০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


ঢাবি সাদা দলের মানববন্ধন

ড. তাজমেরী রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার

অধ্যাপক ড. তাজমেরী ইসলামকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাদা দলের মানববন্ধন : নয়া দিগন্ত -

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলামকে গ্রেফতার ও কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিএনপি সমর্থিত ঢাবি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। গতকাল সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তারা এ দাবি জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো: লুৎফর রহমান। অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ঢাবি সাদা দলের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ড. মামুন আহমেদ, রোকেয়া হলের সাবেক প্রোভোস্ট অধ্যাপক ড. লায়লা নূর ইসলাম, সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক ইয়ারুল কবির, অধ্যাপক ড. আমান উল্লাহ ও অধ্যাপক এমরান কাইয়ম প্রমুখ। এ সময় অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক ড. মো: আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক মো: আলামিন, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার, অধ্যাপক আতাউর রহমান বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, মো: ইসরাফিল প্রামাণিক রতন ও মো: নূরুল আমিনসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, অধ্যাপক তাজমেরী ইসলাম একজন সত্যিকারের শিক্ষক। ওয়ান ইলেভেনের সময় জাতি যখন দিশেহারা, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষককে যখন ধরে নেয়া হয়েছিল তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাজমেরী এস এ ইসলাম। আজকে কোনো সমীকরণেই আসে না যে, তিনি বিস্ফোরক দ্রব্য বহন করতে পারেন! তিনি জামিনের আবেদন করেছেন; কিন্তু তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। তারা উপর মহলের আদেশের অপেক্ষায় আছে। ঢাবি শিক্ষক সমিতির নীরব ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আজকে শিক্ষক সমিতি এ ব্যাপারে নীরব। তারা মনে করছেন তাদের কাছে এখন আলো আছে; কিন্তু কখন যে এ আলো নিভে যাবে তা তারা জানে না।
ঢাবির সাবেক সহকারী প্রক্টর ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ড. তাজমেরী ইসলাম শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খ্যাতিমান ও সফল শিক্ষকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন শিক্ষক নেতা। তিনি একজন রসায়নবিদ হিসেবে কেবল দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সমানভাবে সমাদৃত। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিজ্ঞান অনুষদের একাধিক মেয়াদে নির্বাচিত ডিন, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। এমন একজন কৃতী শিক্ষাবিদকে একটা মিথ্যা গায়েবি মামলায় গ্রেফতার করে জালিম সরকার কারাগারে নিক্ষেপ করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। অধ্যাপক লাইলা নূর ইসলাম বলেন, এটা শুধু তাজমেরীর অপমান নয়, এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই অপমান। তিনি যদি সত্যিই নাশকতামূলক কোনো কাজে জড়িত থাকেন তাহলে এত দিন যে তাকে বিভিন্ন দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল তখন কেনো এগুলো বিবেচনা করা হয়নি! যে প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি এত কিছু করলেন আজকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি চুপ। আমরা আশা করছি যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার জামিনের ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাবে এবং শিক্ষক সমিতিও কাজ করবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, এমন একজন মানুষের জন্য আজকে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি যিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সারা জীবন অবদান রেখে গেছেন। আমরা তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করায় তীব্র নিন্দা জানাই। এটি একধরনের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। কারণ তিনি লেখালেখি ছাড়া রাজনৈতিক কাজে তেমন একটা অংশ নিতেন না, যাতে তাকে যে মিথ্যা মামলায় কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে- এমনটা না হয়। কিন্তু তাই হলো আজ তার সাথে। তার একটাই দোষ, আর তা হলো তিনি জাতীয়তাবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী। আমরা মনে করি, এই প্রতিহিংসার ফলাফল কখনো ভালো হবে না। কারণ শহীদ জিয়াকে আপনারা যেভাবে চেপে ধরেছেন, তার পদক বাতিল করছেন, তাকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা করছেন এসব করে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে শহীদ জিয়াকে মুছে ফেলা যাবে না। শহীদ জিয়াকে নিশ্চিহ্ন করলে, বাংলাদেশের প্রতিটি জাতীয়তাবাদী পরিবারের ছেলেরা উঠে দাঁড়াবে।


আরো সংবাদ



premium cement