০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
`


নানকার বিদ্রোহ দিবস পালন শোষণের অবসান না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির লড়াই চলবে : সিপিবি

-

সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেছেন, শোষণের অবসান না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির লড়াই চলবে।
গতকাল নানকার আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সিপিবি নেতৃদ্বয় এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
এতে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নানকার, টঙ্ক, তেভাগাসহ সামন্ত সমাজের শোষণমূলক অন্যায় সব প্রথার বিরুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে কৃষকরা গর্জে উঠেছিলেন। এসব প্রথার উচ্ছেদ হয়েছে কিন্তু শোষণের জাল এখনো রয়ে গেছে। শোষণের অবসান না হওয়া পর্যন্ত মুক্তির লড়াই চলবে। তারা আরো বলেন, নানকার বিদ্রোহ এই অঞ্চলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ এবং তাদের জমিদার প্রথার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংগ্রামের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ অঞ্চলের মুক্তি সংগ্রাম এবং জমিদার প্রথা উচ্ছেদ ও সামন্ত শোষণ বিরোধী আন্দোলন এক সূত্রে গাঁথা। নানকার প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন, তেভাগা, টঙ্ক ইত্যাদি আন্দোলন এই দেশের কৃষকদের সংগ্রামী ঐতিহ্যের নিদর্শন। মুক্তি সংগ্রামের ক্ষেত্র প্রস্তুতিতেও কৃষক আন্দোলন রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পর জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হলেও এ দেশে কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। কৃষকরা ফসলের লাভজনক মূল্য হতে বঞ্চিত। শাসক গোষ্ঠীর চাপিয়ে দেয়া নয়া উদারনীতিবাদের শিকার হচ্ছে কৃষকরা। নানকার বিদ্রোহের প্রেরণায় সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে কৃষক আন্দোলনকে আরো জোরদার করার জন্য কৃষক সমাজের প্রতি নেতবৃন্দ আহ্বান জানান। উল্লেখ্য ব্রিটিশ আমলে নান অর্থাৎ রুটি দিয়ে কেনা গোলামকে নানকার বলা হতো। নানকার প্রথায় জমিদাররা কৃষকদের গোলাম করে রেখেছিল। এই প্রথার বিরুদ্ধে সিলেট অঞ্চলে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে কৃষকরা প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলে। আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট পুলিশ, ইপিআর আর জমিদারদের পেটোয়া বাহিনী বিয়ানীবাজারের শানেশ্বর ও উলুউরি গ্রামের মধ্যবর্তী সুনাই নদীর তীরে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে শহীদ হন ব্রজনাথ দাস চটই, প্রসন্নকুমার দাস, পবিত্রকুমার দাস ও কটুমণি দাস। অমূল্যকুমার দাস গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার হন এবং বন্দী অবস্থায় দুদিন পর জেলে মারা যান। এর আগে শানেশ্বর বাজারে পুলিশ ও জমিদার বাহিনীর হাতে প্রাণ হারান রজনী দাস। নানকার আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে প্রতি বছর ১৮ আগস্ট ‘নানকার বিদ্রোহ দিবস’ পালন করা হয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement