২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছাগলের চামড়া ২০, গরুর চামড়া ১৫০ টাকা

ছাগলের চামড়া ২০, গরুর চামড়া ১৫০ টাকা - ছবি : সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গায় শনিবার কোরবানির ঈদের দিন থেকে শুরু করে সোমবার ঈদের তৃতীয় দিনেও জেলার বিভিন্ন এলাকা ও মাদ্রাসা থেকে কোরাবানির চামড়া কিনেছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানির সরকারি সিদ্ধান্তের পরও কোরবানির পশুর চামড়া সস্তা বিক্রি হতে দেখা গেল। জেলায় এবার একটি ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। আর গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। চামড়া ব্যবসায়ীরা বলছেন চামড়ার দাম নেই, যা চামড়া কিনেছি তা কবে নাগাত বিক্রি করতে পারবো জানি না। বুঝতে পারছেন না এবার লাভ হবে না লোকশান।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার আবুল কাশেম, ৪ জনের সাথে ভাগে গরু কিনেছেন ৯৭ হাজার টাকা দিয়ে। কোরবানির পর তার গরুর চামড়া কেনার জন্য কয়েকজন মৌসুমী ব্যবসায়ী এসে দাম বলেন ১৫০ টাকা। একজন সর্বোচ্চ বলেন ২৫০ টাকা বলে চলে যায়। পরে কারও কাছে চামড়া বিক্রি না করে এলাকার পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসায় তা দান করে দেন।

চুয়াডাঙ্গা বুজরুকগড়গড়ি দারুল উলুম মাদ্রাসায় এবার কোরবানির ঈদে সংগ্রহ হয়েছে ছাগলের চামড়া ৫৬২ টি ও গরুর চামড়া ১৫০ টি। এর মধ্যে ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ২’শ টি এবং গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০০ টি। বাকী চামড়া গুলো ত্রুটিযুক্ত, ছোটো ও নিম্ন মানের হওয়ায় তা চামড়া ব্যবসায়ীর নিকট প্রায় বিনামূল্যেই দিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা বুজরুকগড়গড়ি দারুল উলুম মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি মুস্তফা কামাল কাসেমী বলেন, এবার চামড়ার দাম নেই। বছর দুয়েক আগেও যে চামড়া ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে সেই চামড়া এবার ৪৫০ টাকা দামে গড়ে বিক্রি করতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের নিকট।

চুয়াডাঙ্গার বেদারগঞ্জ এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী মঈন উদ্দীন বলেন, চামড়ার দাম কম। এবার ঈদে আমি যে টাকার চামড়া কিনেছি প্রায় সমান টাকার লবন দিয়ে তা পক্রিয়াজাত করেছি। ঢাকা এবং নাটরের বিভিন্ন চামড়া ব্যবসায়ীরা এই চামড়া কিনে থাকেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবসায়ীর কোনো রকম শাড়া পায়নি। ছাগলের চামড়া ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এবং গরুর চামড়া এক মাস থেকে দেড় মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হয়। এতো দিন চামড়া রেখে দেয়াও মুশকিল। দেশের কোথাও এবার চামড়ার দাম নেই। এবার চামড়ায় লাভের থেকে লোকশানের আশঙ্কা করছি।

চুয়াডাঙ্গা রেলবাজারের চামড়া ব্যবসায়ী সামসুল আলম টুটুল জানান, এবার ছাগলের চামড়া একেকটি ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা এবং গরুর চামড়া একেকটি চামড়া ১৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত দামে কিনেছেন তিনি। বিভিন্ন মানের চামড়ার কথা উল্লেখ করে টুটুল বলেন, লবণ ছাড়া ২৭/২৮ বর্গফুটের এক নম্বর একটা চামড়া ৬শ টাকা করেও কিনেছেন। আর ত্রুটি যুক্ত তিন নম্বর শ্রেণির খারাপ মানের লবণ ছাড়া চামড়া ১৫০ টাকা করেও কিনেছেন। এমন চামড়া ২০ থেকে ২২ বর্গফুটের হলেও মানের কারণে দাম পাওয়া মুশকিল হয় বলে জানান টুটুল। তিনি আরও বলেন, ঈদের তিন দিনে ৩’শ টির মত গরুর চামড়া ও ১৪’শ থেকে ১৫’শ এর মত ছাগলের চামড়া কিনেছেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত ঢাকা বা নাটোর থেকে কোনো ক্রেতার কল পাননি। কবে নাগাত এই সকল চামড়া বিক্রি করতে পারবেন জানেন না। কম দামে কেনা চামড়াতেও এবার লাভ হবে না লোকশান তা বুঝতে পারছেন না এই ব্যবসায়ী।


আরো সংবাদ



premium cement