যে কারণে টেস্ট থেকে বাদ মাহমুদু্ল্লাহ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১২:১২
জিম্বাবুয়ের সাথে টেস্ট শুরু হচ্ছে ২২ ফেব্রুয়ারি, সেজন্য ঘোষণা হওয়া দল থেকে বাদ পড়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। যদিও নির্বাচকরা 'বাদ' শব্দটি উচ্চারণ করছেন না, কিন্তু একই সময়ে চলমান বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে তিনি আছেন, তার মানে তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়নি।
সর্বশেষ আফগানিস্তানের সাথে একটি, ভারতের সাথে দুইটি এবং এরপর পাকিস্তানের সাথে একটি-এই টানা চারটি টেস্ট বড় ব্যবধানে হারের পর বাংলাদেশের টেস্ট দলে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
অধিনায়ক মুমিনুল হকই আছেন, মুশফিকুর রহিম ফিরেছেন যথারীতি, রিয়াদ বাদ পড়েছেন। দলে ঢুকেছেন তাসকিন আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজ এবং মুস্তাফিজুর রহমান। এখনো টেস্ট খেলেননি এমন ক্রিকেটারও আছেন দুইজন- ইয়াসির আলি এবং হাসান মাহমুদ।
ধারণা করা হচ্ছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে পাকিস্তানে পাঠানো হবে দ্বিতীয় টেস্টের দল।
রিয়াদ প্রসঙ্গে নির্বাচক কী বলছেন
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, "একজন সিনিয়র ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, একটা বিশ্রামের প্রয়োজন আছে এজন্যই এই সিদ্ধান্ত।"
যদিও এর আগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ঘরের মাটিতেই জিম্বাবুয়ের সাথে একটি টেস্টে ১৫১ রানে হেরে যায়। যেটি গত ছয় বছরে জিম্বাবুয়ের একমাত্র টেস্ট জয়।
জিম্বাবুয়ের সাথে যেহেতু ঘরের মাটিতে খেলছে বাংলাদেশ সেজন্য এটাকে 'ক্রিকেটার ঝালাইয়ের' সুযোগ হিসেবে দেখছেন নান্নু। কিন্তু পরে টেস্ট তাকে দলে নেয়া হবে কি না সেটা এখনই বলতে চাচ্ছেন না মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
রিয়াদ প্রসঙ্গে বিশ্লেষণ
বাংলাদেশের একজন ক্রিকেট সাংবাদিক ও বিশ্লেষক সাজ্জাদ খান বলেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে বাদ দেয়ার পরিকল্পনা মূলত বাংলাদেশের সাবেক কোচ হাথুরুসিংহের।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের ১০০তম টেস্টে রিয়াদকে তিনি একাদশ থেকে সরিয়ে নেন।
সাজ্জাদ বলছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ধীরে ধীরে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সরিয়ে দেয়ার একটা প্রক্রিয়া চালু করছে, তারই একটা অংশ এটা।
"মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ টেস্টে ৩১ গড়ে ব্যাট করেছেন, যেখানে ওয়ানডে ক্রিকেটে তার গড় ৩৩, বোলিংয়েও খুব বেশি দেয়ার নেই রিয়াদের। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ থাকলে মিডল অর্ডারটা খানিকটা লম্বা হয়ে যায়, আবার বলার মতো ব্যাটিংও তিনি করতে পারেননি যেটা নির্বাচকরা বিবেচনা করতে পারতেন।"
সাজ্জাদ খান ব্যখ্যা করেন, "যেহেতু উদ্বোধন করতে নামেন তামিম ইকবাল ও সাইফ হাসান, ওয়ান ডাউনে নামছেন নাজমুল হোসেন শান্ত যিনি পাকিস্তানে টেস্টে অন্য ব্যাটসম্যানদের চেয়ে দৃঢ় ছিলেন, একই কারণে মিথুনও টিকে গিয়েছেন দলে। আবার মুশফিকুর রহিম ফিরছেন। লিটন দাস উইকেট সামলাবেন একই সাথে মিডল অর্ডারে ব্যাট করবেন এমন একটা জায়গায় রিয়াদ দলে নাজুক অবস্থানে আছে।"
আরেকজন ক্রিকেট বিশ্লেষক তৌসি ইসলাম বলেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ শেষ ১০ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটি হাঁকান। এই ফর্মে একজন ব্যাটসম্যানকে কিভাবে রাখা যায় সেটা একটা প্রশ্ন থেকেই যায়।
তবে সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে ২০১৮ সালে রিয়াদ বেশ ভালো কিছু ইনিংস খেলেছেন। তৌসি ইসলাম এই সিরিজটিকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করার একটা সুযোগ হিসেবেও দেখছেন।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের টেস্ট পরিসংখ্যান
বাংলাদেশের নিয়মিত ব্যাটসম্যান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের শেষ টেস্ট ফিফটি এসেছে ২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেবারই শেষ শতকও আসে। এর আগে ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটো সেঞ্চুরি আছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের।
কিন্তু ২০১০ সালে হ্যামিলটন টেস্টের পর প্রায় আট বছরের ব্যবধানে ২০১৮ সালে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ প্রথম সেঞ্চুরি করেন। এই আট বছরে তিনি ফিফটি করেছেন ১২টি, সেখানেও বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে কখনো কখনো।
বাংলাদেশের ক্রিকেট পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করেন রিফাত এমিল, তিনি বলেছেন, বাংলাদেশিদের মধ্যে বোল্ড অথবা লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে রিয়াদ আউট হয়েছেন ৩৪ ইনিংস যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, এর মধ্যে বোল্ড হয়েছেন ২০টি ইনিংসে।
আর বল হাতেও খুব প্রভাব ফেলেননি একাদশে। মোট ৪৯ টি টেস্ট খেলা রিয়াদ উইকেট নিয়েছেন ৪৩টি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বল করলেও শেষ দিকে বল করেননি খুব বেশি। বিবিসি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা