০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`


করোনা মহামারীতেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে চায়ের উৎপাদন

করোনা মহামারীতেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে চায়ের উৎপাদন -

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস মোকাবেলা করে চা উৎপাদন ছাড়াল ৮৬.৩৯৪ মিলিয়ন কেজিতে। যদিও ২০২০ মৌসুমে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী বেলগাঁও চা এস্টেটসহ দেশের ১৬৭টি চা এস্টেট ও চা-বাগানে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭৫.৯৪০ মিলিয়ন কেজি।
মৌসুমের চা উৎপাদনের শুরুতে প্রচণ্ড খরা (অনাবৃষ্টি) ও মার্চের মধ্যে দেশে হানা দেয় করোনাভাইরাস। অনাবৃষ্টিসহ বৈশ্বিক মহামারীর সাথে লড়্ইা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়েছে ৮৬.৩৯৪ মিলিয়ন কেজিতে।
এ দিকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র চা এস্টেটে (বাঁশখালী বেলগাঁও) এবারো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন এই এস্টেটে এ মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৪০ হাজার কেজি ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছে ৩৪৭ হাজার কেজি। বিষয়টি নিশ্চিত করলেন ওই এস্টেটের ম্যানেজার আবুল বাসার।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ ও নির্দেশনা মোতাবেক দেশে এক লাখ ৪০ হাজার মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন বৃদ্ধি করার পাশাপাশি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রফতানি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চা বোর্ড গ্রহণ করেছে নানামুখী কার্যক্রম, এই কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রতিটি বাগানে প্রতি বছর কমপক্ষে আড়াই শতাংশ করে চা বাগান বর্ধিত করা আর সে জন্য উন্নতমানের চারা প্রদান ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করায় প্রতি বছরই চা বাগানের পরিধি ও উৎপাদন দুটোই বাড়ছে।
২০১৯ মৌসুমে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৪.৯৪০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছিল ৯৬.০৬৯ মিলিয়ন কেজি। একই ভাবে ২০১৮ মৌসুমে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭২.৩৯০ মিলিয়ন কেজি ছাড়িয়ে উৎপাদন হয়েছিল ৮২.১৩৪ মিলিয়ন কেজি।
চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে (২০২০ মৌসুমে) দেশের ১৬৭টি চা এস্টেট ও চা বাগানের দুই লাখ ৭৯ হাজার ৫০৬.৮৮ একর বাগানে জানুয়ারিতে ০.১৭৫ মিলিয়ন কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ০.২৬ মিলিয়ন কেজি, মার্চে ১.৬২৫ মিলিয়ন কেজি, এপ্রিলে ২.৩৬৫ মিলিয়ন কেজি, মে মাসে ৮.৬৫৫ মিলিয়ন কেজি, জুনে ৮.৯৬৩ মিলিয়ন কেজি, জুলাইয়ে ১২.১৭৮ মিলিয়ন কেজি এবং আগস্টে ১১.৩২১ মিলিয়ন কেজি, সেপ্টেম্বরে ১২.১৪৪ মিলিয়ন কেজি, অক্টোবরে ১১.৪৮৬ মিলিয়ন কেজি নভেম্বরে ১০.৪৯৫ মিলিয়ন কেজি ও ডিসেম্বরে ৬.৯৬১ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়।
চা বোর্ডের হিসাব মতে ২০১৯ মৌসুমে জানুয়ারিতে ০.৪৯৫ মিলিয়ন কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ০.১১৪ মিলিয়ন কেজি, মার্চে ১.৯১৭ মিলিয়ন কেজি, এপ্রিলে ৬.১১০ মিলিয়ন কেজি, মে মাসে ৭.৬৪৫ মিলিয়ন কেজি, জুনে ১১.৬৬৭ মিলিয়ন কেজি, জুলাইয়ে ১১.১০৪ মিলিয়ন কেজি, আগস্টে ১৩.৫০৫ মিলিয়ন কেজি, সেপ্টেম্বরে ১৩.৩৮২ মিলিয়ন কেজি, অক্টোবরে ১৩.৪০৭ মিলিয়ন কেজি, নভেম্বরে ১০.৩০০ মিলিয়ন কেজি, ডিসেম্বরে ৬.৪২৩ মিলিয়ন কেজিসহ গত ২০১৯ মৌসুমে সর্বমোট উৎপাদন হয়েছে ৯৬.০৬৯ মিলিয়ন কেজি। এর আগে ২০১৮ মৌসুমে জানুয়ারিতে ০.৩৩১ মিলিয়ন কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ০.৩৮ মিলিয়ন কেজি, মার্চে ১.৫৫৬ মিলিয়ন কেজি, এপ্রিলে ৩.৫০৫ মিলিয়ন কেজি, মে মাসে ৬.৩৩৪ মিলিয়ন কেজি, জুনে ৭.৬৩৪ মিলিয়ন কেজি, জুলাইয়ে ১০.৯৮৫ মিলিয়ন কেজি, আগস্টে ১২.৪৭৭ মিলিয়ন কেজি, সেপ্টেম্বরে ১২.০০৮ মিলিয়ন কেজি, অক্টোবরে ১১.৮৬৩ মিলিয়ন কেজি, নভেম্বরে ৯.১৪৭ মিলিয়ন কেজি ও ডিসেম্বরে ৬.২৫৬ মিলিয়ন কেজি।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশনার আলোকে দেশের চায়ের চাহিদা মেটাতে এবং পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রফতানি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ চা বোর্ড।
ইতোমধ্যে সরকারের সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সমগ্র দেশের চা বাগানে চলছে, বাগানের পরিধি বৃদ্ধির সাথে চায়ের উৎপাদন বৃদ্ধি করার কাজ।
জানা গেছে, প্রতি বছর গড়ে প্রতি হেক্টরে চা উৎপাদন হয় এক হাজার ৫০০ কেজি, অপর দিকে সমপরিমাণ জমিতে ইস্পাহানী, ফিনলে, ডানকানসহ বেশ কিছু বাগানে দুই হাজার ৫০০ কেজি থেকে তিন হাজার কেজি উৎপাদন ছাড়িয়ে যায়।
চা চাষের পরিধি ও উৎপাদন বৃদ্ধির কর্মযজ্ঞে পিছিয়ে নেই দক্ষিণ চট্টগ্রামের একমাত্র চা এস্টেট বাঁশখালীর চাঁদপুর বেলগাঁও । এ মৌসুমেও চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে এ এস্টেটটি।
জানা গেছে, সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন চাঁদপুর বেলগাঁও চা এস্টেটের মোট আয়তন তিন হাজার ৪৭২.৫৩ একর। পাহাড়ি ছোট বড় টিলা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই চা এস্টেটে এখন মাত্র ৬৩৮ একর জায়গায় চা উৎপাদন হয় বলে ওই এস্টেটের ব্যবস্থাপক আবুল বাসার বলেন। তিনি বলেন, মৌসুমে উৎপাদনের শুরুতে ছিল প্রচণ্ড খরা আর মার্চে হানা দেয় করোনাভাইরাস তার পরেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। চা বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী দেশে মোট নিবন্ধনকৃত ১৬৭টি টি এস্টেট ও চা বাগানের দুই লাখ ৭৯ হাজার ৫০৬.৮৮ একর জমিতে চা উৎপাদন হয়। এর মধ্যে মৌলভীবাজারে রয়েছে ৭৬টি এস্টেট ও ১৫টি চা বাগান (এক লাখ ৫৬ হাজার ১৯১.৯৪ একর), হবিগঞ্জ জেলায় রয়েছে ২২টি টি এস্টেট ও তিনটি চা বাগান (৫৪ হাজার ১৬৪.১৬ একর), সিলেট জেলায় রয়েছে ১২টি টি এস্টেট ও সাতটি চা বাগান (২৮ হাজার ৯৩৬.৩২ একর), চট্টগ্রাম জেলায় রয়েছে ১৮টি টি এস্টেট ও তিনটি চা বাগান (৩৪ হাজার ৫৬০.৪৫ একর), রাঙ্গামাটি জেলায় রয়েছে একটি টি এস্টেট ও একটি চা বাগান (৭৯৪.৯৪ একর), পঞ্চগড় জেলায় রয়েছে আটটি চা বাগান (চার হাজার ৮১৮.২৯৫ একর) এবং ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে একটি চা বাগান (৪০.৭৭ একর)।


আরো সংবাদ



premium cement
ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৯ সুন্দরবনে জ্বলছে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট শায়েস্তাগঞ্জে সাবেক সেনা সদস্য ট্রাকচাপায় নিহত ইসরাইল-গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা নিয়ে কায়রোতে জোরদার প্রচেষ্টা ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারী আটক গাজীপুরে তুলার গুদামে আগুন স্টপেজের দাবিতে ফরিদপুরে প্রথম দিনই ট্রেনের গতিরোধ সন্দেশখালির ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো, বিজেপি নেতার ভিডিওতে তোলপাড় খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বজ্রপাতে মা-ছেলের মৃত্যু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় পূর্ব আফ্রিকায় মানবিক সঙ্কটের অবনতির হুমকি স্বরূপ এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ ঘোষণা

সকল