২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জীবনের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪!

ভিভিয়ান রিচার্ডস - ছবি : সংগৃহীত

ভিভিয়ান রিচার্ডস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই কিংবদন্তি ৪৬ বছর আগে নভেম্বর মাসে জাতীয় টিমের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন। রোবাবর রাতে ভিভ এক টুইটে বলেন, ‘৪৬ বছর আগে আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলাম। জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পেরে আমি যে কতটা গর্বিত বলে বোঝাতে পারব না।’

এদিন দুষ্প্রাপ্য একাধিক ছবি শেয়ার করে ভিভ আরো লিখেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ সব সময়ই দুর্ধর্ষ কিছু ক্রিকেটারের জন্ম দিয়েছে। তাদের সাথে এবং কিছু অসাধারণ ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে খেলতে পারাটা আমার ভাগ্য।’ ভিভের এই টুইট ও ছবি ক্রিকেটমহলে রীতিমতো ভাইরাল। একাধিক রি-টুইট এবং কমেন্টে ভেসে যাচ্ছেন তিনি।

তার মধ্যে ওয়াসিম আকরাম লিখেছেন, ‘আপনার অভিষেক শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটে নয়, সামগ্রিকভাবে ক্রিকেটের জন্য নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত একটি ঘটনা ছিল।’

ওয়াসিম আকরাম তার টুইটে ভিভকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আরো লিখেন, ‘আমি খুবই ভাগ্যবান, আপনার বিরুদ্ধে খেলতে পেরে।’

৬৮ বছরের এ ক্রিকেটার যে সব ছবি শেয়ার করেছেন তার মধ্যে ইংলিশ কাউন্টি সমারসেটে খেলার সময় ইয়ান বোথাম এবং জোয়েল গার্নারের সাথেও একটি ছবি রয়েছে। সমারসেটে এক সময় সুনীল গাওস্কর-ভিভ-গার্নার-বোথাম এক সাথে খেলেছেন।

তবে ভিভের টেস্ট অভিষেক ভারতের বিরুদ্ধে। ১৯৭৪ সালে ২২-২৭ নভেম্বর বেঙ্গালুরুতে এই টেস্ট সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সিরিজের অভিষেক নিয়েই মূলত এ টুইট করেন তিনি।

ভিভ অবশ্য অভিষেক টেস্টে দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হন (৪ ও ৩ রান)। দু’টি ইনিংসে চন্দ্রশেখরের বলে আউট হয়েছিলেন তিনি। তবে অভিষেকের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল ২৬৭ রানে। প্রথম ইনিংসে কালীচরণ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে লয়েড এবং গ্রিনিজ সেঞ্চুরি করেন।

ওই টেস্টে ভিভ ছাড়াও আরো দু’জনের অভিষেক হয়েছিল। গর্ডন গ্রিনিজ ভারতীয় ক্রিকেটার হেমন্ত কানিতকর।

ভিভের ভারত যোগ নিয়ে আরো গল্প রয়েছে। আটের দশকের শেষে ভিভের সাথে আলাপ হয় অভিনেত্রী নীনা গুপ্তার। তাদের প্রেম বা নিজের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থা কোনোটাই লুকিয়ে রাখেননি নীনা। কিন্তু তিনি বা ভিভ দু’জনের কেউ বিয়ের বন্ধনে যেতে চাননি।

১৯৮৯ সালে জন্ম হয় ভিভ ও নীনার একমাত্র মেয়ে মাসাবার। ‘সিঙ্গেল মাদার’ নীনা একাই বাবা ও মায়ের ভূমিকা পালন করে মেয়েকে বড় করেন। ভিভের সাথেও মাসাবার সম্পর্ক ভালো। বিবাহিত জীবনে আরো দু’টি মেয়ে আছে ভিভের। তারা হলেন মাতারা ও মালি।

১২১ টি টেস্টের ১৮২ ইনিংসে ভিভ করেন ৮ হাজার ৫৪০ রান। টেস্টে তার সর্বোচ্চ রান ২৯১। গড় ৫০.২৩। আছে ২৪টি সেঞ্চুরি ও ৫০টি হাফ সেঞ্চুরি।

ক্যারিয়ারে ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন ১৮৭টি। ১৬৭টি ইনিংসে করেছেন ১১টি সেঞ্চুরি ও ৪৫টি হাফ সেঞ্চুরি। মোট রান করেন ৬ হাজার ৭২১। সর্বোচ্চ রান (অপরাজিত) ১৮৯। ওয়ান ডে ম্যাচে গড় ৪৭ রান।

১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভিভ রান করেন ১৮৯। ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা ইনিংস ধরা হয় ওই ইনিংসকে। ওই দিন ইংল্যান্ডের বোলাররা ছিলেন বব উইলস, ইয়ান বোথাম, ফস্টার, মিলার ও প্রিঙ্গল। চার নম্বরে নেমে এক দিনের আন্তর্জাতিকে সর্বোচ্চ রান এখনো এটাই।

ভিভই প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি ১৫০-এর উপর স্ট্রাইক রেট ধরে রেখে টেস্টে সেঞ্চুরি করেন। ১৯৮৬ সালে তার করা সেই রেকর্ড অনেক দিন টিকেছিল।

টেস্টের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড দীর্ঘ দিন ছিল ভিভেরই দখলে। ৫৬ বলে সেঞ্চুরিটি আসে। পরেঅবশ্য সেই রেকর্ড ভাঙেন ব্রেন্ডন ম্যাকালাম।

এক দিনের আন্তর্জাতিকে দ্রুততম (২১ ইনিংসে) এক হাজার রানের রেকর্ড প্রথম গড়েছিলেন ভিভ। পরেভিভের রেকর্ড ভাঙেন কেভিন পিটারসেন, বাবর আজম, জোনাথন ট্রট ও কুইন্টন ডি কক।

ভিভই প্রথম ক্রিকেটার যিনি এক দিনের আন্তর্জাতিকে এক হাজার রান করেন ও বল হাতে ৫০ উইকেট পান। সূত্র : আনন্দবাজার


আরো সংবাদ



premium cement