের শেষ দুটিতে হেরে অনেকটাই ব্যাকফুটে খুলনা। প্রথম ম্যাচেও হারতে হারতে জিতেছিল খুলনা। আর সেটা বরিশালের বিরুদ্ধে। শেষ ওভারে মিরাজের বলে আরিফুলের চারটি ছক্কা খুলনাকে পাইয়ে দিয়েছিল অবিশ্বাস্য এক জয়। কিন্তু সেই জয়ের ধারাটা টানা দুই ম্যাচে ধরে রাখতে পারেনি সাকিবরা। বল হাতে সাকিব মোটামুটি পারফরম্যান্স করলেও ব্যাট হাতে ব্যর্থ সব ম্যাচেই।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকেছে খুলনা। মোস্তাফিজদের বোলিং তোপে মাত্র ৮৮ রানে গুটিয়ে যায় খুলনা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে আগের ম্যাচের মতোই দারুণ শুরু চট্টগ্রামের। দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার সাবলিলভাবে রানের চাকা সচল রাখেন। শুরুর দিকে সৌম্য সরকার ক্রিজে সেট হতে পারছিলেন না। ফলে রানের চেয়ে বল খরচ করেছেন বেশি। তবে অপর প্রান্তে লিটন ছিলেন বেশ দুরন্ত। দারুণ দারুণ কিছু বাউন্ডারিতে চট্টগ্রামের রান বাড়তে থাকে তরতর করে। তৃতীয় ওভারে হাসান মাহমুদের বলে টানা চারটি চার হাঁকিয়ে কাঁপিয়ে দেন লিটন। ষষ্ঠ ওভারে সাকিবের ওভারে হাকান তিনি এক বাউন্ডারি। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে চট্টগ্রামের রান আসে ৩৯।

এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল উদ্বোধনি জুটিতেই জয় পাবে চট্টগ্রাম। স্বীকৃত বোলাররা যেখানে ব্যর্থ সেখানে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ব্রেক থ্রু আনেন দলীয় ৭৩ রানের মাথায়। ততক্ষণে জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম। রিয়াদের বলে আরিফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। ২৯ বলে তিনি করেন ২৬ রান। চারটি চার হাঁকিয়েছেন, নেই কোনো ছক্কা।

জয়ের জন্য বাকি কাজটুকু মুমিনুল হককে সাথে করে সেরেছেন লিটন দাস। ৪৬ বলে ৫৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন লিটন। সাত বলে ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল। খুলনার বোলিংয়ে বলতে গেলে সাকিবই সফল। ৪ ওভারে দিয়েছেন ১৪ রান, পাননি উইকেটের দেখা। তবে তিনিই একমাত্র বোলার, একটি নিয়েছেন মেইডেন।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙেছে খুলনার ব্যাটিং দেয়ার। মোস্তাফিজের পেস, সাথে তাইজুলের স্পিন ঘূর্ণি, মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ-সাকিবরা। প্রথম ওভারেই রান আউট ওপেনার এনামুল হক বিজয়। ধীরে-সুস্থে খেললেও টিকতে পারেননি চলমান টুর্নামেন্টে বরাবরই ব্যাট হাতে অনুজ্জ্বল থাকা সাকিব আল হাসান। সাত বলে তিন রান করে নাহিদুলের শিকার।

মিডল অর্ডারে সবাই টেস্ট মেজাজে খেলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু থিতু হতে পারেননি। লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা তো এলেন আর গেলেন। ৮৮ রানে অল আউট খুলনা। এমন তারকা সমৃদ্ধ দল নিয়েও খুলনার এমন ব্যাটিংয়ে বিস্মিত সবাই।

সর্বোচ্চ ২১ রান এসেছে ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে। কিন্তু বল খরচ করেছেন ২৬টি। তার ইনিংসে ছিল মাত্র ৩টি চার। প্রথম ম্যাচে এক ওভারে চার ছক্কা হাকিয়ে দলকে রোমাঞ্চের জয় উপহার দেয়া আরিফুল হক এদিন পুরোদস্তুর টেস্ট ব্যাটসম্যান। ৩০ বলে কোনো বাউন্ডারি নেই, রান ১৫। জহুরুল তাও ১৪ বলে করলেন ১৪ রান। একটি করে ছক্কা ও চার।

শেষের দিকে ৮ বলে শামীমের ১১ রানই সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট খুলনা শিবিরে। প্রথম দিকে নাহিদুল ও তাইজুল খুলনার ব্যাটিং দেয়াল ভাঙলে শেষটা করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। শেষের পাচ উইকেটের মধ্যে তারই চারটি। ৩.৫ ওভারে সেখানে মোস্তাফিজ রান দিয়েছেন মাত্র ৫ রান। তাইজুল ও নাহিদুল নেন দুটি করে উইকেট। ৪ ওভারে নাহিদুল দেন ১৫ রান। তবে বেশি রান দিয়েছেন তুলনামুলক তাইজুল, ৩ ওভারে ৩০ রান।


আরো সংবাদ



premium cement